এবার ভোটে আওয়ামী লীগের ব্যয় কমেছে কোটি টাকা

নবম সংসদ নির্বাচনের চেয়ে দশম সংসদ নির্বাচনে ব্যয় ১ কোটি টাকা কম দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2014, 10:20 AM
Updated : 22 May 2014, 01:54 PM

বৃহস্পতিবার দলটির পক্ষ থেকে দশম সংসদ নির্বাচনে প্রায় ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা দলীয় নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হয়েছে।

নবম সংসদে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও এবার বিএনপির বয়কটের মধ্যে ১৫৩ আসনে ভোট হয়নি। এসব আসনের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। বাকি ১৪৭ আসনে ভোট হয়।

নবম সংসদ নির্বাচনে ৩ কোটি ৬০ লাখ ২৬ হাজার ৯৭৪ টাকা নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব ইসিতে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ।

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব সিরাজুল ইসলামের কাছে দলীয় ব্যয় বিবরণী জমা দেন।

ব্যয়ের বিবরণী জমা দিয়ে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ সাংবাদিকদের বলেন, দশম সংসদ নির্বাচনে দলের ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৫৩ লাখ ৯২ হাজার ৭১২ টাকা।

খরচের খাতভিত্তিক একটি হিসাব ইসিতে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ভোটের প্রচার-প্রচারণা, দলীয় সভানেত্রীর সভা, সমাবেশ, মিছিল, বিজ্ঞাপন ও আনুষঙ্গিক খাতে এই ব্যয় দেখিয়েছে দলটি।

নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, ২৪৭ আসনে প্রার্থী থাকায় আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ সাড়ে চার কোটি টাকা খরচের সুযোগ ছিল।

ব্যয় বিবরণ দেয়ার সময় গোলাপের সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের আর্থিক ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক ও কোষাধ্যক্ষ আবদুল হক ও নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সদস্য রিয়াজুল কবির কাওসার।

গত ২৩ এপ্রিলের মধ্যে দলীয় ব্যয়ের হিসাব না দেওয়ায় দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া ১২টি রাজনৈতিক দলকে সতর্কীকরণ নোটিস দিয়েছিল ইসি।

এরপরই দলগুলোর পক্ষ থেকে হিসাব বিবরণী জমা দেয়ার উদ্যোগ আসে। দল ও প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করে ইসি।

আওয়ামী লীগ ছাড়া আরো চারটি দল বৃহস্পতিবারের মধ্যে দলীয় ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে। এগুলো হল- জাতীয় পার্টি-জেপি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি-বিএনএফ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনএফ ৫৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, জেপি ১২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, জাসদ এক লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয় দেখিয়েছে।

জরিমানার সময়সীমা নিয়ে ‘বিভ্রান্তি’

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৪৪ ধারা অনুযায়ী সব নির্বাচনী এলাকার ভোটের পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে দলীয় ব্যয়ের হিসাব দিতে হবে।

নির্ধারিত সময়ে কোনো দল তা দিতে ব্যর্থ হওয়া ইসি সতর্ক করে দলগুলোকে। ইসির উপসচিব মিহির সারওয়ার মোর্শেদ দলগুলোকে চিঠিতে আইনি বিধান তুলে ধরেন।

এই কর্মকর্তা জানান, ২৩ এপ্রিল দলগুলোর নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়ার সময়সীমা শেষ হয়েছে। দলগুলোকে সতর্কতা নোটিস পাঠানোর পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে হিসাব বিবরণী দাখিলের সুযোগ রয়েছে।

“এ সময়ের মধ্যে জমা দিতে ব্যর্থ হলে দশ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে পরবর্তী ১৫ দিন সময় নিতে পারবে। এরপরও হিসাব দাখিল না করলে আইনে নিবন্ধন বাতিলের সুযোগ রয়েছে।”

ইসি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনী আইন অনুযায়ী সতর্কীকরণ নোটিসের পর ২২ মে’র মধ্যে দলীয় রিটার্ন জমা দেয়ার সময় শেষ হয়েছে। পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে রিটার্ন দিতে জরিমানা গুণতে হবে সংশ্লিষ্ট দলকে। ব্যর্থ হলে ওই সময়ের পরে নিবন্ধন বাতিলেরও সুযোগ রয়েছে ইসির।

তবে ইসি বিলম্বে ৪ মে নোটিস ইস্যু করায় এ সময়সীমা নিয়ে ‘বিভ্রান্তি’ হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ৪ মে চিঠি দেয়ায় জরিমানা ছাড়াই হিসাব দিতে দলগুলো ৪ জুন পর্যন্ত সময় পাবে।