কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘বিশৃঙ্খলা’র নিন্দা বিএনপির

বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, সকাল সাড়ে ৭টায় প্রভাতফেরির লাইনে দাঁড়িয়ে ৫-৬ ঘণ্টা পর শহীদ মিনারের বেদীতে পৌঁছায় তার দলের নেতাকর্মীরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2023, 03:46 PM
Updated : 21 Feb 2023, 03:46 PM

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে সেখানে ‘বিশৃঙ্খলা-সমন্বয়হীনতার’ নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি।

মঙ্গলবার রাতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, “রাষ্ট্র যেমন অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়ণ-নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত ঠিক তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়েও সরকার তাদের লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনগণকে জিম্মি করে রেখেছে।

“তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন দূরের কথা, তাদের দায়িত্ব পালন নিয়ে কথা বলতে গেলেও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর নেতাকর্মী ও জনগণের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের মতো বর্বরোচিত কায়দায় ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা।”

তিনি বলেন, “মহান ভাষা দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মতো পবিত্র স্থানকেও দলবাজীর কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে। আমরা আজকে সংঘটিত ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

বিএনপির শ্রদ্ধা নিবদনের কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে দলের মহাসচিব বলেন, “এ বছর উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন কর্মসূচির সময়সূচি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে দিয়ে অনুরোধ করিয়ে পেছানো হলেও আওয়ামী লীগ রহস্যজনক কারণে তাদের প্রভাতফেরির সময় ও রুট পরিবর্তন করে বিএনপির পূর্ব ঘোষিত প্রভাতফেরিকে প্রলম্বিত করে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চালায়।

“আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্লিপ্ততার কারণে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন সংগঠনকে প্রভাতফেরির লাইনে না দাঁড়িয়ে আগে যায় এবং যার ফলশ্রুতিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনে বিএনপিসহ অন্যান্য সংগঠনকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয় এবং সকাল সাড়ে ৭টায় নিউ মার্কেটস্থ বলাকা সিনেমা হলের সামনে থেকে প্রভাতফেরি শুরুর ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছাতে ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করতে হয়।

“আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিশ্বববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বারবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও এ বিষয়ে তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।”

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অসুস্থ থাকায় দলের পক্ষ থেকে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের জন্য সকাল সাড়ে ৭টায় সমবেত হলেও মূল বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দুপুর সাড়ে ১২টার পর।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের নাজেহাল হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনকালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অসৌজন্যমূলক আচরণ করে।

“পুষ্পার্ঘ্য নিবেদনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টোরিয়াল টিমের কাছে ন্যাক্কারজনক হামলার শিকার হতে হয় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “রাষ্ট্রের মতোই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চলে জনগণের ট্যাক্সের টাকায়। আর এ কারণেই শিক্ষার্থীসহ জনগণের সেবা ও নিরাপত্তা দেওয়াই এইসব প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য। কিন্তু রাষ্ট্র যেমন অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়ণ-নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত ঠিক তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়েও সরকার তাদের লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনগণকে জিম্মি করে রেখেছে।”