স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: শিক্ষা ও গবেষণায় অগ্রগতি কতদূর?

নাদিম মাহমুদনাদিম মাহমুদ
Published : 23 March 2021, 09:26 AM
Updated : 23 March 2021, 09:26 AM

বাংলাদেশের জন্মের পাঁচ দশক পার করলো। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিধ্বস্ত একটি দেশ বিনির্মাণে এ দেশের মানুষ কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। নাই নাই থেকে মুখ ফিরিয়ে এখন প্রাপ্তির দিকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার এই ছোট দেশটি এরই মধ্যে নানা অর্জনের মালা গেঁথেছে। বলতে গেলে বিশ্বের নানা প্রান্তে পরিচিতি পাওয়া আমাদের এই দেশটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতার স্বাদ পেয়েছে। 

বাংলাদেশের জন্মের পর কৃষি, অর্থনীতি আর অবকাঠামোগত উন্নয়নে ঈর্ষণীয় সাফল্য আমাদের ঝুঁড়িতে এসে জমা হয়েছে তা অস্বীকার করার কোন সুযোগ কারো নেই। এই তো সেদিন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের প্রাক্কালে উন্নয়নশীল দেশের তালিকা সমাবর্তনে এখন মধ্যম দেশের আয়ের খাতায় নিজেদের নামটি লিখেছে। নানার সূচকে নিজেদের অর্জনের প্রমাণাদি দেওয়ার পরই স্বীকৃতি মিলেছে। আমরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি তাতে কোন সন্দেহ নেই।

আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম, তারা অনায়াসে দেশের নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেও দেশের চালক গোষ্ঠি গতানুগতিকভাবে দেশটাকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে কুসংস্কার আর অন্ধকারে ঘেরা এই জাতিকে আলোকিত করতে শিক্ষা যেমন দ্যুতি ছড়িয়েছে, তেমনি বিজ্ঞানসম্মত চাষবাদে কমেছে ক্ষুধা আর দারিদ্র। স্বল্প কৃষি জমিকে কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি মুখে খাদ্য তুলে দেওয়ার প্রচেষ্টায় এই দেশের কৃষকরা যেমন হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, ঠিক তেমনি তাদের সেই ফসলের উৎপাদন বাড়াতে  এগিয়ে এসেছিল কৃষি ও জৈব প্রযুক্তিবিদরা। মূলত নতুন নতুন উদ্ভাবনী উত্তরের চিরায়িত মঙ্গাকে দমন করার সাহস যেমন জুগিয়েছিল, ঠিক তেমনি দক্ষিণের লোনা পানিতে সোনালী ধানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের কৃষিবিদরা বেশ সাফল্য দেখিয়েছে, তা অস্বীকার করার কোন সুযোগ আমাদের নেই। 

আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সূচকে আমাদের উল্লম্ফ হলেও আমরা আমাদের মানবশক্তিকে যথাযথ ব্যবহার করতে পারিনি। আমাদের যে পরিমাণ মানবশক্তি রয়েছে, তাদের সঠিক মূল্যায়ন করতে পারলে, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী এই পঞ্চাশ বছরে যেকোন প্রথম সারি অর্থনৈতিক দেশের তালিকায় নিজেদের দেখা মিলতো। দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে না পারার ব্যর্থতা আমাদের কাঁধে যেমন এসে জমছে, ঠিক তেমনি তাদের তৈরি করতে আমাদের কালক্ষেপণও হচ্ছে।

এর মূল কারণ শিক্ষা। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে, আমরা এমন কোন স্থায়ী শিক্ষানীতি তৈরি করতে পারিনি, যে শিক্ষানীতির ছায়ার তলে আমাদের ছেলে-মেয়েরা সুশিক্ষিত হিসেবে গড়বে। বরং পঞ্চাশ বছরে বিভিন্ন সময়ে আমাদের শিক্ষার কারুকলামে এমন উদ্ভট কিছু পরির্বতন এসেছে, তা সরকারের ক্ষমতার পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছে। ফলে তিন বছর আগের ছাত্ররা তিন বছর পরের ছাত্রদের সিলেবাসে মিল খুঁজে পায়নি। 

