ইসি গঠনের এই আইন মানি না: ফখরুল

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে সংসদে যে বিল পাস হয়েছে, তা জনগণের কাছে ‘গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Jan 2022, 10:06 AM
Updated : 27 Jan 2022, 10:14 AM

তিনি বলেছেন, “নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এই আইন আমরা মানি না। এটি শুধু আমাদের কাছে নয়, দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, গ্রহণীয় হতে পারে না।

“আর যে আইন মানুষ গ্রহণ করে না- সেটি কোনো আইনই নয়, সেটাকে কেউ মানবে না, এটাকে কেউ মানবেই না।”

বৃহস্পতিবার সংসদে বিলটি পাসের পর দুপুরে এক আলোচনা সভায় দলের এই প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপির মহাসচিব।

এদিন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আলোচিত এই বিলটি সংসদে পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। রাষ্ট্রপতি সই করার পর গেজেট আকারে প্রকাশ হলেই প্রথমবারের মত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আইন পাবে বাংলাদেশ।

মির্জা ফখরুল বলেন, “এই ব্যাপারে আমরা খুব স্পষ্ট করে বলেছি, আমাদের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা আপনাদেরকে জানিয়েছি যে, এই আইন পাস করার কোনো এখতিয়ার এই সংসদের নেই। কারণ এ্ই সংসদ জনগণের দ্বারা নির্বাচিত কোনো সংসদ নয়।”

নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরে ফখরুল বলেন, “হাসিনা সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনের প্রশ্নই উঠে না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা আরেকবার বাকশালে ঢুকতে চাই না।

“আমরা বলেছি, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। তারা সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে এবং তাদের পরিচালনায় সেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন। তারা ঠিক করবেন কিভাবে দেশ চলবে, কিভাবে দেশ চলবে না।”

সংসদে ‘তড়িঘড়ি’ আইন পাস করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব।

তিনি বলেন, “বাকশাল গঠিত হয়েছিল সংসদে মাত্র ১১ মিনিটে। আমি এই মাত্র খবর পেয়েছি- একজন সাংবাদিক বন্ধু বললেন, নির্বাচন কমিশন আইন পাস হয়ে গেল…। আমি হিসাব করে দেখলাম, এই আইন ১৭ তারিখে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করেছে। ২৩ তারিখে পার্লামেন্টে দেওয়া হয়েছে। তারপরে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে সংসদীয় কমিটিকে… সংযোজন বা পরিবর্তন কিছু থাকে তা নিয়ে এসে আবার সেটা হাউজে উপস্থাপন করতে।

“চব্বিশ ঘণ্টাও যায়নি, এর মধ্যে তারা এটা হাউজে নিয়ে এসে পাস করল। আওয়ামী লীগ সেদিনও বাকশাল করেছিল নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টায়, আজকেও তারা একটা নির্বাচন কমিশন আইন তৈরি করলেন সেটা ভাবছেন যে, তারা বেঁচে যাবেন এই আইন পাস করে। সেই আশাতেই করলেন। কিন্তু তারা ভুলে গেলেন যে, বাকশাল করেও শেষ রক্ষা হয়নি। এই নির্বাচন কমিশন আইন করেও তাদের শেষ রক্ষা হবে না।”

ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তর-দক্ষিণের যৌথ উদ্যোগে ‘বাকশাল: গণতন্ত্র হত্যার কালো দিবস’ পালনে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই আলোচনা সভা হয়।

মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় আলোচনাসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, জহির উদ্দিন স্বপন, মীর নেওয়াজ আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমূখ বক্তব্য দেন।

পুরনো খবর: