সংবেদনশীল ত্বকের জন্য সানস্ক্রিন নির্বাচনের উপায়

এসপিএফ’য়ের মাত্রা বেশি হলেও সংবেদনশীল ত্বকে সমস্যা হতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 March 2024, 12:51 PM
Updated : 5 March 2024, 12:51 PM

যে কোনো মৌসুমে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা আবশ্যক। এটা ত্বককে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষিত রাখে।

আর রোদ-পোড়াভাব ও অকালে বয়সের ছাপ পড়ার ঝুঁকি কমায়। তবে ত্বকের ধরন বুঝে সঠিক সানস্ক্রিন নির্বাচন করা উচিত।

সংবেদনশীল ত্বক বলতে যা বোঝায়

সংবেদনশীল ত্বক যে কোনো অবস্থায় তীব্র প্রতিক্রিয়া করে। পরিবেশিক যে কোনো বিষয় যেমন- সূর্যালোক, কড়া রাসায়নিক উপাদান অথবা নির্দিষ্ট কিছু প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে ত্বকে লালচেভাব, চুলকানি, জ্বালাপোড়া অথবা শুষ্কতার সমস্যা দেখা দেয়।

হেল্থশটস ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এভাবে ব্যাখ্যা করে ভারতীয় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রশ্মি আদেরাও আরও বলেন, “এই বিষয়গুলোর প্রতি ত্বকের সুরক্ষা স্তরের তীব্র প্রতিক্রিয়া হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে যা অস্বস্তি বা জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে।”

যে কারণে সংবেদনশীল ত্বকে সানস্ক্রিন ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ

সংবেদনশীল ত্বকের অধিকারীদের জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটা ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণ থেকে রক্ষা করে।

অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে তোলে, প্রদাহ, লালচেভাব এবং অন্যান্য সমস্যা আরও মারাত্মক রূপে নিয়ে যায়।

সানস্ক্রিনের নানান প্রকার

সাধারণত দুই ধরনের সানস্ক্রিন পাওয়া যায়। রাসায়নিক ও ফিজিক্যাল অথবা মিনারেল।

রাসায়নিক সানস্ক্রিন সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিকে শোষণ করে এবং তাপে পরিণত করে। অন্যদিকে ‘ফিজিক্যাল’ সানস্ক্রিন একটি বাহ্যিক সুরক্ষার স্তর তৈরির মাধ্যমে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিকে প্রতিফলিত ও বিক্ষিপ্ত করে ত্বক থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করে- এই বিশেষজ্ঞ।

সংবেদনশীল ত্বকের জন্য সানস্ক্রিন বাছাইয়ের উপায়

সংবেদনশীল ত্বকের জন্য সানস্ক্রিন বাছাই করার ক্ষেত্রে পণ্যের গায়ে ‘সুগন্ধি মুক্ত’, ‘হাইপোঅ্যালার্জেনিক’ এবং ‘ডার্মাটোলজিস্ট টেস্টেড’ বা ত্বক-বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে পরীক্ষিত- এই লেখাগুলো দেখে নেওয়া উচিত।

খনিজ-ভিত্তিক সানস্ক্রিনের ক্ষেত্রে ‘জিংক অক্সাইড’ বা ‘টাইটেনিয়াম ডিঅক্সাইড’ সমৃদ্ধ পণ্য বেছে নিতে হবে। এগুলো ত্বকে কম অস্বস্তি বা জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে।

কড়া রাসায়নিক উপাদান যেমন- অক্সিবেঞ্জোন, অ্যাভোবেঞ্জোন বা ‘সুগন্ধি’ আছে এমন ক্রিম এড়িয়ে চলা উচিত। এগুলো সংবেনশীলতার মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।

এসপিএফ ১০০ কি সংবেদনশীল ত্বকের জন্য ভালো?

অনেকেই ভাবেন, উচ্চ এসপিএফ বা ‘সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর’ ত্বক বেশি সুরক্ষিত রাখে।

সত্যি বলতে ২০১৯ সালে ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব ডার্মাটোলজি’ জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয় এসপিএফ ৫০ অপেক্ষা এফপিএফ ১০০ বেশি মাত্রায় অতিবেগুনি রশ্মির বিরুদ্ধে কাজ করে; বিকিরণ ও রোদে-পোড়াভাব থেকে সুরক্ষিত রাখে।

তবে ডা. অ্যাদেরাও বলেন, “এসপিএফ ১০০ সংবেদনশীল ত্বকের জন্য ভালো নাও হতে পারে। এসপিএফ’য়ের পরিমাণ প্রাথমিক অবস্থায় সূর্যের ইউভিবি রশ্মির প্রতিরক্ষক হিসেবে কাজ করে, সংবেদনশীলতার মাত্রার ওপরে নয়।”

এসপিএফ ৩০ সাধারণত যথেষ্ট ধরা হয়। উচ্চমাত্রার এসপিএফ সামান্য বাড়তি সুরক্ষা প্রদান করে এবং এতে থাকা রাসায়নিক উপাদান অনেক ক্ষেত্রে ত্বকে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।

উচ্চমাত্রায় এসপিএফ’য়ের ওপর নির্ভর না করে বরং সংবেদনশীল ত্বকের জন্য উপযোগী সানস্ক্রিন খোঁজা ও নিয়মিত ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ।

সংবেদনশীল ত্বকে যেভাবে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হয়

প্রথমে মুখ ভালোমতো পরিষ্কার করে আলতোভাবে চাপ দিয়ে মুছে নিতে হবে।

পরিমিত পরিমাণে সানস্ক্রিন ব্যবহার করে কমপক্ষে ১৫ মিনিট শোষণের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তারপর রোদে যেতে হবে।

প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর অথবা মুখে ঘাম হলে, সাঁতার কাটলে বা ব্যায়ামাগার থেকে বের হয়ে পুনরায় সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।

সানস্ক্রিন ব্যবহারে বেশি জোরে ঘষা যাবে না। এতে ত্বকে অস্বস্তি ও সংবেদনশীলতা বাড়তে পারে।

পানি-রোধী, ‘ব্রড-স্পেক্ট্রাম’ এসপিএফ ৩০ সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন বাছাই করা উচিত।

ছবি: পেক্সেল্স ডটকম।

আরও পড়ুন

Also Read: রোদে পোড়াভাব দূর করার ১১টি পন্থা

Also Read: ঘরের ভেতরেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হয়

Also Read: যে কারণে ঠোঁটেও সানস্ক্রিন দেওয়া উচিত