জাপানি খড়ের ভাস্কর্য

জাপানে ধানের একটি জাত ‘কোশিহিকারি’, এটি তুষারপাত ও অন্যান্য প্রতিকূলতায় দ্রুত বড় হতে পারে।

রবিউল কমলরবিউল কমল
Published : 28 May 2023, 09:39 AM
Updated : 28 May 2023, 09:39 AM

বন্ধুরা তোমরা নিশ্চয়ই ধানের খড় চেনো? একবার ভাবতো এই খড় দিয়ে যদি হাতি, ঘোড়া, বাঘ, ভালুক বানানো যায়- তাহলে কেমন হতো? এ কথা শুনে নিশ্চয় অবাক লাগছে! ভাবছ কীভাবে সম্ভব!

কিন্তু, খড় দিয়ে হাতি, ঘোড়া, বাঘ বানানো সম্ভব। একটু সহজ করে বললে ভাস্কর্য বানানো। আর জাপানে সেটাই বানানো হচ্ছে। তারা এটিকে একটি শিল্প বানিয়ে ফেলেছে। তাদের বানানো ভাস্কর্য নিয়ে প্রতিবছর আবার উৎসবও হয়। কী মজার ব্যাপার তাই না?

আসল কথা বলি তাহলে। জাপানের একটি প্রিফেকচারের নাম নিগাতা। প্রিফেকচার শব্দটি কঠিন লাগছে? কঠিন লাগলে সহজ করে এটিকে প্রদেশ বলতে পারো। জাপানিরা প্রদেশকে প্রিফেকচার বলে। তার মানে নিগাতা হলো একটি জাপানি প্রদেশ। এ প্রদেশটি ধান চাষের জন্য খুবই পরিচিত। সেখানে একটি ভিন্ন জাতের ধানের চাষ হয়। এই ভিন্ন জাতটি হলো ‘কোশিহিকারি’।

কোশিহিকারি ধানের জাতটি তুষারপাতের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। এছাড়া অন্যান্য প্রতিকূল পরিবেশে খুব দ্রুত বেড়ে উঠতে পারে। সাধারণত জাপানের শরৎকালে এই ধান কাটা হয়। তারপর প্রচুর পরিমাণে ধানের খড় বা ওয়ারা থেকে যায়। তোমাদের জানিয়ে রাখা দরকার, খড়কে জাপানিরা ‘ওয়ারা’ বলে থাকে।

ধান কাটার পর সাধারণত এই খড় গবাদি পশুদের খাওয়ানো হতো। ঠিক যেভাবে আমাদের দেশে খাওয়ানো হয়। কিন্তু, ২০০৮ সাল থেকে নিগাতায় একটি আর্ট ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হয়। তাও কী জানো! এই ওয়ারা বা খড় নিয়ে! 

এখন নিশ্চয়ই তোমাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, খড় দিয়ে কীভাবে আর্ট ফেস্টিভ্যাল হবে? এখানেই কিন্তু জাপানিরা অন্যদের চেয়ে আলাদা। কিংবা অন্যদের দেখার চোখের সঙ্গে শিল্পীর চোখের পার্থক্য এখানে। আমরা একটি বিষয়কে যেভাবে ভাবি শিল্পীরা সেভাবে ভাবেন না, তারা একটু ভিন্নভাবে ভাবেন।

যাইহোক, ওরা সেই খড় দিয়ে বিভিন্ন হাতি, ঘোড়া, ভালুক, মহিষ- কত কিছু বানালো। তারপর সেগুলো মানুষকে দেখাতে একটি ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করল, নাম দিলো ‘ওয়ারা আর্ট ফেস্টিভ্যাল’। সেই ফেস্টিভ্যাল এখন উৎসবে পরিণত হয়েছে। নিগাতা শহর ট্যুরিজমের সঙ্গে মুসাশিনো আর্ট ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে এ উৎসবের আয়োজন করে।