পাইরেসি নিয়ে মুখ খুললেন ‘সুড়ঙ্গ’ নির্মাতা, দিলেন হুঁশিয়ারি

বাংলাদেশ থেকেই পাইরেসি হয়েছে ‘সুড়ঙ্গ’, দাবি নির্মাতা রাফীর

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 July 2023, 01:01 PM
Updated : 26 July 2023, 01:01 PM

ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘সুড়ঙ্গ’ যখন বাংলাদেশের পর বিশ্ববাজারেও সাফল্য ছড়াচ্ছে, তখনই এলো দুঃসংবাদ। পাইরেসির কবলে পড়েছে আফরান নিশো ও তমা মির্জা অভিনীত সিনেমাটি। ইউটিউব, ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সিনেমাটির পাইরেটেড কপি ছড়িয়ে গেছে।

ঈদে বাংলাদেশে ‘সুড়ঙ্গ’ মুক্তি পেয়েছিল মোট ২৮টি প্রেক্ষাগৃহে। গেল শুক্রবার থেকে দেশের ৫০টি হলে চলছে সিনেমাটি। এছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও শুক্রবার থেকে ৩১টি সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি।

অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্রেও মুক্তির প্রস্তুতি চলছে। আগামী সপ্তাহ থেকে বিশ্বজুড়ে ২০৫টি প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি প্রদর্শনের প্রস্তুতি চলছিল। এর মধ্যেই অনলাইনে ছড়িয়ে গেছে সিনেমাটির কপি।

কিভাবে পাইরেসি হল ‘সুড়ঙ্গ’- এই প্রশ্ন এখন সবার মনে। কেউ কেউ মনে করছেন পশ্চিমবঙ্গের কোনো সিনেমা হল থেকে রেকর্ড করে সিনেমাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়া হয়েছে।

তবে ‘সুড়ঙ্গ’ নির্মাতা রায়হান রাফী গ্লিটজকে বলেছেন, “ভারত থেকে নয়, বাংলাদেশের একটি সিনেমা হল থেকেই পাইরেসি হয়েছে। আমরা সেটি নিয়ে কাজ করছি। অনেক তথ্য বের করেছি। শিগগরিই পুরো বিষয়টি সবাইকে জানাব।”

সিনেমাটির পাইরেটেড কপি কারো কাছে পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন জানিয়ে রায়হান রাফী বলেন, “সিনেমাটির কোনো পাইরেটেড কপি কারো মোবাইল, কম্পিউটার বা অন্য কোনো ডিভাইসে পাওয়া গেলে, আমরা তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব। সবাইকে অনুরোধ করব, আপনারা কেউ পাইরেটেড কপি থেকে সিনেমাটি দেখবেন না, সিনেমা হলে গিয়েই ‘সুড়ঙ্গ’ দেখুন।”

পাইরেসির সঙ্গে যুক্ত কাউকে খুঁজে বের করা গেছে এমন প্রশ্নে রায়হান রাফী বলেন, “আমরা অনেকটাই বের করেছি। এখনই এই বিষয়ে কিছু বলব না, সবকিছু নিয়ে একসঙ্গে বিস্তারিত জানাব।”

উল্টো প্রশ্ন করে রাফী বলেন, “ঈদে মুক্তি পাওয়া আরও সিনেমা তো জনপ্রিয় হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে তো আরও জনপ্রিয় সিনেমা আছে। সেগুলো পাইরেসি হলো না, কেবল ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমাটিই পাইরেসি হলো, এতে কী বোঝা যায়?”

পরিকল্পিতভাবেই এটি করা হয়েছে জানিয়ে রাফী বলেন, “খুবই পরিকল্পিত কাজ এটি। বাংলাদেশের সিনেমা থেকে অনেক দিন ধরেই পাইরেসি উঠে গেছে। কিন্তু কেন হঠাৎ ‘সুড়ঙ্গ’ পাইরেসি হলো, কারা এর সাথে যুক্ত, সবই আমরা বের করে সবাইকে বিস্তারিত জানাব। আমাদের অনুসন্ধান চলছে। আইনিভাবেও আমাদের কাজ চলছে।”

‘সুড়ঙ্গ’ বাংলাদেশের একটি সিনেমা হল থেকে পরিকল্পিতভাবে কপি করা হয়েছে বলে মনে করছেন সিনেমাটির সম্পাদক সিমিত রায় অন্তর।

মঙ্গলবার ফেইসবুক পোস্টে সিমিত রায় অন্তর লেখেন, “‘সুড়ঙ্গ’ এর পাইরেসি কপি পর্যবেক্ষণ করে যা বুঝলাম, এটা কোনো রেগুলার শো চলাকালীন সময়ে রেকর্ড করা হয়নি। কারণ ভিডিওতে দর্শকদের কোনো রিয়েকশন সাউন্ড নাই। দর্শকদের হাসির শব্দ নেই, কোনো উচ্চবাচ্য। তার মানে, এটা দর্শকশূন্য হলে রেকর্ড করা হয়েছে। ক্যামেরাকে ট্রাইপডে রেখে ভিডিওটি করা হয়েছে। ক্যামেরার কোনো ধরনের নড়াচড়া দেখা যায়নি। অতএব, এটার সাথে সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ জড়িত। শূন্য হলে ট্রাইপডে ক্যামেরা সেট করে আড়াই ঘণ্টার সিনেমা রেকর্ড করা তো সম্ভবপর না, যদি না সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ জড়িত না থাকে।”

সিনেমাটি বাংলাদেশ থেকেই পাইরেসি হয়েছে উল্লেখ করে সিমিত রায় অন্তরের ভাষ্য, “ভারতের ভিডিও এবং বাংলাদেশের ভিডিওতে বেশকিছু পার্থক্য আছে, যা শুধুমাত্র আমরাই জানি। এর মধ্যে একটার কথা বলি, তা হলো- পেপসির টাইটেল কার্ড, যা ভারতের সিনেমাতে ছিল না।”

আরেকটি পোস্টে পাইরেটেড কপি না দেখতে দর্শকদের অনুরোধ জানিয়ে সিমিত লেখেন, “পৃথিবীতে মেবি কোনদিনও পাইরেসি রোধ করা সম্ভব না। হলিউড, বলিউড কেউই পারেনি। এইচবিও, এমাজন, নেটফ্লিক্স পারেনি। তাদের তো কনটেন্ট রিলিজের সাথে সাথেই পাইরেসি হয়ে অরিজিনাল কপি চলে আসে টরেন্টে। তাও মাল্টি ল্যাঙ্গুয়েজ, সাবটাইটেলসহ।

“এর একটাই সমাধান- দর্শক যদি পাইরেসি বর্জন করে, তাহলে এই পাইরেসি কোনো ক্ষতিই করতে পারবে না সিনেমার। পাঠানের পাইরেসি কপি এসেছিল নেটে, ওপেনহাইমারের কপি এসেছে, তাতে কোনো ক্ষতি কি হয়েছে? আমাদের সবাইকে যার যার জায়গা থেকে সৎ হতে হবে। তাহলেই অসৎরা চুপসে যাবে। আমাদের বিবেক জাগ্রত হোক, এই প্রার্থনা করি।”