খুন, ধর্ষণে সরকারের প্রভাবশালীদের মদদ: মওদুদ

খুন, ধর্ষণসহ সামাজিক অপরাধ শুধু সরকারের সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালীদের মদদে সংঘটিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মওদুদ আহমদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2017, 12:07 PM
Updated : 19 May 2017, 01:26 PM

শুক্রবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণ যে রেইনট্রি হোটেলে তার মালিক কে? সেটা তো আজকের খবরের কাগজে আবার বেরিয়েছে।

“আমি উচ্চস্বরে বলতে চাই, যত অপরাধ, এই যে সামাজিক অপরাধ বাংলাদেশে হচ্ছে, প্রত্যেকটার পেছনে দেখবেন সরকারের কোনো না কোনো মানুষের, কোনো না কোনো প্রভাবশালী মানুষের সমর্থন আছেন, মদদ আছে।”

বনানীর আবাসিক এলাকার ওই চার তারকা হোটেলটির মালিকানায় রয়েছে আল-হুমায়রা গ্রুপ, যার চেয়ারম্যান ঝালকাঠির সরকারদলীয় সাংসদ বজলুল হক হারুন।তার ছেলে-মেয়েরাই হোটেলটির পরিচালনায় রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, সাংসদ হারুনের ছেলে মাহির হারুনের বন্ধু পরিচয়ে গত ২৮ মার্চ ওই হোটেলে উঠেছিলেন ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদ। তার জন্মদিনের কথা বলেই দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া দুই তরুণীকে।

এই প্রসঙ্গ টেনে সংবাদপত্রের বরাত দিয়ে আইনজীবী মওদুদ বলেন, দুই শিক্ষার্থীর ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষমতাসীন প্রভাবশালীদের যুক্ত থাকার বিষয়টা আরো বেশি প্রমাণিত হয়েছে।

“প্রভাবশালী বুঝতে বুঝায় সরকারের সঙ্গে জড়িত। আমাদের পক্ষে তো কেউ নাই, আমাদের পক্ষে তো এই অপরাধ করা তো সম্ভব নয়।”

গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ঘোষিত ভিশন ২০৩০, আগামী দিনের রাজনীতি ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা হয়।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রসঙ্গে সাবেক আইনমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বর্তমান যে প্রধান বিচারপতি, তার প্রশংসা করতে হয়। তিনি চেষ্টা করছেন বিচার বিভাগের স্বাধীনতাটাকে সত্যিকারভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য। তার এই প্রচেষ্টা সফল হোক- এটাই আমরা চাই।”

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বিচার বিভাগ ও বিচারকদের স্বাধীনতা নিয়ে জনগণের মনে কোনো প্রশ্ন উঠার সুযোগ দেবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেন মওদুদ।

“আমরা ক্ষমতায় গেলে সেই প্রশ্নগুলোকে বিতাড়িত করে দেবে। এই ধরণের কোনো প্রশ্ন মানুষের মনে যাতে না থাকে, বিচারক সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করবেন। কে সরকারি দল, কে সরকারি দলে নাই, আইন একইভাবে প্রয়োগ করতে হবে। আইন ব্যক্তির ঊর্ধ্বে থাকবে, প্রতিষ্ঠান ব্যক্তির ঊর্ধ্বে থাকবে।”

আইনের শাসনের বদলে ‘দলীয় শাসন’ চলছে মন্তব্য করে মওদুদ বলেন, “দুই ধরণের বিচারিক দর্শন, যারা বিক্ষুব্ধ, যারা ভুক্তভোগী, যারা নির্যাতিত-অত্যাচারিত, যারা বিনা কারণে মিথ্যা মামলায় জড়িত তারাই তো আদালতে যাবে। আদালতের দায়িত্ব তাদেরকে প্রটেকশন দেওয়া; আমাদেরকে প্রটেকশন দেওয়া।

“আমরা নির্যাতিত-নিপীড়িত, আমাদেরকে মিথ্যা মামলায় জেলখানায় যেতে হয়। এখন সরকারি দলের জন্য আইনের একরকম প্রয়োগ, বিরোধী দলের জন্য অন্যরকমের প্রয়োগ হচ্ছে।”

সংগঠনের সভাপতি আশরাফ উদ্দিন বকুলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।