মুহম্মদ জাফর ইকবালের জনপ্রিয় কিশোর উপন্যাস ‘রাতুলের দিন রাতুলের রাত’ অবলম্বনে নির্মিত শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ মুক্তি পাচ্ছে ২০ জানুয়ারি।
সুন্দরবনে নৌবিহারে গিয়ে একদল শিশুর ডাকাতদের কবলে পড়া এবং উদ্ধার পাওয়ার গল্প অ্যাডভেঞ্জার অব সুন্দরবন। সরকারি অনুদানে আবু রায়হান জুয়েলের নির্মাণে এ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে দেখা যাবে সিয়াম আহমেদ ও পরীমনিকে।
মঙ্গলবার সিনেমার ট্রেইলার ও পোস্টার প্রকাশ উপলক্ষে ঢাকার মহিলা সমিতি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। জাফর ইকবাল ছাড়াও শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম, চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম, চিলড্রেন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের আয়োজক মুনিরা মোর্শেদ মুন্নিসহ সিনেমার শিল্পী ও কলাকুশলীরা উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
নির্মাতা আবু রায়হান জুয়েল বলেন, “অ্যাডভেঞ্চার অফ সুন্দরবন শিশুদের সুস্থ বিনোদনের জন্য শিশুতোষ চলচ্চিত্র। সিনেমাটি সব বয়সীরাই দেখতে পারেন। প্রত্যাশা করি, সবাই সিনেমাটি দেখতে প্রেক্ষাগৃহে আসবেন।”
তিনি জানান, শুটিংয়ের মাঝপথে মহামারী শুরু হওয়ায় বিলম্বিত হয়েছে সিনেমার কাজ। তারপরও সিনেমায় অভিনয় করা শিশুদের বাবা-মায়েরা ওই সময়টায় অনেকভাবে সাহায্য করেছেন। বাচ্চারাও অনেক উৎসাহ দিয়েছে।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল এ সিনেমার জন্যই প্রথমবার গান লিখেছেন। তিনি বলেন, “আমরা লিখি। কিন্তু সিনেমায় সেটা দেখানো অনেক কঠিন। গানটা যখন লিখি, তখন জানতাম না এত ভালো হবে। গানটার দৃশ্য ধারণ হওয়ার পর আমাকে দেখাতে নিয়ে এসেছিলেন পরিচালক। আমার নাতি দেখে খুব পছন্দ করেছে। তখন বুঝলাম, ভালোই হয়েছে গানটা।”
চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম বলেন, “আমি খুব এক্সাইটেড। কারণ বাচ্চাদের আরেকটা সিনেমা আসবে। শিশুতোষ সিনেমা তো তেমন হয় না। আশা করছি সেই সিনেমাটি অনেক ভালো করবে।”
২৬ বছর আগে জাফর ইকবালের গল্প থেকেই মোরশেদুল ইসলাম বানিয়েছিলেন ‘দিপু নম্বর টু’। সে কথা মনে করে তিনি বলেন, “সিনেমাটা নাকি এখনও অনেকের ভালো লাগে। সেই ভালোলাগা ছাপিয়ে যাবে অ্যাডভেঞ্চার অফ সুন্দরবন, সেই আশা করছি।”
অ্যাডভেঞ্চার অফ সুন্দরবনের প্রদর্শনী দিয়েই আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি চিলড্রেন ফিল্ম ফেস্টিভাল শুরু করার ঘোষণা দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।
মুনিরা মোর্শেদ মুন্নি বলেন, “এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী, দিপু নম্বর টু, আমার বন্ধু রাশেদ ছাড়া তেমন কোনো সিনেমা দেশে শিশুদের জন্য হয়নি। অভিভাবকদের বলব, আপনারা অনেক সময় দেখি বাচ্চাদের নিয়ে বড়দের সিনেমা দেখছেন। অথচ পাশের প্রেক্ষাগৃহেই ছোটদের সিনেমা চলছে, সেটা দেখছেন না। সেই সিনেমা দেখার অনুরোধ করব। কারণ বাচ্চারা আপনাদের ওপর নির্ভরশীল।”
সিনেমায় রাতুল চরিত্রে অভিনয় করছেন সিয়াম। তিনি বলেন, “করোনা থেকে অনেকেই যেমন ফিরে এসেছে, তেমনি সিনেমাটাও ফিরেছে। রাতুল চরিত্রটা আমার অনেক আগে থেকে জানা। সেই চরিত্রটা করতে পারব, এটা কোনোদিন ভাবিনি। সেটাই হল এবং এটা স্বপ্ন পূরণের মত। আমি সিয়াম আহমেদ হয়ে গিয়েছিলাম, শিশুরা আমাকে রাতুল ভাইয়া করে ঢাকায় পাঠিয়েছ।”
পরীমনি অভিনয় করেছেন তিশা চরিত্রে। তিনি বলেন, “আমার ছেলেকে নিয়ে এসেছি অনুষ্ঠানে। সিনেমাটাও দেখব। ও যখন বড় হবে, তখন দেখাব যে তোমার জন্য একটি উপহার এই সিনেমা। করোনার সময় মনে হয়েছিল, সিনেমাটা শেষ পর্যন্ত আসবে কিনা। এখন সিনেমাটা মুক্তি পাচ্ছে, সেটাই বড় পাওয়া।”
শট বাই শটের প্রযোজনায় অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবনে আরও অভিনয় করেছেন শহীদুল আলম সাচ্চু, আজাদ আবুল কালাম, কচি খন্দকার, আবু হুরায়রা তানভীর ও আশীষ খন্দকার।