লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কাকে বলে, পাল্টা প্রশ্ন কাদেরের

বিএনপি নেতারা ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারে অংশ নিতে পারলেও নির্বাচন কমিশনের নিয়মের কারণে মন্ত্রী বা এমপি পদে থাকা আওয়ামী লীগ নেতারা তা না পরায় ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওবায়দুল কাদের।  

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Jan 2020, 03:03 PM
Updated : 10 Jan 2020, 03:03 PM

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের এলেনবাড়ি এলাকায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক ভবনের আধুনিকরণ প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিয়ে বিএনপির অভিযোগ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সাংবাদিকদের সামনে পাল্টা প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমি আপনাদের বিবেকের কাছেই প্রশ্ন রাখছি। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কাকে বলে?”

মন্ত্রী বা এমপি পদে থাকা ব্যক্তিদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে নামার সুযোগ নেই। ফলে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের প্রার্থীদের প্রচারে অংশ নিতে পারছেন না আওয়ামী লীগের অনেক নেতা।

এ নিয়ম নিয়ে আপত্তি জানিয়ে সরকারের সেতুমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, “আজকে বিএনপির মহাসচিব, তিনি প্রকাশ্যে জনসভা করতে পারবেন, নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবেন, গণসংযোগ করতে পারবেন। অথচ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেটা করতে পারবেন না।

“আজকে মওদুদ আহমেদ সাহেব, খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাহেব প্রচারে অংশ নিতে পারবেন, কিন্তু আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ- তারা এমপি, সে কারণে তারা পারবেন না। সেটা কি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হল?”

নির্বাচন কমিশনের কাছে এই নিয়মের ব্যাখ্যা দাবি করে কাদের বলেন, “আমি এটা নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাই, এটা কেমন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড? এখানে ফিল্ডে মির্জা ফখরুল আছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নেই। এই বিষয়টার আমি কোনো সুরাহা খুঁজে পাচ্ছি না।”

পৃথিবীর অন্যান্য দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ার কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে, কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীও প্রচারে অংশ নেয়।

“পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেয়। সেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কোনো প্রশ্ন উঠছে না, আইন লংঘন হয় না। বাংলাদেশে কেন লংঘ হবে? সে প্রশ্নের জবাব আমরা আজও খুঁজে পাইনি।”

অবশ্য নিয়ম যা আছে, তা মেনে চলবেন বলেও সাংবাদিকদের প্রশ্নে জানান এই আওয়ামী লীগ নেতা।

তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের যে আচরণ বিধি তা আমরা পালন করবো। আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, আমি আচরণ বিধি মন্ত্রী-এমপি হিসেবে মেনে চলছি ।“

মন্ত্রী-এমপিদের প্রচারে অংশ না নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আচরণ বিধি যেহেতু হয়েই গেছে, এটা নিয়ে প্রশ্ন আছে, বিতর্ক আছে, যেটা আমি বললাম। তারপরেও যেটা হয়ে গেছে সেটা মানতে হবে।

“এখানে মন্ত্রী-এমপিদের বিধি-নিষেধ আছে। যেহেতু আচরণ বিধি লঙ্ঘন হবে, তাহলে দলীয়ভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের আমরা নির্দেশ দিয়েছি। মন্ত্রী-এমপিদের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন কোনোভাবে যেন আচরণ বিধি লঙ্ঘন করা না হয়। “

নতুন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক ভবনের উদ্বোধন শেষে মন্ত্রী বলেন,  সড়কের ক্ষতি কমাতে ২৮টি লোড কন্ট্রোল মেশিন স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে একনেকে।

“আজকে ভারী পরিবহন সড়ক নষ্ট করে দিচ্ছে। ক্ষতি থেকে সড়কগুলোকে রক্ষা করতে হলে আমাদের প্রয়োজন লোড কন্ট্রোল ব্যবস্থা কার্যকর করা। এ কাজ যত দ্রুত সম্ভব শেষ করতে হবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবে বলে আমি আশা করছি।”