সময়ের সাথে সাথে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে স্বাধীনতা পরবর্তী কোন সরকারই কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারেনি। ফলে শিক্ষা ও গবেষণায় আমাদের দেশের রাষ্ট্রীয় শাসকগোষ্ঠির মনমগজে স্থায়িত্ব আনতে পারেনি। বরং বিভিন্ন সময়ের সরকারদের কাঁধে ঝুলেছে প্রশ্নফাঁঁস আর পরীক্ষালয়ে নকলের ফাঁদ। এইসব গুছিয়ে আনতে আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ব্যস্ত থেকেছে। একবিংশ শতাব্দীর কিছু আগে এইদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নকলের স্বর্ণযুগ ছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষকরা যেমন শিক্ষার্থীদের জন্য উত্তর সরবরাহ করে শিক্ষার বারোটা বাজিয়েছিল, ঠিক তার দশ বছর পর পাবলিক পরীক্ষায়  প্রশ্নপত্র ফাঁসের হিড়িক আমাদের বেশ ভাবিয়ে তুলেছিল। 

আশি ও নব্বই দশকে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র রাজনীতির ইতিবাচকতা ভুলে যেমন নেতিবাচকতা চোখে পড়েছে, ঠিক তেমনি পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রাজনৈতিক প্রভাব তুঙ্গে গিয়েছে। শিক্ষক ও ছাত্র রাজনীতিতে নাকাল হয়েছে আমাদের উচ্চশিক্ষা। 

সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো, আমরা আজও একটি কাঠামোগত শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তন করতে পারিনি, যে শিক্ষা আমাদের ছেলে-মেয়েদের সুশিক্ষিত করে তোলে। এই ব্যর্থতা আমাদের সরকারগুলোর যেমন নিতে হবে, তেমনি আমাদের শিক্ষাবিদদের কাঁধেও যাবে। 

মুক্তিযুদ্ধের মাত্র এক বছর পর আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়ার সবচেয়ে যুগোপযোগী প্রস্তাবনাটি এসেছিল শিক্ষাবিদ এবং বিজ্ঞানী কুদরত-ই-খুদার কাছ থেকে।  তার দেওয়া ১৯৭২ সালের শিক্ষা কমিশন স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনে হতে পারতো আলোকবর্তিকা। তিনি যে শিক্ষানীতিটির ধারণা দিয়েছিলেন, সেই শিক্ষানীতিটির কিছু অংশ এখনো জাপান ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ চোখ বন্ধ করে অনুসরণ করে আসছে। তাদের সেই কারিকুলামে ছিল না কোন ফাঁক। ফলে আধুনিক শিক্ষার সব অনুসঙ্গ মিশ্রণে হতে পারতো একটি শক্তিশালী শিক্ষা ব্যবস্থা।

বর্তমানে বহুমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের যেমন জানা ও বোঝার মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করে, ঠিক তেমনি সমাজে কর্মসংস্থানে থাকে ফারাক। ফলে একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে বরাবরই আমরা পিছিয়ে গিয়েছি। 

মূল্যবোধের শিক্ষানীতি আমাদের এখন পর্যন্ত আসেনি। অথচ কুদরাত-ই-খুদার সেই শিক্ষা কমিশনে শুরুতে এই বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়,

The main constituent of personality is the individual's character. His truthfulness, his honesty, his sense of fairness, his impartiality, his sense of responsibility, his orderly behaviour and his readiness to give greater value to common rather than individual welfare,—all these qualities constitute his personality. The teacher must endeavour to implant these qualities among his pupils so that these are absorbed in their consciousness and automatically reflected in their thoughts and activities.

আমরা যদি তার সেই নীতির কিছু অংশও আলোর মুখ দেখাতে পারতাম, তাহলে আজ আমাকে লেখায় আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিশ্বের অন্যতম সেরা শিক্ষা ব্যবস্থা বলতে দ্বিধা হতো না।

অথচ আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের সততা ও মূল্যবোধের সুস্থধারার পাঠ্যপুস্তক উপহার দিতে পারেনি। বরং বিভিন্ন সময় পাঠ্য পুস্তকে এমন কিছু বিষয় তুলে আনার চেষ্টা করা হয়েছে, যে শিক্ষা আমাদের সমাজ ও ধর্মীয় বিভেদ তৈরি করতে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হতে পারতো। সাধারণ, কারগরি আর মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার ভিন্নতায় আমরা যুগোপযোগী শিক্ষানীতি তৈরি আজও করতে পারিনি। ফলে কয়েক বছর পর আমাদের শিক্ষাবিদরা শিক্ষানীতি সংশোধনের প্রস্তাবনা দেয়। 

