ডেঙ্গুতে এ বছর ৪০ মৃত্যু

এইডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছর এ পর্যন্ত ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে, এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছেন এক হাজারের বেশি রোগী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2021, 05:51 PM
Updated : 27 August 2021, 05:51 PM

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এবার জুলাই মাস থেকে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ, যাতে দুই মাসের কম সময়েই ৪০ জনের মৃত্যু দেখল দেশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশে এ বছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৯ হাজার ৩০৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যাদের ৮ হাজার ২৩০ জন সুস্থ হয়ে ফিরে গেছেন।

২০০০ সাল থেকে দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণের তথ্য জানাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে বছর সারাদেশে পাঁচ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন, যাদের ৯৩ জনের মৃত্যু হয়।

এরপর ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক রূপ নিলে এক লাখের বেশি মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি হয়।

সে বছর বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আসা ২৬৬টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ১৪৮ জনের ডেঙ্গুতে মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছিল আইইডিসিআর। ডেঙ্গুতে এর চেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু আর কোনো বছর হয়নি।

তার আগে ২০০২ সালে ছয় হাজার ২৩২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন, মারা যান ৫৮ জন। আর ২০০১ সালে দুই হাজার ৪৩০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

সে হিসাবে চলতি বছরের মৃত্যুর সংখ্যা গত ২২ বছরের মধ্যে পঞ্চম সর্বোচ্চ।

সর্বশেষ শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৪ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

এ নিয়ে অগাস্ট মাসের প্রথম ২৬ দিনে ৬ হাজার ৬৪৬ জন রোগী হাসপাতালে এসেছেন ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিতে, যাদের মধ্যে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে জুলাই মাসে মৃত্যু হয় ১২ জনের।

বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি রয়েছেন ১ হাজার ৩২ জন ডেঙ্গু রোগী, যাদের ৯০৫ জনই ঢাকা মহানগরীর। আর অন্যান্য বিভাগে ভর্তি আছেন ১২৭ জন।

২০০০, ২০০১ ও ২০০২ সালে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ ভোগান্তি তৈরি করলেও ২০০৩ সালে সংক্রমণ অনেকটা কমে আসে।

সে বছর ডেঙ্গু রোগী কমে দাঁড়ায় ৪৮৬ জনে, মারা গিয়েছিলেন ১০ জন। আর ২০০৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আট বছরে কখনোই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দুই হাজার ছাড়ায়নি।

এর মধ্যে ২০০৭ সালে ৪৬৬ জন, ২০০৯ সালে ৪৭৪ জন, ২০১০ সালে ৪০৯ জন, ২০১২ সালে ৬৭১ জন এবং ২০১৪ সালে ৩৭৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। সরকারি হিসাবে ২০১২ সালে ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু হয়।

২০১৫ সাল থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ আবার বাড়তে শুরু করে। ২০১৭ সালে কমে গেলেও ২০১৮ সালে আবার তা বেড়ে যায়।

২০১৫ সালে ৬ জন, ২০১৬ সালে ১৪ জন, ২০১৭ সালে ৮ জন এবং ২০১৮ সালে ২৬ জন সরকারি হিসাবে মারা যান মশাবাহিত এ রোগে।

২০১৯ সালে ডেঙ্গু ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলেও করোনাভাইরাস মহামারীর প্রথম বছর ২০২০ সালে ডেঙ্গু থেকে অনেকটা স্বস্তিতে ছিল দেশ।

সে বছর হাসপাতালগুলো ১ হাজার ৪০৫ জন ডেঙ্গু রোগী পেয়েছিল। ১২টি মৃত্যুর ৯টি পর্যালোচনা করে গত বছর ডেঙ্গুতে ৭ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছিল আইইডিসিআর।