এরশাদের লক্ষ্য এবার তরুণ ভোটার

তরুণ ভোটারদের দিকে জাতীয় পার্টি বিশেষ নজর রাখছে জানিয়ে তাদের ভোট পেতে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচারে জাতীয় পার্টিকে আনলেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2018, 05:40 PM
Updated : 18 Sept 2018, 05:40 PM

মঙ্গলবার রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনে অত্যাধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনী ক্যাম্পেইন’ উদ্বোধন করেন তিনি।

এরশাদ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক প্রচারের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়াই জাতীয় পার্টির ‘মূল লক্ষ্য’।

একাদশ নির্বাচনী প্রচারে নেমে এর আগেও তিনি বলেছিলেন, এবার তরুণ ভোটারদের দিকে ‘বিশেষ নজর’ রাখছে তার দল।

দেশের ১৬ কোটির বেশি জনসংখ্যার মধ্যে ১০ কোটি ৪০ লাখ ভোটার; এর এক-তৃতীয়াংশ বা তিন কোটি ভোটারই যুবক।

অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা শফিউল্লাহ আল মুনীর বলেন, “ডিজিটাল কার্যক্রমে সামাজিক মাধ্যমে প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে তাতে বিভিন্ন ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বার্তা দেশব্যাপী প্রচার করবে জাতীয় পার্টি।”

এছাড়াও কোয়েরি মেসেজ, ফেইসবুক মেসেঞ্জারে স্বয়ংক্রিয় বার্তা প্রদান, বিভিন্ন পত্রিকার অনলাইন সংস্করণেও বিজ্ঞাপন প্রচারের পরিকল্পনা তুলে ধরে দলটি।

অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের ওয়েবসাইটের উদ্বোধনও করা হয়।

এরশাদ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৩০০ আসনের প্রতিটিতে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।

“এবারের নির্বাচনে কোনো কেন্দ্রে বেআইনিভাবে সিল মারতে দেব না,” বলেন তিনি।

নিজের ছয় বছরের হাজতবাসের কথা স্মরণ করে এরশাদ বলেন, “আমার জীবনে এক দিনের শান্তি ছিল না, একদিনের সুখ ছিল না। এখনও মামলা ঝুলে আছে।

“২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতাসীন বিএনপি  ৫৮৮৮ টি মামলা তুলে নিয়েছিল, ৭৫ হাজার আসামি মুক্তি পেয়েছিল। তারপরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তারা  ছয় হাজার মামলা তুলে নিয়েছে।”

আক্ষেপের সুরে এরশাদ বলেন, “কিন্তু আমার কেস একটাও উইথড্র হয় নাই।  সমস্ত মামলা ঝুলে আছে।  তার কারণ আমাকে বিশ্বাস করে না, জাতীয় পার্টির শক্তিকে তারা ভয় পায়। ”

জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তৎকালীন সেনাপ্রধান এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে নয় বছর দেশ শাসন করেন। নব্বইয়ের গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ৭০টির বেশি মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। তিনটি মামলায় তার সাজার আদেশ হয়; একটিতে তিনি সাজা খাটা শেষ করেন।

সামরিক শাসক এরশাদ দাবি করেন, ১৯৮২ সালের পরিস্থিতি তাকে ক্ষমতা নিতে ‘বাধ্য করেছিল’।

“আমার জায়গায় যে কোনো লোক হলে, যে কোনো সেনাবাহিনীর প্রধান হলে তাকে ক্ষমতা গ্রহণ করতে হত।  আমি আবারও বলছি, আমি পদের জন্য লালায়িত ছিলাম না। বাধ্য হয়ে আমাকে এ পথে আসতে হয়েছে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে সমালোচনায় ভরা নিজের শাসনামলকেই এগিয়ে রাখতে চান এরশাদ।

“আমার রাজনীতির জীবনে এই নয় বছর যদি না আসত, বাংলাদেশ অন্ধ হয়ে থাকত। আমরা ব্রিটিশ আমলে থাকতাম, পাকিস্তান আমলে থাকতাম। সভ্যতার আলো এসে পৌঁছাত না। আমাদের সময়ের নয় বছর ছিল উন্নয়নের স্বর্ণযুগ।”