বছরে ১০-১২টি হিন্দি ছবিতে আপত্তি নেই: মন্ত্রী

এক্ষেত্রে শিল্পী সমিতি, প্রযোজক সমিতি, পরিবেশক সমিতির মধ্যে ঐকমত্যের ওপর জোর দিচ্ছেন হাছান মাহমুদ। 

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Dec 2022, 05:11 PM
Updated : 2 Dec 2022, 05:11 PM

দেশে বছরে ১০-১২টি হিন্দি সিনেমা আমদানি হলে তাতে সরকারের দিক থেকে কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। 

শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে স্টার সিনপ্লেক্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, "মোশাররফ ভাই (আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন) অনুরোধ করেছেন, হিন্দি সিনেমা যেন দেশে আনা যায়। সরকারের পক্ষ থেকে আপত্তি নেই। শিল্পীরা যদি একমত হয়, আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে আপত্তি নেই।”

প্রেক্ষাগৃহগুলো আধুনিক করার মাধ্যমে দেশের চলচ্চিত্রের হারানো অতীত ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি হল মালিকদের স্বল্প সুদে ঋণ দিতে এক হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। যার আওতায় সিনেমা হল নির্মাণে সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা ঋণ পাচ্ছেন হল মালিকরা।

ইতোমধ্যে নতুন সিনেমা হল নির্মাণ ও হল সংস্কারের জন্য অর্ধশতাধিক হল মালিক আবেদনও করেছেন। কিন্তু সিনেমা হলের ব্যবসা না হলে ঋণের টাকা ফেরত দেওয়া কঠিন। আর বিগত বছরগুলোতে দেশীয় চলচ্চিত্র যে দশায় পৌঁছেছে, তাতে হল মালিকরা ঋণ নেওয়ার সাহস পাচ্ছেন না বলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির ভাষ্য।

এই যুক্তি দেখিয়ে সমিতির নেতারা গত মে মাসে দেশের হলে ভারতীয় সিনেমা দেখানোর অনুমতি চেয়েছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর কাছে।

কিন্তু বাংলাদেশের সিনেমা হলে ভারতীয় চলচ্চিত্র দেখানো নিয়ে শিল্পী ও কলাকুশলীদের আপত্তি আছে, কারণে তাতে করে দেশীয় চলচ্চিত্র শিল্প হুমকির মুখে পড়বে বলে তাদের শঙ্কা।

এই মতভিন্নতার কথা মনে করিয়ে দিয়ে হাছান মাহমুদ চট্টগ্রামের অনুষ্ঠানে বলেন, “বছরে ১০-১২টা হিন্দি ছবি আসতে পারে। এখানে শিল্পীরা আছেন, পরীমনি-রাজ, তাদের সহশিল্পীরা আছেন। শিল্পী সমিতি, প্রযোজক সমিতি, পরিবেশক সমিতি যদি একমত হয়, তবে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।" 

এর আগে অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমাদের শৈশবে চট্টগ্রামে সিনেমা হল ছিল। তখন আমার অভ্যেস ছিল সিনেমা দেখার।

“বাংলাদেশের সিনেমাকে এগিয়ে নিতে হলে আন্তর্জাতিক সিনেমাগুলো এখানে আসা উচিত। হাওয়া ছবিটা আমি দেশের বাইরে দেখেছি। হাওয়া ওখানে গেলে ওখানকার ছবি কেন এখানে আসতে পারবে না। হিন্দি ছবিও আসতে পারে।" 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের স্বাধীকার আদায়ের আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামে অনেক সিনেমা ভূমিকা রেখেছে। মানুষকে নির্মল আনন্দ দেওয়ার পাশাপাশি দেশ গঠন করার ক্ষেত্রেও সিনেমা ভূমিকা রাখে।

“দেশ স্বাধীন হবার পর আমাদের অনেক সিনেমা দেশ গড়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। ওরা ১১ জন, আবার তোরা মানুষ হ, এই যে সিনেমাগুলো আমাদের দেশ গঠন করার কাজে ভূমিকা রেখেছে… সিনেমা শিল্প মানুষকে আনন্দ দেওয়া, নতুন এবং তরুণ প্রজন্মকে বিপথগামী হওয়া থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।"

চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার এলাকায় বালি আর্কেড শপিং কমপ্লেক্সে তিনটি স্ক্রিন নিয়ে যাত্রা করল স্টার সিনেপ্লেক্স। শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও বালি আর্কেডের পরিচালক সোলায়মান আলম শেঠ, প্রধান নির্বাহী আফতাব আলম শেঠ অতিথি হয়ে এসেছিলেন অনুষ্ঠানে।

স্টার সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাহবুব রহমান রুহেল অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। চলচ্চিত্র তারকাদের মধ্যে শরিফুল রাজ ও পরিমনীও এসেছিলেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।