সরকার ‘বিশ্ববিবেককে বিভ্রান্ত করার চক্রান্ত’ করছে: রিজভী

দেশে ‘গুমের শিকার’ পরিবারগুলোর কাছ থেকে পুলিশ ‘মিথ্যা বিবৃতিতে’ সই নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2022, 09:19 AM
Updated : 16 Jan 2022, 09:19 AM

রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানবন্ধনে তিনি বলেন, “যে পরিবারগুলোতে কেউ গুম হয়েছে, তাদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ পাঠাচ্ছেন, নিজেরা স্টেটমেন্ট লিখেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্টেটমেন্ট লিখেছেন। বলছে, ‘এখানে সই করো?’

“এটা কী? বলা হচ্ছে- আমার ছেলে বা আমার স্বামী সে নিজে নিজেই হারিয়ে গেছে। পুলিশ লিখে নিয়ে যাচ্ছে আর ওখানে (স্টেটমেন্টে) সই করতে বলছে।”

এভাবে ‘মিথ্যা বিবৃতিতে সই নিয়ে’ সরকার ‘বিশ্ববিবেককে বিভ্রান্ত করার চক্রান্ত’ করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা রিজভী।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলামের মুক্তির দাবিতে ইউনির্ভাসিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউটাব) আয়োজিত ওই মানববন্ধনে বক্তব্য দেন রিজভী।

তিনি বলেন, “পুলিশের হুমকির মুখে কজন টিকবে? অনেকে প্রতিবাদ করেছে, না, আমরা জানি, কীভাবে তাদেরকে গুম করা হয়েছে। এখন এই ধরনের একটি প্রচেষ্টা সরকার নিয়েছে, যাতে বিশ্বকে দেখানো যায়, যারা গুম হয়েছে তারা নিজে নিজে হারিয়ে গেছে।”

সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, “আসলে তো কোনো কিছু আটকে রাখা যায় না। আটকে রাখায় যায় না বলেই বিএনপি ব্যস্ত থাক তাজমেরী এস এ ইসলামকে নিয়ে, ব্যস্ত থাক খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে। আর ফাঁক দিয়ে আমরা (সরকার) এই কাজগুলো করি।

“কিন্তু কোনো লাভ হবে না। পতন যখন অত্যাসন্ন হয়, সেই পতনকে কেউ ঠেকাতে পারবে না। আপনি যত বাঁশ দিয়ে, কাঠ দিয়ে, লোহার রড দিয়ে আপনার সিংহাসনকে ঠেক দেওয়ার চেষ্টা করেন, আপনার সিংহাসন আর শক্ত থাকবে না। ওটা এখন টলমল করা শুরু হয়েছে, তার লাস্ট পেড়েকটা আপনি নিজেই মেরেছেন আপনার কফিনে, আপনার সরকারের কফিনে তাজমেরী ইসলামের মত একজন শিক্ষাবিদকে কারাগারে পাঠিয়ে।”

অধ্যাপক তাজমেরী ইসলামের মুক্তির দাবি জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, “তাকে মুক্তি দিন, অন্যথায় এইটাই অগ্নি স্ফূলিঙ্গের মত আন্দোলনের এমন দাবানল তৈরি হবে… আপনার পতন অবশ্যম্ভাবী হবে।”

২০১৮ সালেল ২৩ সেপ্টেম্বর উত্তরা পশ্চিম থানার এক মামলায় বৃহস্পতিবার তাজমেরী ইসলামকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়।

তার মুক্তির দাবি জানিয়ে মানববন্ধনে ইউটাবের প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, মহাসচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, বিএনপির অ্যাডভোকেটে শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক লুতফর রহমান, অধ্যাপক আখতার হোসেন খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম, কামরুল আহসান, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আনিসুর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যপক মতিনুর রহমানসহ প্রমুখ বক্তব্য দেন মানববন্ধনে।