আ.লীগের মনোনয়ন ফরম নিলেন ফারুক

একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেন চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক।

সাইমুম সাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2018, 04:44 PM
Updated : 11 Nov 2018, 04:44 PM

রোববার দুপুর ২টায় দিকে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম নেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান তিনি। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও চিত্রনায়ক জায়েদ খান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ফারুক বলেন, “জোরালো ভাবে এবার নমিনেশন চাই। আমার পার্টির জন্য, এলাকার মানুষের জন্য।”

ষাটের দশকে ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকা অবস্থায় রাজনীতির মাঠে নিয়মিত দেখা গেছে ফারুককে। মাঠে ছিলেন ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময়ও। একাত্তরে যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সান্নিধ্য পান তিনি।

চলচ্চিত্রে নাম লেখানোর পর রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে খানিকটা দূরে সরে যান তিনি। অভিনয়ে ব্যস্ততার কারণেই তখন রাজনীতিতে যুক্ত থাকতে পারেননি বলে জানান তিনি।

৭০ বছর বয়সে রাজনীতিতে পুরোপুরি থিতু হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

মনোনয়ন পেলে এলাকার জন্য কী করবেন?

তিনি বলেন, “অনেক রকম পরিকল্পনা আছে। তবে উন্নয়নকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই। এই সরকার যে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিয়েছে সেটাকে ধরে রাখতে চাই। যদিও আমার মনে হয়, আমাদের এলাকায় উন্নয়নের জোয়ারের পানি খুব বেশি লাগেনি।”

পাশাপাশি চলচ্চিত্রের মানুষ হিসেবে চলচ্চিত্র নিয়েও কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ) আসনে বর্তমানে সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগেরই মেহের আফরোজ চুমকি। তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। মনোনয়নের দৌড়ে প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে চুমকি ছাড়াও ডাকসুর সাবেক ভিপি আখতারুজ্জামানকেও পাচ্ছেন ফারুক।

“চুমকি তো বহুবার করলেন; মন্ত্রীও ছিলেন দুইবার। তারপর আখতার সাহেবের সম্বন্ধে কোনো মন্তব্য করা উচিত না।... জেলা পরিষদের চেয়্যারম্যান ছিলেন দুই দুই বার আর কত চান?”

ফারুকের দাবি, “এলাকার লোকজন বলছেন, ‘আমি থাকলেই এলাকার উন্নয়ন ঘটবে। কিছু দেন আর না দেন আপনার চেহারা দেখলেও আমাদের মুখে হাসি ফুটবে।’

এর আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন আওয়ামীলীগের তরফ থেকে ‘সবুজ সংকেত’ পেলেই নির্বাচন করবেন।

সেই ‘সবুজ সংকেত’ পেয়েছেন?

“অনেকের ‘সবুজ সংকেত’ একরকম; আমারটা অন্যরকম হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। আমাকে দেখলে সবাই বলে, ‘ফারুক ভাই কেমন আছেন?’ এটাকে ‘সবুজ সংকেত’ কিভাবে বলি?...আপা যখন চিন্তা-ভাবনা করে যাকে দেবেন তিনিই তো পাবেন।”, বলেন সাবেক এ ছাত্রলীগ নেতা।

তবে নব্বইয়ের দশকে একবার আ. লীগ থেকে নির্বাচনের প্রস্তাব পেয়েছিলেন বলে জানান জাতীয় চলচ্চিত্র প্রাপ্ত এ অভিনেতা।

“কিন্তু সেইবার আমি নির্বাচন করিনি। ওই একটা ভুল আমি করেছি জীবনে। আসলে যে যা তাকে সেটাই করা উচিত।”

১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে তার। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ‘লাঠিয়াল’, ‘সুজন সখী’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’সহ বেশ কিছু দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন তিনি। ১৯৭৫ ও ২০১৮ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে যথাক্রমে শ্রেষ্ট পার্শ্ব অভিনেতা ও আজীবন সম্মানায় ভূষিত হন।