নির্বাচন কমিশন নিয়ে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য প্রত্যাহার দাবি বিএনপির হারুনের

সংসদে রাষ্ট্রপতির দেওয়া ভাষণের কিছু বিষয় ‘অসত্য’ অভিযোগ করে সেগুলো সংসদের কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Jan 2020, 04:43 PM
Updated : 22 Jan 2020, 04:44 PM

বুধবার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংসদ সদস্য হারুন বলেন, “মহামান্য রাষ্ট্রপতি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন নাকি যথাযথ দায়িত্ব পালন করছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু দায়িত্ব পালন করেছেন। একেবারে অসত্য।”

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, “মাননীয় স্পিকার কার্যপ্রণালী বিধিতে আপনার অফুরন্ত ক্ষমতা সংসদ দিয়েছে, সংবিধান দিয়েছে। আমি মনে করি, এই বইয়ের মধ্যে (রাষ্ট্রপতির ভাষণ) যে অসত্য তথ্য আছে সেগুলো ‘এক্সপাঞ্জ’ করা উচিত। এগুলো একেবারে অসত্য।”

গত ৯ জানুয়ারি সংসদে এই অধিবেশনের শুরুতে সংবিধানের নিয়ম রক্ষায় সংসদে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি। বরাবরের মতো মন্ত্রিসভার ঠিক করে দেওয়া ভাষণের সংক্ষিপ্তসার পাঠ করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তার পুরো বক্তব্য সংসদে পঠিত বলে ওইদিনই গণ্য করেন স্পিকার।

হারুন বলেন, “রাষ্ট্রপতি একেবারে শেষে যেটা বলেছেন সেটা তার মনের কথা। তিনি যথার্থই বলেছেন। জাতীয় সংসদ জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু আপনি এখন বেগম জিয়াকে জেলখানায় ঢুকিয়ে রাখবেন, মৃত্যুপথ যাত্রী তারপরেও জামিন দেবেন না। সাজা দিয়ে আটক রাখবেন। বিরোধী দলকে ঠ্যাঙাবেন। এ দিয়ে জাতীয় ঐক্য, শান্তি-সম্প্রীতি হতে পারে না।”

বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ (ফাইল ছবি)

বিএনপির এই সংসদ সদস্য বলেন, “সংবিধানে বলা আছে, জনগণ ক্ষমতার মালিক। কিন্তু এটা এখন স্বপ্নের ব্যাপার হয়ে গেছে। সংবিধানে মৌলিক অধিকারের যে অনুচ্ছেদগুলো আছে, সেগুলোর এখন বেহাল দশা। ভীতি- আতঙ্কের মধ্যে জনগণ বসবাস করছে।”

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন বর্তমান সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন যতো ঘনিয়ে আসছে সরকারের সন্ত্রাস-অপতৎপরতা ততো বেড়ে যাচ্ছে। তার প্রমাণ বিএনপির প্রার্থী তাবিথের ওপর হামলা। ভিডিও ফুটেজ দেখে কাউকে কি গ্রেপ্তার করা হয়েছে? স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে জবাবদিহিমূলক করতে হলে অবশ্যই অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা দিতে হবে।“

তিনি আরও বলেন, “জনপ্রশাসনে খুবই খারপ অবস্থা। আজকে কে কত জোরে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিতে পারে তারাই আজকে প্রমোশন, তারাই আজকে পদায়ন, তারাই আজকে ভালো ভালো জায়গায পোস্টিং পাচ্ছে। এখানে যোগ্যতা, মেধা মানদণ্ড খুবই খারাপ পর্যায়ে।”

সাংসদ হারুন অভিযোগ করেন, তার নির্বাচনী এলাকায় শিক্ষক, কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে যাওয়া ‘বাধ্যতামূলক করা হয়েছে’।

“না গেলে শিক্ষক কর্মকর্তাদের রিপোর্ট দেওয়া হবে। এভাবে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা ঠিক হচ্ছে না।”

আলোচনায় আরও অংশ নেন আওয়ামী লীগের মাহাবুব-উল-আলম হানিফ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত মেজর রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম,  রমেশ চন্দ্র সেন, খালেদা খানম, জাসদের শিরীন আখতার, জাতীয় পার্টির সালমা ইসলাম প্রমুখ।