১০ দিন আগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বিশ্ব সংস্থাটি আবার করোনাভাইরাসের রোগীদের এই ওষুধটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ আবার বন্ধ রাখতে বলেছে।
বিভিন্ন দেশে ওষুধটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগে কোনো সুফল পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এই সিদ্ধান্ত দেয় বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
“হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বন্ধ করা হয়েছে,” এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন সংস্থার বিশেষজ্ঞ আনা মারিয়া হেনাও-রেসট্রেপো।
করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগীর চিকিৎসায় কোনো ওষুধ না থাকার কারণে বিদ্যমান নানা ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছেন চিকিৎসকরা, যার ফলে বিভিন্ন দেশে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয় ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের।
তবে এই ওষুধ সেবনে অনেকের হৃদস্পন্দনে গুরুতর অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফডিএ সতর্কবার্তা দিয়েছিল।
এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাও ক্লোরোকুইন ও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে সতর্ক করে বিবৃতি দিয়েছিল।
কিন্তু এরপরও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে তিনি নিয়মিতই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সেবন করছেন।
এর মধ্যেই গত ২৫ মে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ট্যাবলেটটি কোভিড-১৯ রোগীদের সেবন করানো স্থগিত রাখতে বলে।
দৃশ্যত খ্যাতনামা দুই মেডিকেল জার্নাল ল্যানচেট ও নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
তবে ওই প্রতিবেদন যে সংস্থার ডাটার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল, সেই সার্জিস্পেয়ারকে নিয়ে দেখা দেয় বিতর্ক।
যুক্তরাজ্যের দৈনিক গার্ডিয়ানের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, যুক্তরাষ্টের এই সংস্থার এই ডাটার কোনো নির্ভরযোগ্যতাই নেই। আর সংস্থাটির কর্মকাণ্ডও প্রশ্নবিদ্ধ।
এরপর গত ৬ মে সিদ্ধান্ত বদল করে ডব্লিউএইচও জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের পরীক্ষামূলক ব্যবহারে বাধা নেই।
সংস্থার মহা পরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেন, ডব্লিউএইচওর গবেষক দল যাচাই করে দেখেছে যে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সেবনে কোভিড-১৯ রোগীদের ঝুঁকিতে পড়ার কোনো প্রমাণ নেই।
কিন্তু তার ১০ দিন পর আবার উল্টে গেলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, যারা কোভিড-১৯ মোকাবেলার কাজ নিয়ে রয়েছে সমালোচনায়।