মূর্তি কিংবা ভাস্কর্য: কাতালুনিয়ার এল কাহানের

ঋক ভট্টাচার্য্য
Published : 4 Jan 2021, 10:45 AM
Updated : 4 Jan 2021, 10:45 AM

কিশোর বয়সে আত্মবিশ্বাসটা হয়তো একটু কম ছিল আমার। প্রিয় শিক্ষার্থীর চরিত্র আঁচ করতে পেরে আমার হাইস্কুলের শিক্ষক সদ্যপ্রয়াত পিটার জুলিয়ানি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছিলেন একদিন আমাকে। এর মধ্যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাটি ছিল এই: "মাই বয়, পৃথিবীর যে কোনো ব্যক্তি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট অথবা ইংল্যান্ডের মহারাণী, যত বড় হনুই তিনি হয়ে থাকুন না কেন, মলত্যাগ করতে কিংবা 'হাগতে' যখন বসেন (পাঠকগণ দয়া করে এই 'লৈপিক' অশ্লীলতাটুকু ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। শিক্ষক মহোদয় ঠিক এই কথাটাই বলেছিলেন ইংরেজি ভাষায় এবং পরলোকগত শিক্ষকের কথা পরিবর্তনযোগ্য নয়!), গোলাপের পাঁপড়ি বা শানেল ফাইভের গন্ধ বেরোয় না। তোরটার মতো দুর্গন্ধই ছড়ায়।" শুনতে খারাপ লাগলেও কথাগুলো আমাকে আত্মপ্রত্যয়ী করে তুলতে ভূমিকা রেখেছিল।

প্রকৃতি আমাদের সবাইকে প্রায় প্রতিদিনই তার মৃদু বা প্রবল ডাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চায় যে: 'ত্যাগটা হাই কমোডে করিস কিংবা ঝোপেঝাড়ে, কখনও ভুলিস না যে তুইও আর সবার মতো মানুষ!' আমরা কিন্তু ব্যাপারটা নিয়ে কখনোই সেভাবে চিন্তা করি না। কিন্তু স্পেনের কাতালুনিয়া (যে অঞ্চলটি কয়েক বছর আগে স্বাধীনতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে) এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকার সংস্কৃতিতে এমন একটি চরিত্র আছে যেটি প্রতি বড়দিনে এ কথাটি স্থানীয় মানুষদের স্মরণ করিয়ে দেয়।

পাশ্চাত্যে বড়দিনের মৌসুমে বিভিন্ন খ্রিস্টান সম্প্রদায় ছোট-বড় মূর্তি দিয়ে যিশুর জন্মলগ্নের দৃশ্যের একটি সুন্দর উপস্থাপনা করে। একে বলা হয় Nativity Scene। সেই দৃশ্যে থাকে একদম সাধারণ গরীবি ধাঁচের একটি চালাঘরের ভেতরে মেরি, যোসেফ এবং তাদের নবজাতক যিশুসহ যিশুর জন্য উপঢৌকন আনা প্রাচ্যদেশীয় তিন জ্ঞানী ব্যক্তি, তাদের উট, একটা গাধা, একটা ষাঁড়, কিছু ভেড়া ও মেষপালকসহ বিভিন্ন চরিত্র। পাশ্চাত্যের বাকি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মতো কাতালুনিয়াতেও বড়দিনের সময় এসব চরিত্র দিয়ে যিশুর একটি জন্মদৃশ্য উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু সেই পরিচিত দৃশ্যের একটি কোনে আলগোছে যুক্ত করা হয় অনন্য একটি চরিত্রের মূর্তি (নাকি ভাস্কর্য?): এল কাহানের (El Caganer)। শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে "মলত্যাগকারী" বা "যে মলত্যাগ করছে", ইংরেজিতে The Defecator বা The Pooper, সংস্কৃত তৎসম নাম হতে পারে "বিমলানন্দ", খাঁটি দেশজ বাংলায় যার নাম দিয়েছি আমি "হাগক"।

