তাদের অভিযোগ, সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে হেফাজতে ইসলামের টাকায় ‘সরকারবিরোধী’ কমর্কাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে ওই অংশ।
দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের ঠিকানা ব্যবহার করে ‘আওয়ামী ওলামা লীগের’ দুটি অংশ আলাদাভাবে দলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছে।
একটি অংশের নেতৃত্বে আছেন ইলিয়াস হোসাইন বিন হেলালী ও মো. দেলোয়ার হোসেন এবং অপর অংশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আক্তার হোসেন ও আবুল হাসান।
মঙ্গলবার সকালে ওলামা লীগের ব্যানারে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের তিন তলায় মহিলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের পাশে কয়েকটি টেবিল-চেয়ার বসিয়ে জামায়াতের ডাকা হরতালবিরোধী আলোচনা সভা করতে দেখা যায় হেলালী ও দেলোয়ারের অংশকে।
এদিন আক্তার হোসেন ও আবুল হাসানের নেতৃত্বাধীন অংশকে কোনো কর্মকাণ্ডে দেখা না গেলেও দুই দিন আগে তারা তথাকথিত ইসলাম অবমাননাকারী ব্লগারদের মৃত্যুদণ্ড দাবি করে আইন চেয়ে বিক্ষোভ করে।
তাদের দাবিগুলোর অধিকাংশই ছিল হেফাজতে ইসলামীর ১৩ দফার অনুরূপ।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি সেদিন। দলের অনুমোদন ছাড়া কোন সংগঠনের বিষয়ে কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
“এরা সাম্প্রদায়িক অংশ, যারা এদের মদদ দিচ্ছে তারা যত বড় নেতা হউক না কেন তাদের দেখে নেওয়া হবে।”
পাশাপাশি সরকারের কয়েকজন উচ্চ পর্যায়ের নেতারা তাদের পৃষ্টপোষকতা করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আক্তার-আবুল হাসান অংশকে কারা মদদ দিচ্ছে জানতে চাওয়া হলে হেলালী বলেন, “আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ আবদুল্লাহ তাদের মদদ দিচ্ছেন।”
মাহবুব-উল-আলম হানিফের বক্তব্যেরও নিন্দা জানান তিনি।
হেলালী বলেন, “৯৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমির হোসেন আমুর মাধ্যমে আমাদের সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়। আর তিনি (মাহবুব-উল-আলম হানিফ) বলেছেন আমাদের কোন অনুমোদন নাই।”
গত রমজানে ওলামা লীগের নেতাকর্মীদের জন্য গণভবনে আলাদা ইফতারের আয়োজনের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
অপরদিকে ২০০১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের সকল কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে আসছে বলে দাবি করেন আক্তার-হাসান অংশ।
“আজও আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের নেতা হিসেবে শরীয়তপুরের সাংসদ বিএম মোজাম্মেল হকের সঙ্গে এলাকায় অনুষ্ঠান করতেছি। তাহলে আমরা কীভাবে জঙ্গি হলাম।”
তিনি বলেন, হেলালীর নিজের কোন শিক্ষা সনদ নাই। এরা কয়েকজন বাস-ট্রাক ড্রাইভার-হেলপারকে নিয়ে ভণ্ডামি করছে।
উল্টো অভিযোগ: “এরা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজি সেলিমের নেতৃত্বে এ ধরনের ভণ্ডামি করে যাচ্ছে।”
হেলালীর পরিবারের সবাই রাজাকার ছিল বলেও দাবি করেন আবুল হাসান।
“এরা নব্য আওয়ামী লীগার। গত মাসে কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় হেলালী ও তার পরিবার যে রাজাকার এটা প্রকাশ হয়েছে। এদের মত লোকরাই সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে পড়ে থেকে সরকারের ক্ষতি করছে।”
বিটিভির একটি অনুষ্ঠানের উদ্ধৃতি দিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “২০০১ এর পর থেকে যে আমরা কয়েকবার মার খেয়েছি তা ‘ফিরে দেখা’ অনুষ্ঠানে দেখিয়েছে। আমরা আওয়ামী লীগের আসল লোক।”
পাল্টাপাল্টি অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলেও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপকে পাওয়া যায়নি।