“সরকারে যারা থাকবে, বিরোধী দলে যারা থাকবে, সবারই দায়বদ্ধতা থাকতে হবে জনগণের কাছে,” বলেন তিনি।
Published : 18 Sep 2024, 08:10 PM
দেশ সংস্কারের মাধ্যমে জনগণের কাছে সবার দায়বদ্ধতার ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেছেন, “একটা নতুন অন্তবর্তীকালীন সরকার এসেছে। তারা সংস্কার করতে চায়। আমাদের সেইসব আকাঙ্ক্ষার কিছু অংশ এই সরকার দ্বারা পূরণ হতে পারে। কিন্তু যা হবে না, সেটা পূরণ করার দায়িত্বটা হবে আপনাদেরকেই নিতে হবে। জনগণের কাছে সেই প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে।
“এমন একটা ব্যবস্থা অন্তত করতে হবে, যাতে করে সকলেরই দায়বদ্ধতা থাকবে। যারা সরকারে থাকবে তাদের দায়বদ্ধতা থাকবে, যারা বিরোধী দলে থাকবে তাদেরও দায়বদ্ধতা থাকবে, যারা সাংবাদিক থাকবে তাদেরও দায়বদ্ধতা থাকবে, যারা লেখক থাকবে তাদেরও দায়বদ্ধতা থাকবে। সবারই দায়বদ্ধতা থাকবে এবং দায়বদ্ধতা থাকবে জনগণের কাছে। কারণ তারাই রাষ্ট্রের সব ক্ষমতার মালিক।”
বুধবার দুপুরে সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে এক আলোচনাসভায় কথা বলছিলেন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সমালোচনা কিছুটা বাদ দেন। যারা আজকে দায়িত্বে আছেন, আমি তাদের সাফল্য কামনা করি এবং বিশ্বাস করি যে, তাদের ওপর অর্পিত যতটুকু দায়িত্ব, সেটা পালন করে তারা মর্যাদার সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ হয়ে যাবে।
“…আজকে যে সংস্কারের কথা হচ্ছে, আজকে যে বৈষম্য বিরোধের কথা হচ্ছে, আজকে যে বঞ্চনা নিরসনের কথা হচ্ছে, তার জন্য যে পরিবর্তনগুলো করতে হবে, সেই পরিবর্তনে এমন অনেক কিছু আসবে, সেগুলোকে অপরিবর্তনীয় করে দেওয়া হয়েছে। এটা যে শেষ হয়ে গেলে তা না…হয়ত এখন থেকে ১০ বছর পরে আমরাই আবার সবাই চাইব, সেটারও আবার কিছু পরিবর্তন আরও কিছু সংস্কার হতে হবে।”
সংবিধান সংস্কারের পাশাপাশি মানুষের চিন্তাভাবনা আর কর্তব্যেও সংস্কার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন এ বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, “…সব সংস্কারই কি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার করে দেবে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত জনগণের সরকারকেও অনেক কাজ করতে হবে। যে কাজ তারা করবেন, সেই প্রতিশ্রুতি তাদেরকে আগেই বলতে হবে। যাতে করে তার আলোকে জনগণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে তাকেই সেই পরিবর্তনের দায়িত্ব দেবে।
“আপনি জার্মানিতে, কোরিয়াতে, জাপানে যান। সেখানে নির্বাচনের আগে যারা ক্ষমতা প্রত্যাশী, তারা সেখানকার বিভিন্ন পেশাভিত্তিক যে সংগঠন তাদের কাছে চিঠি লেখে…। তারা বলে যে, আমরা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যেতে চাই, নির্বাচনে অংশ নিতে চাই, আমরা নির্বাচিত হলে এই এই করব, আপনারা আমাদেরকে সহযোগিতা করুন…সমর্থন করুন।
“বিভিন্ন সংগঠন তারা নিজেরা বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয় তারা কোন দলকে সমর্থন করবে। তারা যাদের সমর্থন করে তারা জিতে…বাংলাদেশেও আমাদের সংগঠনগুলোকে সেরকমভাবে গড়ে তুলতে হবে।”
রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের কথাও তুলে ধরেন নজরুল ইসলাম।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আকবর খান, জাতীয় পার্টির মোস্তফা জামাল হায়দার, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, নাগরিক ঐক্যের সাকিব আনোয়ার, এবি পার্টির আবু সোলায়মান চৌধুরী, সাংবাদিক সোহরাব হাসান সভায় বক্তব্য রাখেন।