ঐতিহ্যগতভাবে "এল কাহানের" বা "হাগক" হচ্ছে লাল টুপি এবং সাদা জামা পরা এক কাতালান কৃষক যে কিনা প্যান্ট খুলে উবু হয়ে সকলের (এবং যিশুর) সামনে বসে অম্লানবদনে, প্রসন্নচিত্তে নিজের পশ্চাদদেশ প্রদর্শন করে মলত্যাগ করছে। সাধারণত বড়দিনের সময় কাতালান ছেলেমেয়েদের একটি খেলা হচ্ছে বাকি চরিত্রদের মধ্যে লুকানো হাগককে খুঁজে বের করা। কেবল নিজ সংস্কার ও সংস্কৃতির গণ্ডিতে অভ্যস্ত পাঠকের দৃষ্টিতে এই "হাগক" মূর্তির উপস্থিতি নিন্দনীয়, এমনকি অপমানজনক মনে হতে পারে। কিন্তু কাতালান জনগণের কাছে মেরি-যোসেফ-যিশু ব্যতীত বাকি চরিত্রগুলোর চেয়ে কোনো অংশে কম পবিত্র নয় এই বিমলানন্দ বাবাজী। শ-তিনেক বছর ধরে চরিত্রটি কাতালুনিয়ার আধ্যাত্মিক এবং সাংস্কৃতিক জীবনের একটি পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে রয়েছে। মূর্তি নাকি ভাস্কর্য, কোন কাতারে পড়বেন আমাদের বিমলানন্দ বাবাজী? কীভাবে পিউরিটান ক্যাথলিক সংস্কৃতিতে স্থান করে নিল এমন একটি তথাকথিত 'অশ্লীল' চরিত্র? বাংলাদেশে এমন ঘটনা ঘটলে তো এত দিনে কয়েকটা মামলা রুজু হয়ে যেতো!

কেউ জানে না ঠিক কখন কাতালান সংস্কৃতিতে হাগকের আবির্ভাব। এ বিষয়ে নানা মুনির নানা মত। Amics del Caganer (হাগকবন্ধু সংগঠন)-এর মতে ১৭শ শতাব্দীর শেষের দিকে বা ১৮শ শতাব্দীর গোড়ার দিকে স্প্যানিশ বারোক শিল্পযুগের সময় চরিত্রটি যিশুর জন্মদৃশ্যে স্থান করে নেয়। কেন এবং কীভাবে তাও কেউ জানে না আজ পর্যন্ত। কাতালুনিয়ার উর্হেল এলাকার তর্নাবুস গ্রামে কিছু পবিত্র চিত্র আছে যার মধ্যে একটিতে দেখা যায় এক মধ্যযুগীয় আইবেরিয়ান ধর্মযোদ্ধা তার 'ফালকাতা' বা তরবারির উপর মলত্যাগ করছে। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে এই যোদ্ধাই আদি-হাগক যে কিনা আধুনিক হাগকে রূপান্তরিত হয়েছে। অন্য কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, এটি একজন যোদ্ধার অপরিহার্য যুদ্ধপূর্ব আচার বা রীতিও হতে পারে। মানুষ মরে গেলে লাশ থেকে মল-মূত্র নির্গত হতে পারে। মধ্যযুগের কোনো যোদ্ধা অবশ্যই চাইত না যে যুদ্ধে মারা পড়লে তার লাশের এই দুর্গতি হোক। সুতরাং যুদ্ধের আগেই নিজের শরীরের সব নোংরা বের করে ফেলত তারা। তরবারীর ওপর মলত্যাগ কেন? এর কারণ, শত্রু যদি 'মলচর্চিত' তলোয়ারের আঘাত থেকে বেঁচেও যায়, সংক্রমণের হাত থেকে সে বাঁচবে না।

এই যোদ্ধাই আমাদের হাগক বা বিমলানন্দের একমাত্র উৎস কিনা সে বিষয়ে এখনও বিতর্ক আছে। এর উৎস আদৌ কাতালুনিয়া কিনা সেটিও একটি ভালো প্রশ্ন, কারণ চরিত্রটিকে দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন এলাকায় পাওয়া যায়। স্পেনের মুর্সিয়া অঞ্চলে হাগকের নাম 'কাহোনেস (Cahones)', ইতালির নেপলসে এর নাম কাকোনে '(Cacone)' এবং পর্তুগালে 'কাগোঁয়েস (Cagões)' (উল্লেখ্য যে স্থানভেদে এসব নামের অর্থ একই এবং নামগুলোর উৎস হচ্ছে 'কাকা (Caca)' যার অর্থ মল বা বিষ্ঠা। আইবেরিয়ান উপদ্বীপে এসে শব্দটি হয়ে গেছে কাহা (Caha/Caga)। এই শব্দের আদি উৎস প্রোটো ইন্দোইউরোপীয় শব্দ 'কাক্কা (Kakka)', যা আমাদের অঞ্চলে এসে ধ্বনিপরিবর্তনের নিয়মে হয়তো কালক্রমে হয়ে গেছে 'হাক্কা এবং অবশেষে 'হাগা'। স্পেনের সালামাঙ্কা প্রদেশের রদ্রিগো নগরীতে পুনর্জাগরণের সময়ে নির্মিত একটি ক্যাথিড্রালে অসংখ্য মুর্তির ভিড়ে লুকানো রয়েছে মলত্যাগরত এক ব্যক্তির মূর্তি বা ভাস্কর্য। এই মূর্তিটিই হয়ত আধুনিক হাগকের পূর্বপুরুষ। সন্দেহ নেই, এই চরিত্রের উৎস জানার জন্যে আরও ইতিহাসভিত্তিক ও নৃতাত্বিক গবেষণা প্রয়োজন।

