মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মইনুলকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে মামলার কারণে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে তার সংশ্লিষ্টতা এখানে কোনো বিষয় নয়।
“এখানে কোনো জোটের বিষয় নয়, ব্যক্তির অপরাধের বিষয়। এটি একটি অপরাধ, তিনি নারী সাংবাদিককে যেভাবে অ্যাবিউজ করেছে, কোনো মার্জিত সুশীল ব্যক্তির পক্ষে কি সম্ভব এ ধরনের আচারণ করা? সাংবাদিকরাই তো কনডেম করেছেন।”
কাদের বলেন, “এখন তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সেখানে গ্রেপ্তার করাটাই জরুরি ছিল এবং পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।”
সম্প্রতি এক টেলিভিশন আলোচনা অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলার পর থেকে সমালোচনার মুখে রয়েছেন মইনুল। পরে তিনি টেলিফোন করে ক্ষমা চাইলেও মাসুদা ভাট্টি প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
তা না করায় মইনুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন মাসুদা ভাট্টি। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে মানহানির অভিযোগে কয়েকটি মামলা হয়। এর মধ্যে রংপুরের একটি মামলায় সোমবার রাতে ঢাকার উত্তরা থেকে মইনুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সোমবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনেও মইনুলের কটূক্তির আলোচনা হয়। তখন শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা প্রতিবাদ করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যা করার করবে। আপনারা মামলা করেন, আমরা যা করার করব।”
মইনুলকে গ্রেপ্তারের পক্ষে যুক্তি দিয়ে কাদের বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে তার পুনরাবৃত্তি রোধেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
“এ ধরনের অপরাধ করে পার পেয়ে গেলে এ ধরনের আরও অপরাধ করতে পারে। যাকে তাকে অশোভন অমার্জিত একটা ভালগার অবসিনিটি পর্যায়ে এমন গালি দিতে পারে, সেটার পুনরাবৃত্তি রোধে এটি করা হয়েছে। ঐক্য ফ্রন্টের তিনি নব্য নেতা- এসব ভেবে এটা করা হয়নি। ব্যক্তি হিসেবে যে অপরাধ, এ ধরনের বক্তব্যর কারণে, তার জন্যই তাকে গ্রেপ্তার করতে হবে।”
ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো উদ্বেগ বা আশঙ্কা রয়েছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, “ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে কোনো উদ্বেগ বা শঙ্কা নেই। প্রধানমন্ত্রী তো স্বাগত জানিয়েছেন, মইনুল হোসেনকে ব্যক্তিগত অপরাধের কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হঠাৎ করে এসে তার রাজনীতির খায়েস হয়েছে, যাকে তাকে গালি দেবেন…। ”
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কোনো পরিবর্তন আনা হচ্ছে কিনা- এ প্রশ্নে কাদের বলেন, “নির্বাচনের আগে সংশোধনের সুযোগ নেই, আইনের অপপ্রয়োগ যাতে না হয় সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখব। সাংবাদিকদের জন্য এ আইন করা হয়নি। যদি আপনি কোনো অপরাধ না করেন, তাহলে ভয় কিসের?”
সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা পরিবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ২৮ অক্টোবর থেকে সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতির যে ঘোষণা দিয়েছে সে বিষয়েও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা।
জবাবে তিনি বলেন, “এ সরকারের আমালে আইন সংশোধনের প্রশ্নই ওঠে না। আমাদের হাতে দিন আছে মাত্র দুটি। দুদিন পরেই সংসদ অধিবেশনের সমাপ্তি, এটা শেষ অধিবেশন। কাজেই এ সময়ে এটা আর সংশোধনের কোনো সুযোগ নেই।
“তারা যে দাবি-দাওয়া করছেন, সেগুলো…, তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেই কিন্তু এ আইনটা হয়েছে। তিন বছর ধরে এ আইন নিয়ে অনেক আলাপ-আলোচনা, ওয়েবসাইটে দেওয়া, সব কিছুই হয়েছে। আমি তাদেরকে অনুরোধ করেছি প্রত্যাহার করুন।”