টঙ্গীর ব্যাংক মাঠ বস্তিতে হয়েছে ‘আদিম’ এর শুটিং। সিনেমার কাহিনীও বস্তিকে কেন্দ্র করেই। এর চরিত্ররাও বস্তিতেই বাস করেন।
Published : 02 May 2024, 08:34 PM
মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে ‘সিলভার সেন্ট জর্জ অ্যাওয়ার্ড’ জিতে নেওয়া সিনেমা ‘আদিম’ এবার দেখা যাবে ওটিটিতে।
ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকিতে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে ‘আদিম’ দেখতে পাবে দর্শক।
গণঅর্থায়নে নির্মিত যুবরাজ শামীমের এই সিনেমাটি দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় গত বছরের ২৬ মে। এরপর দেশের বিভিন্ন জেলায় আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ প্রদর্শনী।
যুবরাজ শামীম বলেন, "নির্মাণ অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে এসে একটা ব্যাপার বুঝেছি। সেটা হচ্ছে একজন স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা কষ্ট সহ্য করে হয়ত একটি সিনেমা নির্মাণ করে ফেলতে পারেন। কিন্তু তার জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় প্রদর্শন ব্যবস্থা।
"সেই জায়গায় একজন স্বাধীন চলচ্চিত্রকর্মী হিসেবে চরকিকে আমার কাছে বেশ ভালো একটি প্ল্যাটফর্ম মনে হয়। সেই সাথে সিনেমাটা বেশি সংখ্যক দর্শকের কাছে পৌঁছানোর পাশাপাশি নির্মাণ ব্যয়টাও তুলে আনা সম্ভব।"
২০১৭ সালে সিনেমাটি নির্মাণের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন পরিচালক। সিনেমার চরিত্রকে কাছ থেকে দেখতে দিনের পর দিন বস্তিতে কাটিয়েছেন পরিচালক। বস্তির বাসিন্দাদের মধ্য থেকেই সিনেমার শিল্পী খুঁজেছেন।
সিনেমার প্রধান চরিত্র ল্যাংড়ার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বাদশা। ৩৫ জনের মধ্য থেকে তাকে বাছাই করা হয়। সিনেমার বাকি চরিত্রের মধ্যে সোহাগী খাতুন, দুলাল মিয়া, সাদেককেও বস্তিতেই খুঁজে পেয়েছেন নির্মাতা।
তিনি বলেন, "ছবির প্রয়োজনেই বস্তির বাসিন্দাদের দিয়ে অভিনয় করিয়েছি। তাদের জীবনের গল্প তারাই ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন। পরে সেটাই হয়েছে। সিনেমাটি যারা দেখেছেন, তারা সবাই অপেশাদার এই অভিনয়শিল্পীদের অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন।"
সিনেমার গল্প এগিয়েছে ল্যাংড়ার ভাসমান জীবন নিয়ে। একটি অপরাধের দায় এড়াতে সে এক রেলওয়ে স্টেশন থেকে অন্য রেলওয়ে স্টেশনে ঘুরে বেড়ায়। যেখানেই যায় সেখানেই কারো না কারো সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক সময় তার সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে কালা নামের এক মাদক ব্যবসায়ীর। কালার বউ সোহাগীকে ল্যাংড়ার মনে ধরে। ল্যাংড়া সোহাগীর প্রণয় জমে ওঠে। এরপর ঘটতে থাকে আরেক ঘটনা ও গল্প চলতে থাকে নিজ স্রোতে।
সিনেমার গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছে পরিচালক নিজেই। সম্পাদনাও করেছেন তিনিই । সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন আমির হামযা। কালার গ্রেডিং, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর, সাউন্ড ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেছেন সুজন মাহমুদ। ছোট একটা টিম নিয়ে ৮৪ মিনিটের এই সিনেমা নির্মাণ করেছেন পরিচালক।
সেই সিনেমাটি এবার দর্শকদের সামনে আনতে পারায় যুবরাজ শামীম খুশি। তিনি বলেন, সিনেমা দেখার জন্য প্রচুর দর্শক অপেক্ষা করছেন। সিনেমাটি সব ধরনের দর্শকের কাছে পৌঁছাবে, এই ভেবে তিনি আনন্দিত।
“'আদিম'-এর এখন একটা জায়গা হলো। চরকির মতো একটা প্ল্যাটফর্মে সিনেমা থাকবে, এটা আমাদের জন্য ভালো লাগার। বিশ্বের যে কোনো দেশের দর্শক এখন সিনেমাটি দেখার সুযোগ পাবেন। একজন পরিচালক হিসেবে চরকি আমাকে এই সুযোগ দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বড় সংখ্যায় দর্শকদের আমরা ধরতে পারব।"
গণঅর্থায়নে নির্মাতার নিজস্ব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রসায়ন’ এর ব্যানারে নির্মিত এ সিনেমায় সহ প্রযোজক হিসেবে রয়েছে সিনেমাকার ও লোটাস ফিল্ম। চলচ্চিত্রটি উৎসর্গ করা হয়েছে প্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতা রাসেল আহমেদকে।