হাগকের উৎস সম্বন্ধে আমাদের সীমিত জ্ঞান সত্ত্বেও আধুনিক কাতালান সংস্কৃতিতে এই চরিত্রের গ্রহণযোগ্যতার কারণ নিয়ে নৃতত্ত্ববিদদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মতামত আছে। বিশিষ্ট কাতালান জাতিতত্ববিদ ও লোকবিজ্ঞানী যোয়ান আমাদেস (Joan Amades) মনে করেন, হাগকমুর্তি হচ্ছে প্রাচুর্য ও উর্বরতার প্রতীক। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংস্কৃতিতে – মিশরীয় মিন দেবতার মূর্তি বা হিন্দুদের শিবলিঙ্গের মত পুরুষাঙ্গ-যোনি, মাতৃকামূর্তি কিংবা উইলেনডর্ফের ভেনাসের মতো নারীমুর্তি ব্যবহৃত হয়েছে উর্বরতার প্রতীক হিসেবে। আমাদেসের মতে, মলত্যাগও উর্বরতার প্রতীক, কারণ মল থেকেই সার হয় এবং সেই সার দিয়ে উৎপাদিত হয় খাদ্য যা খেয়ে মানুষ পুনরায় মাটি উর্বর করে। সুতরাং যিশুর জন্মদৃশ্যে হাগককেও রাখতে হবে, কারণ তার মলে মাটি উর্বর হওয়াতেই পরবর্তী বছর ভালো ফসল ফলে পুনরায় বড়দিনের আনন্দ করার সুযোগ হয়। তিনি মনে করেন, হাগকমূর্তি সৌভাগ্যের প্রতীক এবং যিশুর জন্মদৃশ্যে হাগকের অনুপস্থিতি দুর্ভাগ্য এবং প্রতিকুলতা ডেকে আনতে পারে বলে কাতালানের গণমানুষের বিশ্বাস। যে গ্রামে যিশুর জন্মদৃশ্যে কোনো ক্রিসমাসে হাগকমূর্তি না রাখা হয় ভুলক্রমে বা ইচ্ছাপূর্বক, সেই গ্রামের আশেপাশের খেতে সেই বছরের গ্রীষ্মে নাকি ভালো ফসল ফলে না। প্রমাণ, ২০০৫ সালে বার্সেলোনা নগর পরিষদ যখন সরকারি খরচে তৈরি Nativity Scene-এ এই চরিত্রটিকে বাদ দেয়, তখন লোকজন রাগারাগি, হৈচৈ শুরু করেছিল এবং সরকারের প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল। গির্জা কিংবা পোপ এই মূর্তি বা ভাস্কর্যটিকে বরদাস্ত করতে বাধ্য হয় স্রেফ এর জনপ্রিয়তার কারণে।

