লক্ষ্মীপুরে এ ঘটনায় আদালতে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা পেয়েছেন আসামিদের এক আইনজীবী।
Published : 15 Jan 2025, 11:16 PM
লক্ষ্মীপুর সদরে মারামারি ও হত্যাচেষ্টা মামলায় আদালতে ভুয়া ব্যক্তিদের দাঁড় করিয়ে প্রবাসে থাকা আসামিদের জামিন নেওয়ার ঘটনায় আইনজীবীর সহকারীসহ চারজনের নামে মামলার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের ১ নম্বর আদালতের (রামগঞ্জ) বিচারিক হাকিম মোহাম্মদ ইসমাইল এ আদেশ দেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (এপিপি) আব্দুল আহাদ শাকিল পাটওয়ারী।
এ ঘটনায় আদালতে মুচলেকা দিয়েছেন আসামিদের আইনজীবী লুৎফুর রহমান রহিম গাজী। ভবিষ্যতে ঘটনার পুনরাবৃত্তি করবে না বলে মুচলেকা দেওয়ায় তাকে ক্ষমা করেছে আদালত।
প্রতারণায় জড়িতরা হলেন- আইনজীবীর সহকারী আবুল কাসেম, জামিনের তদবির আনোয়ার হোসেন, ভুয়া আসামি সাইফুল ওরফে গাল কাটা সাইফুল এবং ফরহাদ।
এপিপি আব্দুল আহাদ শাকিল বলেন, “মামলার বাদি জুডিসিয়াল ১ নম্বর আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইসমাইল বাদি হয়ে সদর আদালতে মামলাটি করবেন। আদেশের সময় ওই চারজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলার প্রস্তুতি চলছে।
“তবে জড়িতদের আটক বা গ্রেপ্তারে কোনো আদেশ দেয়নি আদালত। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আইনজীবী আদালতে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। এতে আদালত তাকে ঘটনা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।”
জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে জমিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের সোন্দড়া গ্রামের আবদুল খালেকের সঙ্গে তাজুল ইসলাম খোকার বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে ২০২৩ সালে আদালতে মামলা হয়।
২০২৪ সালের ১৯ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রামগঞ্জ থানার এসআই মো. মনিরুজ্জামান চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আসামিরা হলেন- তাজুল ইসলাম খোকা, সজীব, আনোয়ার হোসেন এবং সাইফুল ইসলাম শুভ। ঘটনা পর আসামি সজিব সৌদি আরব ও সাইফুল কাতার চলে যান।
অন্যদিকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন খোকা ও আনোয়ার জামিন নেয়। তবে সজিব ও সাইফুলের নামে পরোয়ানা জারি করে আদালত। এর মধ্যে ৬ নভেম্বর মামলার ২ ও ৪ নম্বর আসামির জায়গায় ভিন্ন ব্যক্তিদের রামগঞ্জ আমলী আদালতে উপস্থিত করা হয়। পরে তারা জামিনে মুক্তি পান। তবে আদালতে উপস্থিত করা ভুয়া ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
বিষয়টি জানতে পেরে ৮ ডিসেম্বর বাদী শামছুর নেছা মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে আসামি সজিব ও সাইফুলকে সশরীরে হাজির হওয়ার জন্য ও তাদের জামিনের আদেশ বাতিল করতে আবেদন করেন। সেইসঙ্গে আসামিদের নিযুক্ত কৌঁসুলি ও স্থানীয় জামিনদারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রার্থনা করেন। ঘটনাটি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে ব্যাখ্যা চায় আদালত।
পরে ২৯ ডিসেম্বর আসামিদের আইনজীবী রহিম গাজী আদালতে লিখিত দেন। এ ছাড়া একই ব্যাখ্যা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদককেও দেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সহকারী আবুল কাশেম দুইজন লোককে এনে আসামি হিসেবে আদালতে উপস্থিত করান। পরে তাদেরকে জামিন করানো হয়। তবে তিনি আসামিদের চিনতেন না বলে জানান।