ঢাকা মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের নোবেল দেওয়া উচিত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি তোমাদের মতই একজন ছিলাম। ওই জায়গা থেকে আজ আমি এখানে এসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হতে পারি। তোমরাও একদিন এই দেশের প্রধানমন্ত্রী হবে।”

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2024, 01:19 PM
Updated : 28 Feb 2024, 01:19 PM

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা মানুষকে যে সেবা দেয়, তাতে তাদের নোবেল পুরস্কার দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

বুধবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ডা. শহীদ মিলন অডিটোরিয়ামে নর্থ আমেরিকা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের যৌথ আয়োজনে ‘ডোনেশন অব মডার্ন হেলথকেয়ার ইকুইপমেন্ট অ্যান্ড হ্যান্ডস অন ট্রেইনিং’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ‘অনেক কষ্ট করে’ দায়িত্ব পালন করেন। বিষয়টি তিনি জানেন। বিষয়টি নিয়ে একবার তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও কথা বলেছেন।

“মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম, আপা ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা যেভাবে কাজ করে, রোগীদের সেবা দেয়, তাদের তো নোবেল পুরস্কার দেওয়া উচিত। কারণ আমি জানি, তারা কত কষ্ট করেন। সব সময় শুধু বদনাম করলে হবে না। এখানে ইমার্জেন্সিতে একজন-দুজন মেডিকেল অফিসার থাকেন। হঠাৎ করে এত রোগী আসে, সেই চাপ সামলানো যে কত কঠিন, আমি রন্ধ্রে রন্ধ্রে সব চিনি।”

মেডিকেল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “চিকিৎসা পেশা একটা আশীর্বাদ, এটা সবাই পায় না। এজন্য মানুষের সেবা করতে হবে।

“তোমার মানুষের সেবা দিয়ে যাও। তোমরা একদিন অনেক বড় হবা। আমি তোমাদের মতই একজন ছিলাম। ওই জায়গা থেকে আজ আমি এখানে এসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হতে পারি। তোমরাও একদিন এই দেশের প্রধানমন্ত্রী হবে। তোমরা ওইভাবে কাজ করো, ওইভাবে সেবা দাও।”

১৯৭৩ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করা সামন্ত লাল সেন কর্মজীবন শুরু করেন হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে। পরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৩ সালে তার নেতৃত্বে ঢাকা মেডিকেলে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা হয় হয়।

২০১৯ সালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট চালু হলে প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পান সামন্ত লাল সেন। আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের পর তাকে টেকনোক্র্যাট হিসেবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দেশের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসকদের ওপর হামলা এবং চিকিৎসা নিতে গিয়ে রোগীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়েও অনুষ্ঠানে কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “চিকিৎসকদের সুরক্ষা দেখার প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে আমার। আবার এরসঙ্গে রোগীদের সুরক্ষাও আমাকে দেখতে হবে। দুয়েকটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা সারা বাংলাদেশের চিকিৎসকদের উদাহরণ হতে পারে না। বাংলাদেশের সব চিকিৎসক খারাপ না। বাংলাদেশের চিকিৎসকরা অনেক অনেক সাফল্য অর্জন করেছেন।”

নর্থ আমেরিকা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ব্যক্তি পর্যায়ে চিকিৎসা সামগ্রী হস্তান্তর করা হয় এ অনুষ্ঠানে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, হাসপাতালের পরিচালকসহ চিকিৎসক, শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।