কোটাবিরোধীরা খুশি হলেও স্বস্তিতে নেই বিএনপি: কাদের

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোটা বাতিলের ঘোষণার পর কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা খুশি হলেও বিএনপি ও তার মিত্ররা স্বস্তি পাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2018, 05:15 PM
Updated : 17 April 2018, 05:15 PM

মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দলীয় আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপি চেতনার অন্তরে মুক্তিযুদ্ধকে লালন-পালন করে না। বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসেও বিএনপি বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করে না।

“যারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের পুরস্কৃত করতে পারে, তারা আর যা-ই হোক মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না। এমন মুক্তিযোদ্ধাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচনা করি না।”

বিএনপি নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমানকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “চট্টগ্রামে কণিষ্ঠের (জুনিয়র) কাছে পদপদবী হারিয়ে ঢাকায় এসে আওয়ামী লীগকে আক্রমণ করে যাচ্ছে ওই কথাগুলো বলে, যে কথাগুলো বললে তারেক রহমান খুশি হয়ে ওনাকে পদোন্নতি দিতে পারেন। কার মনে কী ব্যথা, কার মনে কী দুঃখ-আমরা বুঝি।”

কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে কীভাবে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপান্তর করা যায় সে বিষয়ে লন্ডন থেকে ভিডিও এসেছে অভিযোগ করে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, “এর জন্য আকাশে-বাতাসে টাকার ছড়াছড়ি। লন্ডন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার জন্য বার্তার পর বার্তা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচিত সাহসী ঘোষণা কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের খুশি করলেও বিএনপি ও তার দোসররা একটুও স্বস্তি পাচ্ছে না।"

সরকারি চাকরিতে নিয়োগে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে তা কমানোর দাবিতে গত সপ্তাহে টানা কয়েক দিনের আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন।  তবে এখনও কেন প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা মতো কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি সে প্রশ্ন করছেন বিএনপি নেতারা।

দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে দুই মাস আগে বিএনপি চেয়ারম্যান খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন কয়েক বছর ধরে লন্ডন প্রবাসী তারেক রহমান।

এ নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “লন্ডন থেকে বিএনপি চালায় মামলায় দণ্ডিত ও পলাতক আসামি। আওয়ামী লীগ চালান বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশে থেকেই আওয়ামী লীগ চালান।”

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নেতাদের দল গোছানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “ছোটখাটো সমস্যা সব দলে থাকে। নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। সদস্য সংগ্রহ অভিযান পুরোপুরি শুরু করতে হবে। কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে করে ফেলতে হবে। যেসব কমিটিতে সমস্যা হয়েছে, তাদের সময় দেওয়া হয়েছে কমিটি ঠিক করে ফেলার জন্য। 

“একটি কমিটিতে এত বেশি পদ, নিচের দিকে নেতা-কর্মীদের জায়গা দিলে ক্ষতিটা কী? ছোট ছোট মনোমালিন্য নির্বাচনের সময় বড় বড় বিভেদের জন্ম দেয়।”

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “এ দেশের মানুষ শান্তিপ্রিয় মানুষ। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর জঙ্গিবাদ রুখে দেওয়ার আহ্বানে সবাই সাড়া দিয়েছে। যার কারণে বাংলাদেশের মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে, এ দেশ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের ঠিকানা হতে পারে না। বাংলাদেশ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। এ কারণে আজ বাংলাদেশ সম্মানের আসনে অবস্থান করছে।” 

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমতউল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, আবদুল মতিন খসরু, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাত, সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান উপস্থিত ছিলেন।