৫ বছরের শিশুদের কাঁধে বই পুস্তকের যে ভার তা প্রায় সেই শিশুর ওজনের সমান। জিপিএ নামক এক আজব সৃষ্টি ছেলে-মেয়েদের সামনে আমরা এমনভাবে ঝুলে দিয়েছি, যা পেলেই মেধার দাড়িপাল্লায় ওজন করতে কুণ্ঠাবোধ করি না। সেটাকে আমরা এখনো মূল্যায়ন করে আসছি। অথচ তা হওয়ার কথা ছিল না। আমরাদের মেধা ও মননে কতটুকু বিকাশ হয়েছে, তার দেখার জন্য কাগজে সনদের প্রয়োজন যতটা তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন আমরা কতটা বাস্তবিক প্রয়োগ করতে পারছি।

তবে এতো কিছু খারাপ লাগার মধ্যে ভাল লাগার বিষয় হলো, আমাদের নারী শিক্ষা এগিয়ে গিয়েছে। বলা যেতে পারে, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে এইসব জয়িতাদের ভূমিকা আমাদের স্বস্তি এনে দেয়। এক সময় অবহেলা করা হলেও সময়ের সাথে সাথে আজ বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রথমসারিদের তালিকায় মেয়েরা স্থান করে নিচ্ছে। দেশ পরিচালনায় যোগ দিচ্ছে নারীরা। দারিদ্রতায় পিছিয়ে পড়া মেয়েদের শিক্ষায় ফেরাতে বিভিন্ন স্কিমে বৃত্তি ও শিক্ষার উপকরণ বিনামূল্যে দেওয়ার কারণে মেয়েরা শিক্ষায় আগ্রহী হয়ে উঠেছে। 

উচ্চশিক্ষায় আমরা সত্যি এগিয়ে গিয়েছি। যেটা অবিশ্বাস্য। আগে একটি গ্রামে বিএসসি পাস করলে, কয়েক গ্রামের মানুষ তাকে দেখতে আসতো বলে যে রেওয়াজ ছিল, তা কাটিয়ে প্রায় ঘরে এখন স্নাতক পাস ছেলে-মেয়ে আছে। সনদে উচ্চশিক্ষা এগিয়ে থাকলেও আমরা এখনো গবেষণায় যোজন যোজন দূরত্বে। স্বাধীনতার পর কোন সরকারই গবেষণায় মনোযোগ দেয়নি। বছরে বছরে বরাদ্দ বাড়লেও গবেষণায় আমরা এখনো নাদানই রয়ে গিয়েছি। 

এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণার প্রাণ মনে করা হতো। শিক্ষকদের পঞ্চাশ শতাংশ কাজকে গবেষণায় নিয়োজিত করার কথা থাকলেও বর্তমানে এমন পর্যায়ে আমরা দাঁড়িয়েছি, যা আলোচনা করার মত নয়। সারা বিশ্বে বিজ্ঞান গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে নিলেও আমরা হাটছি উল্টো পথে। বরং বাংলাদেশের বয়স বাড়ার সাথে সাথে গবেষণার মান ও গতি দুই কমেছে। পঞ্চাশের অধিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হলেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো গবেষণার অ্যাম্বিয়েন্ট পরিবশে তৈরি হয়নি। ক্লাসের বাহিরে আমাদের শিক্ষকদের জ্ঞান সৃষ্টির নেশায় মেতে থাকার কথা থাকলেও তারা হাত গুতিয়ে ফেলছে। বরং তারা বেশি রাজনীতিমনস্ক হয়ে উঠছে। গবেষণার নেশার জায়গায় স্থান পেয়েছে রাজনৈতিক ক্ষমতা আর পদলেহনে।

