‘দুলহে কা সেহরা' গান বাজিয়ে শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
Published : 16 Jan 2024, 04:18 PM
সূর্যকে সাক্ষী রেখে পাঞ্জাবি রীতি মেনে একে অন্যের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন হিন্দি সিনেমার অভিনেত্রী পরিণীতি চোপড়া এবং ভারতের তরুণ রাজনীতিক রাঘব চাড্ডা।
রাজস্থানের উদয়পুরের তাজ লীলা প্যালেসে কড়া নিরাপত্তায় রোববার চারহাত এক হয় পরিণীতি ও রাঘবের। গোধূলি বেলায় 'ধড়কন' সিনেমার গান ‘দুলহে কা সেহরা' বাজিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
বিয়ের ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে পরিণীতি বলেন, " শুরুটা লন্ডনে, এক সকালে প্রাতঃরাশের টেবিলে প্রথম আড্ডা থেকে। যদিও আমার হৃদয় আমাদের দুজনের পথচলার খবর আমাকে দিয়েছিল আরও পরে। সম্পর্ক এবং বাগদানের পর থেকে এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে মিস্টার এবং মিসেস হতে পেরে ধন্য। একে অপরকে ছাড়া থাকা সম্ভব হচ্ছিল না। আমাদের চিরকালটার শুরু হল এখন থেকে।"
বিনোদন ও রাজনীতি-দুই জগতের এ দুটি মানুষের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু আগের দিন শনিবার ‘ওয়েলকাম লাঞ্চ’ দিয়ে। ওইদিন হয় পরিণীতির ‘চূড়া সেরিমনি’, এটি পাঞ্জাবী রীতির একটি অনুষ্ঠান। এছাড়া শনিবার রাতে সংগীত অনুষ্ঠান মাতিয়ে দেন পাঞ্জাবি গায়ক নভরাজ হংস। সংগীত অনুষ্ঠানের থিম ছিল নব্বই দশকের সুপারহিট গান।
রোববার রাঘবের 'সেহরাবন্দি’র মাধ্যমে শুরু হবে বিয়ের অনুষ্ঠান। এরপর ঘোড়ায় চড়ে নয়, তাজ লেক প্যালেস থেকে নৌকায় চড়ে তাজ লীলা প্যালেসে কনে আনতে যান রাঘব। বরযাত্রীদের নৌকাবিহারের কিছু ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।
বরযাত্রীরা লীলা প্যালেসে পৌঁছুলে কনেপক্ষ তাদের স্বাগত জানায় পাঞ্জাবি আর রাজস্থানি সংস্কৃতির নানা আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। বিয়ের পরে সন্ধ্যায় তাজ লীলা প্যালেসে হয় নবদম্পতির রিসেপশন পার্টি। ওই পার্টি শেষে আর পরিণীতির বিদায়ক্ষণে লীলা প্যালেসের বাজানরো হয় ‘অ্যায় কবিরা’ গানটি।
পাত্র রাজনীতিক হওয়ায় হোমড়া চোমড়া অনেকে এসেছিলেন বিয়েতে। সে কারণে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয় উদয়পুর। বিয়েতে অতিথিদের বলা হয়েছিল ছবি তোলা বা ভিডিও করা যাবে না। নিমন্ত্রিতদের মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় লাগিয়ে দেওয়া গয় নীল রঙের টেপ। এই টেপের বিশেষত্ব হল, কেউ টেপটি খোলার চেষ্টা করলে একটি তীরচিহ্ন ভেসে উঠবে। আর নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে সঙ্গে সঙ্গে সংকেত চলে যাবে।
তবে এতকিছু করেও লাভ হয়নি। নব্বই দশকের আলোচিত তারকা 'ম্যায়নে পেয়ার কিয়া' সিনেমার নায়িকা ভাগ্যশ্রী বিয়ের নানা আয়োজনের ছবি তুলেছেন, ভিডিও করেছেন এবং সেসব তার ইনস্টাগ্রামে পোস্টও করেছেন।
কেবল ভাগশ্রী নয়, আরও অনেকেই বিয়ের ভিডিও করে সেটি ফাঁস করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর সেসব ভিডিওতে দেখা গেছে, পুরো আয়োজনে ভারতীয় সংস্কৃতির ছাপ। সংগীত অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে ছাদনাতলা-সব জায়গায় ফুলের সমারোহ আর আলোর রোশনাই।
কেবল বিয়ের অনুষ্ঠানস্থল তাজ লীলা প্যালেসই নয়, পুরো উদপুর শহরে ছিল বিয়ের আমেজ। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় হোর্ডিংয়ে রাঘব আর পরিণীতির ছবি দিয়ে লেখ হয় ‘রাঘব ওয়েডস পরিণীতি’।
বিয়েতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান, সস্ত্রীক ক্রিকেটার হরভজন সিং, সাবেক টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা, ফ্যাশন ডিজাইনার মনীশ মালহোত্রাসহ আরও অনেক তারকা উপস্থিত ছিলেন।
পরিণীতির চাচাতো বোন বলিউড-হলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিয়েতে আসতে পারেননি। তবে প্রিয়াঙ্কা উপস্থিত ছিলেন পরিণীতির বাগদানে।
পরিণীতি ও রাঘব প্রেম করেছেন 'লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসে' একসঙ্গে পড়াশোনা করার সময়। এরপর গত মে মাসে দুজনের বাগদান হয়।
পরিণীতিকে আগামীতে দেখা যাবে অক্ষয় কুমারের সঙ্গে ‘মিশন রানীগঞ্জ’ সিনেমায়। এ ছাড়া দলজিত দোসাঞ্জের সঙ্গে ‘চমকিলা’ সিনেমাতেও নায়িকা হয়ে আসছেন তিনি।
আর আম আদমি পার্টির নেতা রাঘব চাড্ডা মাত্র ৩৩ বছর বয়সে ভারতের পাঞ্জাব থেকে আসা সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য হিসেবে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন। রাঘব এর আগে দিল্লির রাজেন্দ্র নগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন। সংবাদসূত্র এনডিটিভি, পিংকভিলা
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)