হাগকের পবিত্রতা নিয়ে বিতর্ক এখনও শেষ হয়ে যায়নি। ধর্মনিন্দা কিংবা ব্লাসফেমির প্রশ্ন তুলে হাগককে নিয়ে কেউ যখন নাক শিটকায়, কাতালান নৃতত্ত্ববিদ মিগেল দেলগাদো (Miguel Delgado) তখন বলেন, জঘন্য বা ভয়ঙ্কর দৃশ্যের বীভৎস রস মোটেও অপবিত্র নয়, বরং এটা পবিত্রতার মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়, ঠিক যেমন করে প্রকাশ্যে নির্যাতিত ও রক্তাক্ত ক্রুশবিদ্ধ যিশুর বীভৎস মৃত্যুদৃশ্য খ্রিস্টধর্মের পবিত্রতম প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পবিত্রতা বা অপবিত্রতা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক তো আছেই, কিন্তু হাগক চরিত্রের সবচেয়ে কৌতুহলজনক দিক হচ্ছে এর আধুনিক বিবর্তন। কাতালুনিয়ার বিভিন্ন উপহারের দোকানে এই হাগককে আপনি পাবেন বিভিন্ন রূপে: উবু হয়ে পশ্চাদদেশ বার করে বসে মলত্যাগরত এর্জের টিনটিন, স্পিলবার্গের ইটি, স্টার ওয়ার্সের ইওডা, স্টার ট্রেকের স্পক, লর্ড অফ দ্য রিংসের গোলাম অথবা সুপারম্যান, ব্যাটম্যান, স্পাইডারম্যান, হাল্ক কিংবা ঔলভারিনের মতো বিভিন্ন সুপারহিরোদের। কেবল কল্পনাজগতের প্রভাবশালী ও ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরই যে হাগকমূর্তি নির্মিত হয়, তা কিন্তু নয়। ইতিহাসের, বিনোদন জগতের এবং বিশ্ব রাজনীতির বিভিন্ন ব্যক্তিত্বও আছেন সেখানে: আলবার্ট আইনস্টাইন, মহাত্মা গান্ধী, ম্যারিলিন মনরো, চার্লি চ্যাপলিন, অ্যাডলফ হিটলার, নরেন্দ্র মোদি, বারাক ওবামা, ডনাল্ড ট্রাম্প, ভ্লাদিমির পুতিন, হিলারি ক্লিন্টন, কিম জং উন, শি জিনপিং, বরিস জনসন, করোনায় মাস্ক পরা এমানুয়েল মাক্রোঁ, জাস্টিন ট্রুডো, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ, ইংল্যান্ডের মহারানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এমনকি পোপ ফ্র্যান্সিস পর্যন্ত বাদ যায়নি। লোকজন এসব মূর্তি স্যুভেনির হিসেবে সংগ্রহ করে থাকে। অনভিজ্ঞ ব্যক্তির চোখে হাগক হয়ত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি অসম্মান। কিন্তু কাতালানরা মনে করে, কোনো বিখ্যাত ব্যক্তির হাগক মূর্তি তৈরি তার জনপ্রিয়তার প্রমাণ। যারা অতটা স্পর্শকাতর নয়, তারা হয়ত এটাকে নিছকই একটি প্যারোডি বা কৌতুক হিসেবে দেখে।

প্রতিটি কৌতুকের পেছনে লুকিয়ে থাকে মনুষ্যত্বের একেকটি শিক্ষা। যে কোনো মানুষ, তিনি ইতিহাসের স্বনামধন্য ব্যক্তিই হোন কিংবা হোক ইতিহাসে উপেক্ষিত আমজনতা, মহান-সাধারণ নির্বিশেষে সবাই কুকুর-বেড়াল-গিরগিটির মতোই মলত্যাগ করে। কেউই প্রকৃতির নিয়মের উর্ধ্বে নয়। মহানকে মাটির সমতলে নামিয়ে মানুষ বানায় হাগক। আম আর খাস – এই দুইয়ের মধ্যে যে আদতে কোনো তফাৎ নেই- হাগক সেদিকে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ক্ষমতাহীন আম এবং ক্ষমতাবান খাস এর মধ্যে সবসময়ই শ্রদ্ধা ও ভক্তির একটা দেয়াল থাকে, যাতে মনে হয় তারা পূজনীয় দেবতা। কিন্তু সেই মহাজনদেরকে তাদের আসল রূপে, অর্থাৎ নিয়মিত মলত্যাগে বাধ্য মানুষ হিসেবে দেখলে ঘৃণা কিংবা ভয়ের পরিবর্তে তাদের প্রতি আমাদের মনে সহমর্মিতা আসবে।

প্রাচ্যের দেশগুলোতে এমন একটি মুর্তি এবং এমনতর সংস্কৃতি এখনও কল্পনার বাইরে- বিশেষ করে কোনো রাজনীতিবিদ কিংবা প্রভাবশালী কোনো ব্যক্তির হাগকমূর্তি নির্মাণের কথা তো ভাবাই যায় না, যখন কিনা সাধারণ একটা ব্যঙ্গচিত্রও সহ্য করতে পারি না আমরা এখনও। কিন্তু ক্ষমতাবান খাসকে ক্ষমতাহীন আম ব্যঙ্গ করবে প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে- এটাই পাশ্চাত্যের যুগান্তরের নিয়ম। সমাজের সঠিক বিবর্তনের স্বার্থে এই সংস্কৃতি অপরিহার্য, যার প্রমাণ পাশ্চাত্য এগিয়ে গেছে, আমরা সর্বতোভাবে তাদের নকল করেও সর্বক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি। চাইলেই কিন্তু আমরা কাতালুনিয়ার হাগকের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে মহান ব্যক্তিদের মানুষ হিসেবে দেখা অভ্যাস করতে পারি। মহান 'খাস'-ও এই মূর্তি দেখে নিজেদের সাধারণ 'আম' বলে ভাবতে শুরু করতেই পারেন। মহান যদি আম জনতার মতো মলত্যাগ করতে বাধ্য হয়, তবে আম জনতার মধ্যেও মহান হওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান। দিনশেষে মহান কিংবা পূজনীয় ব্যক্তিরাও মরণশীল মানুষ ছাড়া আর কিছুই নন, তাই না?