পানির চাহিদা বাড়ায় বেশি লবণ ও মসলা দেওয়া খাবার। তাই এসব এড়াতে হবে।
Published : 24 Mar 2024, 12:33 PM
সিয়াম সাধনার এই মাসে রোজা রাখতে গিয়ে অনেকেই অজান্তে দেহে পানির ঘাটতি সৃষ্টি করেন।
শরীর আর্দ্র রাখতে এই সময়ে সেহরি ও ইফতারে পর্যাপ্ত পানি ও পানীয় সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এই বিষয়ে ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেস ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতীয় চিকিৎসক ডা. ললিতা পল্লি বলেন, “পানিশূন্যতা নানান স্বাস্থ্য সমস্যা, দুর্বলভাব, মাথাব্যথা ও ক্লান্তির পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সৃষ্টি করে।”
পানীয় সমৃদ্ধ খাবার: ইফতারে জলীয় উপাদান সমৃদ্ধ ফল ও সবজি যেমন- শসা, তরমুজ, টোমেটো ও কমলা খাওয়ার পরামর্শ দেন, ডা. পল্লি।
“এগুলো কেবল পুষ্টি উপাদান নয় বরং দেহে তরল সঞ্চয়ে সহায়তা করে”- বলেন তিনি।
সুপ ও স্মুদি: আর্দ্র থাকতে উষ্ণ সুপ বা ফল, সবজি ও দই সমৃদ্ধ আর্দ্রতা রক্ষাকারী স্মুদি খাওয়া যেতে পারে ইফতারে।
বেঙ্গালুরু’র পাঁচ তারকা হোটেল ‘দ্যা লিলা ভারতিয়া সিটি’র সহকারী রন্ধনশিল্পী রাজেশ রয় বলেন, “ডাবের পানি, কলা, পালংশাক ও কাঠবাদাম দিয়ে ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ স্মুদি তৈরি করা যায়। এসব উপাদান ব্লেন্ড করে পুষ্টিকর পানীয় পান করলে ঘামের কারণে হারিয়ে যাওয়া ইলেক্ট্রোলাইটস’য়ের ঘাটটি পূরণে সহায়তা করে।”
ঘন ঘন পানি পান: একবারে অনেক পানি পান না করে ধীরে ধীরে অল্প অল্প পানি পান করার পরামর্শ দেন ডা. পল্লি।
তিনি বলেন, “সেহরিতে পর্যাপ্ত পানি পান করার চেষ্টা করতে হবে। তবে অতিরিক্ত যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। না হলে পেট ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। আর ইফতারের পর থেকে পানি পান চালিয়ে যেতে হবে।”
ইফতারের সময়ে
পুনরায় আর্দ্রতা: ডা. পল্লি বলেন, “খেজুর ও পানি দিয়ে ইফতার শুরু করা একটা স্বাভাবিক অনুশীলন। খেজুর প্রাকৃতিক শর্করা ও ইলেক্ট্রোলাইটসের যোগান দিয়ে পুনরায় দেহ আর্দ্র রাখতে সহায়তা করে।”
পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে এমন পানীয় এরিয়ে চলা: ভারতের ‘নইদা ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড হসপিটাল’য়ের পুষ্টিবিদ প্রীতি নাগর এই সময়ে, চিনি সমৃদ্ধ এবং ক্যাফেইন ধরনের পানীয় পান থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।
“এগুলো দ্রুত শরীরকে পানিশূন্য করে ফেলে আর মূত্রবর্ধক প্রভাব ফেলে। এর পরিবর্তে ভেষজ চা ও ফলের রস পান উপকারী”- বলেন তিনি।
পানি পান চালিয়ে যাওয়া: ইফতারের পর থেকে নিয়মত অল্প অল্প পানি পানের পরামর্শ দেন, নাগর।
চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো স্পেক্ট্রা হসপিটাল’য়ের পুষ্টিবিদ ডা. মঞ্জুলা শ্রীধর- সারা সন্ধ্যায় ধীরে ধীরে পানি পান ও তরল খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, “এতে পাকস্থলীর ওপরে বাড়তি চাপ পড়বে না এবং অস্বস্তি হওয়ার ঝুঁকি কমবে।”
নোনতা ও মসলাদার খাবার এড়ানো: “নোনতা ও মসলাদার খাবার তৃষ্ণা বাড়ায় ও পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে”- বলেন দিল্লির ‘আর্টেমিস লাইট এনএফসি’ ক্লিনিকের পুষ্টিবিদ ডা. সঙ্গীতা তিওয়ারি।
বেশি আর্দ্রতা রক্ষাকারী এবং হজম সহায়ক খাবার ইফতারে খাওয়ার পরামর্শ দেন, তিনি।
তার ভাষায়, “ইফতার ও সেহরিতে পরিমিত লবণ ও হালকা মসলার খাবার গ্রহণ করা উচিত।”
দিনের বেলা
কাজের পরিকল্পনা করা: ডা. শ্রীধর- এই সময়ে তীব্র শারীরিক পরিশ্রম, কড়া রোদে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেন। এতে ঘাম বৃদ্ধি পায় ও দেহে পানিশূন্যতা বাড়ে।
দিনে হালকা পরিশ্রম ও বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
শরীরের কথা শোনা: “শরীর কেমন অনুভব করে সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে”- বলেন, ডা. পল্লি।
তৃষ্ণা বৃদ্ধির কারণ বের করা আর বেশি মাত্রায় পানির চাহিদা তৈরি করে এমন কার্যক্রম প্রয়োজনে এড়াতে হবে।
বিশ্রাম নেওয়া: দেহের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম প্রয়োজন। এছাড়াও শ্বাসের ব্যায়াম, ধ্যান ও মনের শান্তি রক্ষা করা প্রয়োজন বলে ব্যাখ্যা করেন দিল্লির ‘বিএলকে ম্যাক্স সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল’য়ের জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ এশা ওয়াধ্যা।
আরও পড়ুন