অথচ আমাদের শিক্ষার্থীরা দেশের বাইরে পড়াশোনার সুযোগ নিয়ে প্রতি বছর যাচ্ছে। সুনামের সাথে গবেষণা করছে। নিজেদের অর্জনও কম নয়। এদের একটি বড় অংশই আর দেশে ফিরছে না। নিরাপত্তা আর চাকরির নিশ্চয়তার অভাবে দেশের বাহিরে থিতু হয়ে যাচ্ছে। ফলে দেশের মেধাবীদের একটি বড় অংশ আজ অন্য দেশ ব্যবহার করে এগিয়ে যাচ্ছে গবেষণায়। আমাদের যোগ্যতা ও পরিশ্রমের কঠোরতা থাকা সত্ত্বেও আমরা তাদের কাজে লাগাতে পারছি না।

গবেষণায় বরাদ্দের অপ্রতুলতায় উচ্চশিক্ষালয়ের পাশাপাশি আমাদের গবেষণাকেন্দ্রগুলো কেমন জানি নিষ্প্রাণ হয়ে যাচ্ছে। দিনের পর দিন আমরা নিজেদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা হারিয়ে আমরা কেবল কাগজে কলমে গবেষণা প্রতিষ্ঠান তৈরি করে রাখছি। স্বাধীনতার আগে ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)  'পূর্বাঞ্চলীয় গবেষণাগার' নামে গবেষণা শুরু করে। প্রতি বছর সরকার এই প্রতিষ্ঠানটিকে গবেষণা বরাদ্দ দিলেও আমরা এই প্রতিষ্ঠানটিকে গবেষণায় উজ্জ্বল ক্ষেত্র তৈরি করতে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছি। বেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠানটির শাখা-প্রশাখা তৈরি হলেও মান সম্মত গবেষণা আমাদের চোখে আসছে না। আন্তজার্তিক মানের গবেষণার সুযোগ সুবিধা তৈরি হচ্ছে কিনা আমি জানি না, তবে এই প্রতিষ্ঠানটিকে এগিয়ে নেওয়ার অনেক সম্ভবনা আমাদের দেশের ছিল। নানা কারণে, এই প্রতিষ্ঠানটি গবেষণায় মেলে ধরা গত পঞ্চাশ বছরেও হয়ে উঠেনি। এটি আমাদের ব্যর্থতা না সফলতা তা সরকারই ভাল বলতে পারেন।

আমরা এখনো গবেষণায় বরাদ্দ দেওয়াকে অপচয় মনে করি। এই মানসিকতার কোন পরিবর্তন আমরা দেখিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় কিছুটা পরিবর্তনের আভাস মিললেও দেশের বাহিরে ছড়িয়ে থাকা হাজারও বাঙালি ছেলে-মেয়ে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত ও অভিজ্ঞদের ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে দেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠান থাকলেও মূলত দক্ষ ও মেধাবী গবেষকদের কাজে লাগাতে না পারার কষ্ট আমাদের থাকছেই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আজও কেবল পড়ানোর জন্য তৈরি করা হচ্ছে, গবেষণার কেন্দ্র মনে করা হচ্ছে না। মাস্টার্স পাসকৃতরা পড়াচ্ছে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের। পিএইচডিধারীদের মূল্যায়নে পিছিয়ে পড়া আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তারা নিজেদের মানসিকতার উন্মেষ ঘটাতে পারছে না। ফলে উচ্চশিক্ষালয়ে গবেষণায় স্বাধীনতার পাঁচ দশকে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য ধরা পড়েনি। 

আমাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে। জীবন মানের পরিবর্তন এসেছে। আমরা বিশ্বে উঁচু মাথা দাঁড়াতে পারছি। কিন্তু শিক্ষা ও গবেষণায় পিছিয়ে থেকে সেই অর্জন ম্লান হতে পারে। আমরা চাইবো, মানসম্মত শিক্ষার, আমরা গড়বো গবেষণাভিত্তিক উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মনে রাখতে হবে, আমাদের দেশের মেধাবীদের যোগ্য হিসিবে তৈরি করতে না পারলে, আমাদের ভুগতে হবে। আমরা চাই, সরকার যুগোপযোগী এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করুক, যা আমাদের কেবল সনদই দেবে না, আমাদের আরো বেশি মানবিক ও দক্ষ মানব হিসেবে গড়বে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে এটাই হোক আমাদের বড় চাওয়া।