ব্যস্ততা আমায় ক্লান্ত করে না: আসাদুজ্জামান নূর

জীবনের ৭৬ বছর পেরিয়ে এলেও রাজনীতির সঙ্গে অভিনয়-আবৃত্তির মঞ্চে সমান সক্রিয়।

পাভেল রহমানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2022, 05:07 PM
Updated : 31 Oct 2022, 05:07 PM

ছিলেন শুধু অভিনয়শিল্পী-আবৃত্তিকার; সেই জনপ্রিয়তায় ভর করে নামলেন রাজনীতিতে, সংসদ সদস্যের পর মন্ত্রীও হয়েছেন। তিনি আসাদুজ্জামান নূর, পার করলেন জীবনের ৭৬ বছর।

জন্মদিনে তেমন কোনো আয়োজন করা না হলেও অগুনতি মানুষের শুভেচ্ছা আপ্লুত করেছে তাকে; তাদের ভালোবাসা আর শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে জন্মদিন উদযাপন করলেন তিনি।

১৯৪৬ সালে ৩১ অক্টোবর নীলফামারী জেলায় জন্ম আসাদুজ্জামান নূরের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় বাম রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। পরে পুরো মনোযোগই দেন নাট্য আন্দোলনে।

জন্মদিন কেমন কাটলো জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান নূর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি তো সেভাবে জন্মদিনের অনুষ্ঠান আয়োজন করি না। গত বছর ৭৫তম জন্মদিন ছিল বলে আমার সংস্কৃতিকর্মী বন্ধুরা একটি আয়োজন করেছিল।

“এমনিতে আমি জন্মদিনে কোনো আয়োজন করি না। বাড়ির ভেতরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘরোয়া কিছু হয়। এদিন একটু ভালো রান্না-বান্না হয়। আর অসংখ্য মানুষ শুভেচ্ছা জানাই। এই বিষয়টা ভালোয় লাগে।”
পেশায় চিকিৎসক স্ত্রী শাহীন আখতার আর দুই সন্তানকে নিয়ে আসাদুজ্জামান নূরের সংসার।

এখন মন্ত্রী নেই, তবে সংসদ সদস্য হিসেবে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে যেতে হয়; তার সঙ্গে অভিনয় ও আবৃত্তির মঞ্চেও সমান সক্রিয়।

ক্লান্তিহীন এই ছুটে চলার পেছনে রহস্য কী- জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, “আনন্দ নিয়ে কাজ করি। তাই ব্যস্ততা আমায় ক্লান্ত করে না।

“জীবনে তো ভালোয় যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ভালো আছি। কাজ করে যাচ্ছি। রাজনীতিতে তো নানা রকম ব্যস্ততা থাকে। এলাকায় যাই, মানুষের সাথে মিশি। ঢাকায় নানা রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেই। আবৃত্তি করি। সব কিছু নিয়েই ব্যস্ত সময় কেটে যায়।”

আসাদুজ্জামান নূর নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য। বর্তমানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য। চার বারের সংসদ সদস্য নূর সংস্কৃতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন শেখ হাসিনার আগের সরকারে।

তিনি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি।

জীবনের দীর্ঘ পথ পেরিয়ে আসার অভিজ্ঞতা থেকে নবীনদের উদ্দেশে কী পরামর্শ দেবেন- জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, “পরামর্শ দেওয়ার যোগ্যতা আমার নাই। আমি জীবনে এমন কিছুই করিনি যে পরামর্শ দিতে পারি। তবে আমার ছেলে-মেয়েদের যে কথাটা বলি, সেটাই সবাইকে বলি- জীবনে যা-ই করতে চাও হৃদয় দিয়ে কর, পরিশ্রম কর।”

মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান নূর ২০১৮ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন।
১৯৭২ সাল থেকে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত থেকে বাংলাদেশের নাট্য আন্দোলনে সক্রিয় আসাদুজ্জামান নূর। এ পর্যন্ত দলের ১৫টির বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি; নির্দেশনা দিয়েছেন ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’ নাটকটির।

তার অভিনীত টিভিনাটক ‘কোথাও কেউ নেই’ এর ‘বাকের ভাই’, ‘এই সব দিনরাত্রি’র ‘শফিক’, ‘অয়োময়’র ‘ছোট মীর্জা’, ‘সবুজ ছায়া’-র ‘ডাক্তার’ চরিত্রগুলো দারুণ দর্শকপ্রিয় হয়।
‘আগুনের পরশমনি’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘দহন’ চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন তিনি।