“এখন আমরা যদি বলি, আপনারা নির্বাচনের কথা না বলে ক্ষমতায় থাকার জন্য পাগল হয়ে গেছেন। সুতরাং কোনো রকম ছলচাতুরি করবেন না।”
Published : 05 Nov 2024, 05:53 PM
দেশের মানুষকে কোনো ধরনের ধোঁয়াশায় না রাখার পরামর্শ দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আগামী সংসদ নির্বাচনের দিন-তারিখ জানতে চেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
এ সময় বিনা ভোটের সরকারকে বেশি দিন ‘মেনে নেওয়া হবে না’ বলেও হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র কাঠামোর কী কী সংস্কার করতে চায় এবং সেটা করতে কতদিন লাগবে- কোনো ছলচাতুরি ছাড়াই তা স্পষ্ট করে অবিলম্বে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করুন।
“অন্তবর্তীকালীন সরকারকে বলব, জাতিকে ধোঁয়াশায় রাখবেন না। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন গত ১৬ বছরের বিনা ভোটের সরকারকে মানেনি, এখন এই সরকারকেও দীর্ঘদিন মানবে না।”
সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় কথা বলছিলেন আব্বাস।
বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি ‘ঘোলাটে’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা আব্বাস। তার শঙ্কা আগামীতে তা আরও ‘ঘোলাটে হবে’।
“আমরা বিশ্বাস করতে চাই, এই সরকার অবশ্যই জাতিকে একটা আশার আলো দেখাবে। তবে আপনারা এমন কিছু করবেন না, যাতে জাতি আপনাদের ওপর থেকে বিশ্বাস হারায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “বর্তমানে সংস্কারের কোনো লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। নির্বাচন নিয়ে আপনারা কোনো কথা বলছেন না। আমরা নির্বাচনের কথা বললেই আপনারা বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আমরা উদগ্রীব হয়ে পড়েছি।
“এখন আমরা যদি বলি, আপনারা নির্বাচনের কথা না বলে ক্ষমতায় থাকার জন্য পাগল হয়ে গেছেন। সুতরাং কোনো রকম ছলচাতুরি করবেন না। জাতিকে ধোঁয়াশায় রাখবেন, তারা তামাশা দেখবে কিংব মেনে নেবে এমনটা ভাবার অবকাশ নেই।”
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের তিন মাসের মধ্যেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সবগুলো মামলা প্রত্যাহার হয়নি অভিযোগ করে আব্বাস বলেন, “অথচ আপনারা একটা অর্ডিন্যান্স জারি করে ২০০৭ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন পর্যন্ত বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যত মামলা হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহার করে নিতে পারেন। কিন্তু সেটা করছেন না। হয়তো করবেন অথবা করবেন না।”
দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “দেশে বর্তমানে একটা ধোয়াশাচ্ছন্ন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এই সরকার বেশি সময় থাকবে, না যথাসময়ে দায়িত্ব পালন করে চলে যাবে- বুঝতে পারছি না। আপনারা আমাদের সহযোগিতা চান কি না, সেটাও বুঝতে পারছি না।”
মুক্তিযোদ্ধা মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সাবুর ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম ও প্রজন্ম একাডেমির যৌথ উদ্যোগে রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এই সভার আয়োজন করা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের সভাপতি কালাম ফয়েজীর সভাপতিত্বে যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, এনডিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, প্র্রয়াত মেজবাহ উদ্দিন সাবুর সহধর্মিনী হোসনে আরা বেগম রিনা বক্তব্য রাখেন।