দলের ভোটের অনুপাতে সংসদে আসন বরাদ্দের সুপারিশ টিআইবির

টিআইবি প্রধান বলেন, “সত্যিকারার্থে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে যা বোঝায়, সেটি আমরা এবারও পাচ্ছি না। এটি আমাদের উদ্বেগের একটা বড় কারণ।”

নির্বাচনে আসনভিত্তিক ফলাফলের বদলে একটি দলের ভোটের অনুপাতে জাতীয় সংসদের আসন বণ্টনের সুপারিশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ- টিআইবি।

বৃহস্পতিবার ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে ‘গণতন্ত্র, সুশাসন ও শুদ্ধাচার চর্চার রাজনৈতিক অঙ্গীকার: টিআইবির সুপারিশমালা’ শীর্ষক সংবাদ এক সম্মেলনে এ কথা বলেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি বলেন, “৫০ বছর ধরে আমরা আসনভিত্তিক সংসদীয় গণতন্ত্রের চর্চা করেছি। আমরা মনে করি, এখন সময় এসেছে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক সংসদ প্রতিষ্ঠা করা।”

এ বিষয়ে আলোচনার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা বলছি না এটি এখনই করে ফেলা যাবে। এটি নিয়ে সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণমূলক ও নির্বাচনকালীন সরকারের দলীয় প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের জন্য আইনি সংস্কারের তাগিদও দেওয়া হয়। পাশাপাশি সংসদে নিজ দলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের পরামর্শও দেন টিআইবি প্রধান। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী হলে দল থেকে পদত্যাগের সুপারিশও করে সংস্থাটি।

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনসহ তথ্য অধিকার ও আইনের শাসন নিয়ে ৯টি ক্ষেত্রে ৭৬টি সুপারিশ করা হয়। এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হলে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা বজায় থাকবে জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “আমাদের পরামর্শ তারা (সরকার) বিবেচনা করছে না, সেটা বলব না। আমরা দেখেছি যে আমাদের পরামর্শের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন করেছে।”

বিএনপির ভোটে না আসায় উদ্বেগ

বিএনপির মতো বড় দল নির্বাচনে না আসায় উদ্বেগও প্রকাশ করেন ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, “এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না।”

টিআইবি প্রধান বলেন, “তফসিল ঘোষণার আগে ও পরে পরিমাপকগুলোর ওপর ভিত্তি করে আমরা যে পর্যবেক্ষণ করেছি, তাতে মোটামুটি ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে যে, সত্যিকারার্থে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে যা বোঝায়, সেটি আমরা এবারও পাচ্ছি না। এটি আমাদের উদ্বেগের একটা বড় কারণ।”

নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে জনগনের ভোটের ওপর আস্থা নিশ্চিত হবে না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “৯০ পরবর্তী গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় যে বিষয়টি বারবার আলোচনায় এসেছে, তা হল অবাধ, সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন। যেকোনোভাবে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।”

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনের মতো এবারও ভোট বর্জনের ডাক দিয়েছে বিএনপি। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিতে হলে মনোনয়নপত্র জমার যে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, সেটি শেষ হয়ে গেছে এরই মধ্যে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে তফসিল পাল্টাবে না। ফলে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ভোটে আসার আর কোনো সুযোগ নেই।