সরকার পতনের পর দেশে যত মামলা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে নাম থাকা আসামির সংখ্যার দিক থেকে এটাই বেশি, বলেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।
Published : 15 Sep 2024, 01:40 AM
বিএনপির ঢাকার মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে এক যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগে ওবায়দুল কাদের, মতিয়া চৌধুরীর মত আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাসহ ৭০৩ জনের নাম উল্লেখ করে রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা হয়েছে।
ছাত্রদলের সাবেক এক সদস্য বাদী হয়ে গত বছর ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে যুবদলের নেতা শামীম মিয়া নিহতের ঘটনায় এ মামলা করেন। বর্তমানে জাতীয়তাবাদী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্বাস আলী এ মামলায় আসামি করেছেন অজ্ঞাতসহ ১২ হাজার জনকে।
শনিবার দায়ের করা এ মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও শেখ সেলিম, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াসহ শীর্ষ প্রায় সব নেতা, পুলিশের সাবেক আইজি ও পুলিশ কমিশনার ছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজাকে আসামি করা হয়েছে।
এ পর্যন্ত দেশে যতগুলো মামলা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে আসামিদের নামের সংখ্যার দিক থেকে এটাই সবচেয়ে বেশি বলে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান।
পল্টন থানার ওসি মোল্লা খালিদ হোসেন মামলা হওয়ার তথ্য দিয়ে বলেন, প্রায় ১৫ পৃষ্ঠার এই মামলায় ৭০৩ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ হাজার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আসামি করেছেন।
মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে।
এছাড়া গাজীপুরের আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক কাউন্সিলরও মামলার আসামির তালিকায় রয়েছেন। এতে জয়পুরহাট, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, ব্রাক্ষণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন জেলার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির নাম রয়েছে। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলরও রয়েছেন আসামির তালিকায়।
পুলিশের সাবেক আইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমানের পাশপাশি পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ, বিপ্লব কুমার সরকার, মেহেদী হাসান, একাধিক উপ কমিশনার, অতিরিক্ত উপ কমিশনার, সহকারী কমিশনারের নামও রয়েছে এজাহারে।
এজাহারে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ হামলার অভিযোগ করে বলা হয়, শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে পণ্ড করতে আওয়ামীলী গের নেতাকর্মীরা এবং পুলিশ পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালায়।
এতে যুবদল নেতা শামীম মিয়া গুলিতে নিহত হন অভিযোগ করে মামলায় বলা হয়, হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে পুলিশ শামীম মিয়ার বাবা ইউসুফ মিয়াকে দিয়ে একটি মিথ্যা মামলা দেওয়ায়।
এজাহারে বলা হয়েছে, সে সময়ের পল্টন থানার ওসি সালাউদ্দিন মিয়া পরিকল্পিতভাবে স্বাক্ষ্য এবং আলামত গোপন করে শামীম মিয়ার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
মামলার শুরুর বর্ণনায় ২০১৪ সালের নির্বাচনকে আওয়ামী লীগের একক নির্বাচন হিসেবে তুলে ধর বলা হয়, বিএনপি ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেও অতিউৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তা সাবেক আইজি জাবেদ পাটোয়ারী, সাবেক পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, সাবেক এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম, সাবেক পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান, পুলিশ কর্মকর্তা কৃষ্ণপদ রায়, নুরুল ইসলাম সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে একক নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
২০২৩ সালেও যড়যন্ত্র করে নীলনকশার নির্বাচনের ব্যবস্থা করে আওয়ামী লীগ বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়।