নাট্যশালায় নানা সমস্যা, প্রতিবাদে রাস্তায় নাট্যকর্মীরা

প্রতিবাদীরা বলছেন, বাইরে থেকে লাইট, সাউন্ড ভাড়া আনতে হচ্ছে বলে প্রদর্শনী করতে তাদের দ্বিগুণ খরচ হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2023, 05:35 PM
Updated : 18 May 2023, 05:35 PM

শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার বিভিন্ন মিলনায়তনে লাইট ও সাউন্ড সরঞ্জামের অপ্রতুলতা, হল ও মহড়া কক্ষ বরাদ্দে অনিয়ম এবং নাটক চলাকালে মাঠে মাইক ব্যবহার বন্ধের দাবি জানিয়ে সমাবেশ করেছেন নাট্যকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় নাট্যশালার সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন তারা।

সমাবেশে বক্তব্য দেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, আলোক পরিকল্পক ঠাণ্ডু রায়হান, শিমূল ইউসুফ, মোহাম্মদ বারী, ফয়েজ জহির, আজাদ আবুল কালাম, শহীদুজ্জামান সেলিম, আশীষ খন্দকারসহ অনেকে।

মামুনুর রশীদ বলেন, “জাতীয় নাট্যশালার তিনটি মিলনায়তনেই লাইট, সাউন্ড সিস্টেম খুব খারাপ অবস্থায় আছে। এখানে নাটক করতে গেলে বাইরে থেকে লাইট, সাউন্ড ভাড়া আনতে হচ্ছে। এর ফলে মিলনায়তন ভাড়ার দ্বিগুণ খরচ হচ্ছে প্রতিটি প্রদর্শনীতে। শিল্পকলায় এত প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। আর সামান্য এই সংকট সমাধান করা যাচ্ছে না? এটা খুবই দুঃখজনক।”

নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, “কেবল ঢাকার জাতীয় নাট্যশালা নয়, সারাদেশেই শিল্পকলা একাডেমির যত মিলনায়তন রয়েছে- সেগুলো কারিগরী সংকট ভয়াবহ। কোথাও নাটক করার উপযোগী সরঞ্জাম নেই। সেগুলো নাট্যদলগুলো ভাড়ায় আনতে হয়। এতে প্রদর্শনী খরচ অনেক বেড়ে যায়। এই সংকট সমাধানে কেবল সদিচ্ছা দরকার।”

এই সমাবেশ আহ্বান করেছিলেন ফয়েজ জহির, শহীদুজ্জামান সেলিম, আজাদ আবুল কালাম, মোহাম্মদ বারী ও অলোক বসু। তাদের ডাকেই বিভিন্ন নাট্যদলের কর্মীরা প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধনে অংশ নেন।

মোহাম্মদ বারী বলেন, “অনেক দিন ধরেই নাট্যদলগুলো নানা রকম সংকটের মধ্যে নাটক করছে। শিল্পকলায় টাকা দিয়ে মিলনায়তন ভাড়া নেওয়ার পর আবার বাইরে থেকে যদি লাইট, সাউন্ড ভাড়া নিতে হয় তাহলে প্রদর্শনী খরচ চালানোয় তো কঠিন হয়ে যায়। এছাড়া হল বরাদ্দেও অনিয়ম হচ্ছে। এসব সংকট নিয়ে কথা বলার জন্য নাট্যকর্মীদের সম্মিলিত প্লাটফর্ম গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন রয়েছে। কিন্তু সেটি একটি অকার্যকর সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তাই আমরা নাট্যকর্মীরা এখানে দাঁড়িয়ে সমাবেশ থেকে কিছু দাবি তুলে ধরছি।”

সমাবেশে নাট্যকর্মীদের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল- নাটক চলাকালে বাইরের মাঠে মাইক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে, সকল মঞ্চে আলোর যথাযথ সরঞ্জাম চাই, যথার্থ শীতাতাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চাই, শব্দ প্রক্ষেপণের সুব্যবস্থা চাই, নাটকের হলে নাটক ছাড়া অন্য অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হবে, মহড়া কক্ষের নিয়মতান্ত্রিক বরাদ্দ দিতে হবে, বৈষম্যহীন হল বরাদ্ধ নিশ্চিত করতে হবে, নাটক মঞ্চায়নে কারিগরি সমস্যা দূর করতে হবে।

নাট্যনির্দেশক ও অভিনয়শিল্পী আজাদ আবুল কালাম বলেন, “শিল্পকলার মিলনায়তনে লাইট, সাউন্ডের সংকট। দলগুলোকে বাইরে থেকে ভাড়া আনতে হয়। শিল্পকলারই কেউ কেউ আছেন এগুলো ভাড়া এনে দেন। তারা এখানে চাকরিও করেন, আবার ভাড়ার ব্যবসাও করেন। অনেক বছর ধরেই এসব চলছে।”

শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, “শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক এবং গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতি একই ব্যক্তি হওয়ার কারণে এই সংকটের সমাধান হচ্ছে না। গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন একটা অকার্যকর সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এজন্যই আমাদেরকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই দাবিগুলো তুলে ধরতে হচ্ছে।”

মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন মাসুম রেজা, কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন, মোহাম্মদ আলী হায়দার, অলোক বসু, কাজী রোকসানা রুমাসহ অনেকে।