যুক্তরাষ্ট্রে মেহেদি উৎসবে বাঙালির ঈদ-আনন্দ

চাঁদ দেখার খবর পাওয়ার পরই যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত অঞ্চল জ্যাকসন হাইটসে শুরু হয় উৎসব উৎযাপনের প্রস্তুতি।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2019, 02:12 PM
Updated : 4 June 2019, 02:12 PM

নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় সোমবার বিকাল থেকেই বাংলাদেশি তথা দক্ষিণ এশিয়ান তরুণীরা টেবিল-চেয়ার নিয়ে পুরো এলাকা দখলে নেন। শুরু হয় হাতে মেহেদী রাঙানোর উৎসব। পথচারিদের পথ আগলে না রেখে অত্যন্ত কৌশলে বেআইনি এ কাজটি করা হলেও সিটি প্রশাসন কিংবা পুলিশ কাউকে বাধা দেয়নি।

এ উৎসবে তরুণীরা কারিগর হলেও খদ্দের ছিলেন সকল বয়সী নারী। কোন কোন তরুণ কিংবা যুবককেও হাতে মেহেদি লাগাতে দেখা যায়। আর এভাবেই মধ্যরাত অবদি হাজার হাজার নারী-পুরুষের পদচারণায় মুখরিত থাকে জ্যাকসন হাইটসের মতো জ্যামাইকা, ব্রঙ্কস এবং ব্রুকলিনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলো।

কোনও কোনও স্থানে মেহেদির আমেজে আনুষ্ঠানিক নাচ-গানেরও আয়োজন করা হয়। অর্থাৎ এটিও ঈদের আগের রাত বা চাঁদ রাতের অন্যতম একটি উপলক্ষ হিসেবে দাঁড়াচ্ছে। আর এ উৎসবের মধ্য দিয়ে প্রাণে প্রাণে মিশে যাওয়া বাঙালিরা মেহেদি-কারিগরদের বড় একটি আয়ের উৎস হিসেবেও পরিণত হচ্ছেন। আধ-ঘণ্টার কম সময়ে ৩০ থেকে ৫০ ডলার করে আয় হয় একেক খদ্দেরের কাছ থেকে। ৭/৮ ঘণ্টায় কেউ কেউ ৫০০ ডলারেরও বেশি আয় করেছেন বলে জানা গেছে।

আনন্দ-হাসি আর তামাশার মধ্যে ঈদের আমেজকে নিবিড় করার এ কার্যক্রমে প্রবীণরাও এগিয়ে এসেছেন। বছর পাঁচেক আগেও চাঁদরাতের এমন আয়োজন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ কয়েকটি সিটিতে হলেও, এখন তা বাংলাদেশি এবং দক্ষিণ এশিয়ান জনপদের প্রতিটি সিটিতেই হচ্ছে। ঈদের দিন ঈদ জামাত ঘিরে যে ধরনের উচ্ছ্বাস-আনন্দের ঢেউ খেলা করে-একই ধরনের একটি নির্মল-বর্ণিল আর উচ্ছ্বাসে ভরে উঠছে বাঙালির জীবন। প্রবাস-প্রজন্ম এভাবেই ঈদ-আনন্দে নয়া উদ্যম পাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে অনাবিল এক মধুর রাজ্যে-যা চোখে না দেখলে বোঝা কঠিন।

এর আগের ২৮ দিন সন্ধ্যার প্রাক্কালে ইফতার-আয়োজনে মেতে থাকা জ্যাকসন হাইটসসহ বাংলাদেশি রেস্টুরেন্ট পাড়াগুলোর চেহারায় মেহেদি উৎসব যেন ভিন্ন এক আমেজে তৈরি করে। আর এমন আমেজেই অসাম্প্রদায়িক চেতনার মধ্যে মিশে যাচ্ছেন ঈদ-পাগল বাঙালিরা। এমন অনুভূতির সাথে সহমর্মিতা প্রকাশ করছে সিটির পুলিশ প্রশাসনও।