শুরু হলো রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মেলন

৬, ৭ ও ৮ মার্চ ২০২০ জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের উনচল্লিশতম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে  যাচ্ছে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2020, 09:04 AM
Updated : 8 March 2020, 08:34 AM

‘ভেঙেছ দুয়ার, এসেছ জ্যোতির্ময়, তোমারি হউক জয়’গানটি গেয়ে আয়োজনটির সূচণা করা হবে।

৬ মার্চ বিকেল সাড়ে চারটায় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন ভাষাসৈনিক সংস্কৃতিজন কামাল লোহানী।

এবারের সম্মেলনের প্রধান অতিথি অধ্যাপক সুব্রত মজুমদার। রবীন্দ্র পদক দিয়ে গুণী-সম্মাননা জানানো হবে। দেশের প্রথিতযশা রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী ফাহমিদা  খাতুনকে।

তিনদিনের উন চত্বারিংশ বার্ষিক অধিবেশনে সহায়তা দিচ্ছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সিটি ব্যাংক লি., সিএইচটি, টিভিএস, লাম এন্টারপ্রাইজ, আকিজ প্লাস্টিক এবং অন্য সহযোগী প্রতিষ্ঠান সমূহ।

এবারের আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন দেশের নানা অঞ্চল থেকে সমাগত সাতশতাধিক শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী ও সংগঠক। তিন দিনেরই সান্ধ্য-অধিবেশন সাজানো হয়েছে গুণীজনের সুবচন রবিরশ্মি, আবৃত্তি, পাঠ, নৃত্য ও গান দিয়ে।

উনচল্লিশতম অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন বিকাল চারটায় আছে সেমিনার।

এবারের বিষয়: ‘রবীন্দ্রনাথের নাট্য ভাবনা এবং এই সময়’। মূল প্রবন্ধ পাঠ করবেন নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সভাপতি ড. আতিউর রহমান। আলোচনায় অংশ নেবেন আবুল হাসনাত ও অধ্যাপক শফি আহমেদ। থাকছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিত্রকর্মের প্রদর্শনী ও পরিষদের শাখাগুলোর এ-যাবৎকালে পরিচালিত কার্যক্রমের উপস্থাপনা। বার্ষিক অধিবেশন উপলক্ষে যথারীতি প্রকাশিত হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির নানা দিক নিয়ে বিশিষ্টজনদের লেখা প্রবন্ধের সংকলন ‘সঙ্গীত সংস্কৃতি’।

এই সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৭৯ সালে ‘জাহিদুর রহিম স্মৃতি পরিষদ’ নামে। ১৯৮১ সালে বিভাগীয় রবীন্দ্র সংগীত প্রতিযোগিতা ও সম্মেলন অনুষ্ঠানসহ প্রথম জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মেলনের আয়োজন করে ‘জাহিদুর রহিম স্মৃতি পরিষদ’। ১৯৮২ সালের জানুয়ারি মাসে এই সংগঠনের উদ্যোগে ব্যাপকতর ভিত্তিতে ‘দ্বিতীয় জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদ’ গঠন করে দ্বিতীয় জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মেলন আয়োজন করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল রবীন্দ্র সংস্কৃতি ও সংগীতকে ব্যাপকতর করা, প্রচার ও প্রসার করা। সে-লক্ষ্যে এই সংগঠন সমগ্র দেশে বছরব্যাপী অনুষ্ঠান ও চর্চা অব্যাহত রেখেছে।

দেশব্যাপী বৃহত্তর পরিসরে কর্মকা- পরিচালনা করার লক্ষ্য নিয়ে পরবর্তীকালে বাঙালির চিরকালের সঙ্গী রবীন্দ্রনাথের নাম যুক্ত করে সংগঠনের নাম করা হয় ‘জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ’।

প্রতিষ্ঠার পর প্রথমদিকের বার্ষিক অধিবেশনগুলো কেবল রাজধানী ঢাকাতেই হতো। শাখাগুলিকে উদ্বুদ্ধ করতে এবং সংস্কৃতি চর্চার ব্যাপকতর প্রসার ঘটানোর লক্ষ্যে ১৯৮৪ সালে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বার্ষিক অধিবেশন হচ্ছে- এক বছর ঢাকায়, পরের বছর অন্য জেলায়।

রাজধানীর বাইরে প্রথম জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ সালে চট্টগ্রামে। সেই থেকে সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন হচ্ছে এক বছর পরপর, কেবল ঢাকার অধিবেশনে। প্রতি অধিবেশনেই দেশের সেবাব্রতী গুণীদের সম্মাননা জানিয়ে আমরা নিজেরাই ধন্য হই। নির্বাচিত গুণীকে রবীন্দ্র-পদক ও সাধ্যমতো অর্থ প্রদান করা হয়ে থাকে। বর্তমানে জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের সক্রিয় শাখা ৭৮টি।

ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের রমেশ চন্দ্র দত্ত মিলনায়তনে এ উপলক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় সম্প্রতি।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের নির্বাহী সভাপতি ড. আতিউর রহমান। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন সহ সভাপতি আবুল হাসনাত, মিতা হক, সোহরাব উদ্দিন, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য শর্মিলা বন্দোপাধ্যায়, দিলীপ দত্ত, সদস্য আবুল ফারাহ পলাশ, রশিদ আল হেলাল, মামুনুর রশীদ প্রমুখ।