প্রতিবাদী হলিউড শিল্পীরা

যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের নিপীড়নে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন হলিউড তারকারাও।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2020, 02:29 PM
Updated : 3 June 2020, 02:39 PM

যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপোলিসে পুলিশের বর্বরতায় মৃত কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর প্রতিবাদের পাশাপাশি বর্ণবাদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিয়ে অন্যান্য প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছেন হলিউডের বিভিন্ন শিল্পীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে শুধু মিনিয়াপোলিসে নয়, পুরো মিনেসোটা শহর, আটলান্টা, লস অ্যাঞ্জেলেস, নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসিসহ পুরো আমেরিকায় জুড়েই চলমান এই বিক্ষোভ প্রতিবাদে অংশ নিচ্ছেন হলিউড তারকারা।

অস্কার জয়ী জেইমি ফক্স ২৯ মে মিনিয়াপোলিসের প্রতিবাদকারীদের সমর্থনে বলেন, “আমরা প্রতিবাদ করতে ভয় পাই না, আমরা এই সময়কে ভয় পাই না।”

সোমবার সান ফ্রানসিসকোতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের কর্মসূচী হিসেবে ‘হাঁটু গেড়ে’ বসে অন্যান্য প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে যোগ দেন ফক্স। সেই সঙ্গে সম্মিলিত স্বরে বলতে থাকেন ‘আই ক্যান্ট ব্রিদ’।

পুলিশ যখন হাঁটু দিয়ে জর্জ ফ্লয়েডের ঘাড়-গলা চেপে ধরে ছিল তখন ফ্লয়েড বার বার বলছিলেন, “আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না’। সেটাই হয়ে গেছে এখন প্রতিবাদী শ্লোগান।

লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেমিই ফক্স এই শ্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য হলিউড তারকাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমার হলিউডের বন্ধুরা, বসে থেক না, টুইট কর না, টেক্সট কর না, তোমাদের বের হয়ে আসতে হবে।”

হলিউড অভিনেতা নিক ক্যানন নিজেই চলে গেছেন মিনিয়াপোলিসে প্রতিবাদে অংশ নিতে। তাকে দেখা যায় ‘প্লিজ আই ক্যান্ট ব্রিদ’ হুডি পরে পোস্টার হাতে প্রতিবাদ করতে। যাতে লেখা ছিল ‘জাস্টিস ফর ফ্লয়েড’।

টেসা থম্পসন হলিউড অভিনেত্রী, যাকে বাংলাদেশের হলিউড মুভির ভক্তরা চিনে থাকবেন ‘থর র‌্যাগনারক’ ছবির কারণে। তিনি লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করে টুইট করেন, “এটাই আমাদের আমেরিকা’। ভিডিওতে একই ভাবে সবাইকে শ্লোগান দিতে দেখা যায়।

আমেরিকান র‌্যাপ সংগীত শিল্পী জে. কোল’কে দেখা গেছে নিজ শহর ফেইভিলের রাস্তায় প্রতিবাদ করতে।

‘ইনসিকিউর’ খ্যাত অভিনেতা কেনড্রিক স্যাম্পসন টুইট করেন, “প্রতিবাদ করতে গিয়ে সাতবার পুলিশের রাবার বুলেটে আক্রান্ত হয়েছি। আর আমার বন্ধুর ওপর পড়েছে পুলিশের লাঠির বাড়ি।”

সংগীত শিল্পী কেহলানি ‍পুলিশের দোমড়ানো মোচড়ানো গাড়ির ছবি তুলে টুইট করেন। যেটা তিনি লস অ্যাঞ্জেলেসে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করতে গিয়ে তুলেছেন। আর লেখেন, “রেসপেক্ট এক্সিসটেন্স অর এক্সপেক্ট রিজিসট্যান্স।”

মিয়ামি হেরাল্ড’য়ের প্রতিবেদক দুই সংগীত শিল্পী কামিলা কাবেলো এবং শন মেনডেস’কে খুঁজে পান মিয়ামির রাস্তায় প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে।

যুক্তরাষ্ট্রের আরেক র‌্যাপ সঙ্গীত শিল্পী লিল ইয়াটি রাস্তায় অন্যান্যদের সঙ্গে প্রতিবাদের সময় নিজে একটি ‘হ্যান্ড মাইক’ ধরে বলতে থাকেন, “পাশেই থাকা মানুষটি থেকে আমার কোনো পার্থক্য নেই। এভরি ভয়েস ম্যাটার্স অ্যান্ড মাস্ট বি হার্ড।”

 

টিনাশি, এই মার্কিন সংগীত শিল্পী প্রতিবাদ জানাতে একাই লস অ্যাঞ্জেলেসে শহরতলীর বড় রাস্তায় নেমে পড়েন। তার হাতে ধরা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘ব্ল্যাক লিভস ম্যাটার’।

 

‘সে অ্যানিথিং’ খ্যাত অভিনেতা জন কিউস্যাক জ্বলন্ত গাড়ির ভিডিও করতে গেলে তার দিকে পুলিশরা তেড়ে আসে। তিনি সেই কম্পমান ভিডিও টুইটারে পোস্ট করে লেখেন, “পুড়তে থাকা গাড়ির ভিডিও করার বিষয়টা পুলিশরা পছন্দ করেনি। তারা লাঠি হাতে আমার দিকে তেড়ে আসে। আর আমার মোটরবাইকে বাড়ি দিতে দিতে বলে ‘ভাগো এখান থেকে, ভাগো।”

‘দি রিভারড্যাল’ খ্যাত অভিনেতা কোল স্প্রাওস স্যান্টা মনিকাতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে গ্রেফতার হন। কেন্দ্রবিন্দুটা তিনি নন এই বিষয়টা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এটা বলা দরকার যে একজন সাধারণ সাদা মানুষ এবং খ্যাত ব্যক্তি হিসেবে আমার এই আটক অবস্থা এই আন্দোলনের কাছে কিছুই নয়।”

এরা ছাড়াও অভিনেত্রী এলেন পেইজ’কে ব্রুকলিনের রাস্তায়, অভিনেতা টিমোথে শালামেট’কে স্যান্টা মনিকা, সংগীত শিল্পী হালসে, মেশিন গান কেলিকে লস অ্যাঞ্জেলেসের রাস্তায় প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিতে দেখা গেছে।

ছবি ও ভিডিও: শিল্পীদের ইন্সটাগ্রাম থেকে।