প্রধানমন্ত্রীর চায়ের দাওয়াতে বিরোধী নেতাদের ডেকে নিয়ে কী খাওয়ানো হবে সে বিষয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এমন কথা বলেন।
গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে চাইলেও বিএনপিকে বাধা দেওয়া হবে না জানিয়ে নেতাদের চা খাওয়াবেন বলে শনিবার জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেই প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, "আমি প্রধানমন্ত্রীর চায়ের দাওয়াতের সূত্র ধরে বলতে চাই, আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে কয়েকজন কর্মকর্তার নামে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হল। আর আপনি (শেখ হাসিনা) কী করলেন?
"এই গুম-খুনের সাথে, সরকারের গুম-খুনের সাথে জড়িত, সবাই বলে শেখ হাসিনার `ডেথ স্কোয়াড’, শেখ হাসিনার যে মৃত্যুপরোয়ানার যে স্কোয়াড- তার দুইজন ব্যক্তিকে আপনি পদোন্নতি দিয়েছেন সম্প্রতি।”
রিজভী বলেন, "সুতরাং আপনার (শেখ হাসিনা) চায়ের দাওয়াত। সেই চায়ের মধ্যে কী থাকবে- শেখ হাসিনার সেই চায়ের কাপ নিয়ে মানুষের প্রশ্ন যে, বিরোধী দলের নেতাদেরকে ডেকে উনি কী খাওয়াবেন?
"সেই চায়ে হেমলকের রস থাকবে নাকি …। আপনারা জানেন, এই হেমলকের রস পান করিয়ে প্রাচীন গ্রীকের একজন দার্শনিককে হত্যা করা হয়েছিলো। কারণ ওনার ইতোপূর্বেকার যে আচরণ, ইতোপূর্বে তিনি বিরোধী দলের সাথে যে আচরণ করেছেন সেই আচরণে আমরা এটা দেখেছি।”
আন্তর্জাতিকভাবেও গুম-খুন এবং ক্রসফায়ারের ওপর নজর রাখা হচ্ছে বলে মানববন্ধনে দাবি করেন বিএনপির এই নেতা।
"এখানে অনেক বক্তাই বলেছেন, গুম-খুনকে আজকে রাজনীতির অনুষঙ্গ করেছে রাষ্ট্র পরিচালনায়। বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশে একটা অজানা শব্দ ক্রসফায়ার এবং এটা তো যে আর মানুষ চোখ বন্ধ করে নেই, মানুষ চোখ বন্ধ করে হাটে না।
"কে গুম করছেন, কে খুন করছেন, কে ক্রসফায়ার দিচ্ছেন এটা সবাই জানে। আজকের এই প্রযুক্তির যুগে আন্তর্জাতিকভাবেও সবাই খেয়াল রাখছেন।”
পাবনার রূপপুর আনবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, "এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলারে। সেই প্রকল্প এখন বাড়িয়ে করা হয়েছে ১০ বিলিয়ন ডলার। যেটা হয় এক লক্ষ কোটি টাকা।
"এই অর্থ ক্ষমতাসীন দলের লোকজন আত্মাসাৎ করেছে। এই এক লক্ষ কোটি টাকা জনগণের টাকা। জনগণকেই এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। প্রত্যেকটা শিশুর ওপর এক লক্ষ টাকা ঋণ আছে। আর এর জন্য দায়ী প্রধানমন্ত্রী।”
মেগা প্রকল্পগুলোতে উচ্চ ঋণ নিয়ে ক্ষমতাসীনরা ‘হরিলুট’ করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, "জনগণ জানে, সামিট গ্রুপ কার, ওরিয়ন গ্রুপ কার, বাংলাক্যাট কার, বঙ্গ বিদ্যুৎ কার? এরা কত টাকা নিয়েছে সরকারের কাছ থেকে।
"ক্যাপাসিটি চার্জ তারা ঠিক নিচ্ছে। কুইক রেন্টাল থেকে বিদ্যুৎ যদি সরকার নাও দিতে পারেন, ক্যাপাসিটি নিচ্ছে। এই পর্যন্ত ৫০ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয়েছে।”
"এই টাকার কার? এই টাকা জনগণের। এর হিসাব একদিন না একদিন আপনাদের দিতে হবে।”
জাতীয়তাবাদী উলামা দলের উদ্যোগে বিদ্যুৎসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কটূক্তির প্রতিবাদে এই মানববন্ধন হয়।
সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, আমিনুল ইসলাম, তাঁতী দলের আবদুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম উপস্থিত ছিলেন।
আরও খবর