‘জাতীয় ঐক্যের’ জন্য জামায়াত ছাড়ার ইঙ্গিত হান্নান শাহর

জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ছাড়ার বিষয়টিও বিএনপির বিবেচনায় রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরামের সদস্য আ স ম হান্নান শাহ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 July 2016, 03:41 PM
Updated : 17 July 2016, 03:41 PM

গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার পর বিএনপি চেয়ারপারসন জাতীয় ঐক্যের ডাকের প্রতিক্রিয়ায় তাদের জামায়াত সংশ্লিষ্টতা তুলে ধরে ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের প্রেক্ষাপটে রোববার এক আলোচনা সভায় এই ইঙ্গিত দেন তিনি।       

হান্নান শাহ বলেন, “জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এখন প্রয়োজন জনগণের ঐক্যের। বেগম খালেদা জিয়াকে দেশনেত্রী উপাধি দিয়েছে জনগণ। দেশনেত্রী দেশের প্রয়োজনে, জনগণের প্রয়োজনে, বাংলাদেশ ও তার নাগরিকদের সুনাম রক্ষার জন্য জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন।

“এই ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে যদি কোথাও কোথাও আমাদের বিশেষ অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়, সেটা অবশ্যই আমরা চিন্তা-ভাবনা করে সেটা দূর করব।”

“কারণ আমাদের প্রধান লক্ষ্য হল জাতীয় ঐক্য। এই যে হান্নান শাহকে সামনের চেয়ারে দিলাম না পেছনের চেয়ারে দিলাম, সেটা মূল বিষয়বস্তু হওয়া উচিৎ না,” বলেন তিনি।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ভয়েস অব ডেমোক্রেসি’ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে ‘জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য ও নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় হান্নান শাহর এই বক্তব্যের একদিন আগেই খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ পরামর্শক অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার উদ্যোগ ফলপ্রসূ করতে জামায়াতই বিএনপির সঙ্গ ছাড়বে বলে তিনি আশা করছেন।

গত কয়েকদিনে জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ বিএনপি ঘনিষ্ঠ একাধিক জন জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন। খালেদা জিয়া প্রথমে তাদের নিরাশ করলেও পরে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেননি।

বিএনপিকে জামায়াত ছাড়তে আওয়ামী লীগ নেতাদের আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় হান্নান শাহ বলেন, “আমার কাছে নাম আছে, আওয়ামী লীগের কতজন শীর্ষনেতা মুসলিম লীগ আর জামায়াতের সঙ্গে আত্মীয়তা করেছেন, এই শেখ পরিবারের সদস্যসহ।

“তারা আত্মীয়তা করতে পারবেন, জায়নামাজ বিতরণ করতে পারবেন, তখন দোষ নাই। এখন যত দোষ নন্দঘোষ।”

গুলশানের ক্যাফেতে হামলা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সেনাবাহিনী অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হান্নান শাহ বলেন, “বাংলাদেশের সব মানুষ বলছে এই সরকার ব্যর্থ। ওই ঘটনার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছেলে জয় (সজীব ওয়াজেদ জয়) বলেছেন, তাদের সরকার জঙ্গিবাদ দমনে ব্যর্থ হয়েছেন।

“আপনারা সরকার চালাতে ব্যর্থ ও সন্ত্রাস দমনেও ব্যর্থ। আমি বলব, এই ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে অনতিবিলম্বে আপনারা পদত্যাগ করা উচিৎ।”

জঙ্গি দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযানের সমালোচনা করে বিএনপি নেতা বলেন, “কী আত্মতৃপ্তি, সাঁড়াশি অভিযান করেছি, সফল হয়েছি। সফলের নমুনা এই গুলশান!”

জঙ্গি দমনে আওয়ামী লীগ সফল হবে না বলেও দাবি করেন হান্নান শাহ।