দুই তরুণ নির্মাতার কান উৎসব দর্শন

বাংলাদেশের উদীয়মান নির্মাতাদের বিশ্বচলচ্চিত্রের আসরে দ্বিতীয়বারের মতো পরিচয় ও জানা-শোনার সুযোগ করে দিলো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশ (আইএফআইবি)।

রুদ্র হকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2018, 12:36 PM
Updated : 15 May 2018, 01:04 PM

টানা ৩দিনের কর্মশালা, বৈঠক ও কান চলচ্চিত্র উৎসব ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা অর্জন করলেন দুই নির্মাতা সুমন দেলোয়ার ও রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত।

ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জিং ফিল্ম ট্যালেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইইএফটিএ)-এর সহায়তায় আইএফআইবি প্রতিবছর তাদের ‘ঢাকা টু কান’ প্রকল্পের আওতায় দু’জন নির্মাতাকে এমন সুযোগ করে দিচ্ছে।  তিন দিনের এই কার্যক্রমে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র পরিচালক, চলচ্চিত্র নির্বাহী ও চলচ্চিত্র শিল্পের প্রভাববিস্তারকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকের সুযোগ পেলেন তারা।

চলতি বছর বাংলাদেশের দু’জন নির্মাতা গত ৮ মে কানের উদ্দেশে রওনা করে ১৪ মে দেশে ফিরে এসেছেন। ফিরে এসেই জানালেন তাদের অভিজ্ঞতা ও অর্জনের গল্প।

তারা জানান, গ্লোবাল ফিল্ম এক্সপ্রেশন প্রকল্পের আওতায় আইইএফটা বিশ্বের ৫টি দেশের ১০জন নির্মাতাকে নিয়ে  কান চলচ্চিত্র উৎসবের ফিল্ম মার্কেট মার্শে দ্যু ফিল্ম এ প্রডিউসারর্স ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রযোজক, পরিবেশকদের সঙ্গে নিজেদের নির্মিতব্য ও নির্মানাধীন চলচ্চিত্রগুলোও উপস্থাপন করেছেন তারা।

নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত এ প্রসঙ্গে বলেন, “কানের পরিসর দেখে আমি সত্যিই মুগ্ধ। শুধু চলচ্চিত্র প্রদর্শনই নয়, চলচ্চিত্রকে ঘিরে এত বড় আয়োজন সত্যিই অনন্য অভিজ্ঞতা। কানে যেসব চলচ্চিত্র সফল হয়েছে সব চলচ্চিত্রের শুরুটাই নানা ফিল্ম মার্কেট থেকে। আমাদের দেশে ফিল্ম মার্কেটের ধারণাটা এখনও অনেকেরই অজানা। এটি গড়ে উঠলে সকলেই উপকৃত হবেন। শুধু তিনদিনের ওয়ার্কশপই নয় এ সফরে আমি আমার চলচ্চিত্র  ‘নোনাজলের কাব্য’ নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রযোজনা সংস্থা, পরিবেশক ও সেলস এজেন্টদের সঙ্গে মিটিং করে এসেছি। আশা করছি, সামনের দিনগুলিতে এর ফল পাবো।”

নির্মাতা সুমন দেলোয়ার বলেন, “এটা আমার জন্য খুব এক্সাইটিং ছিলো। অনেক কিছু শেখারও ছিলো। কর্মশালায় চলচ্চিত্রের অর্থায়ন, ক্রাউড ফান্ডিং, লো বাজেট ফিল্ম মেকিং নিয়ে খুব চমৎকার কিছু সেশন ছিলো। অডিয়েন্স এর চাওয়া পাওয়ার ওপর একটা জরিপ নির্ভর আলোচনা শুনেছি। এছাড়াও প্রডিউসার এবং ডিস্ট্রিবিউটরদের সঙ্গে সেশন হয়েছে। কয়েকজনের সাথে আমার প্রজেক্টটা নিয়ে আলাপ করেছি। বিশ্বের বড় বড় প্রামাণ্যচিত্র প্রযোজকদের আনাগোনা ছিলো মার্কেটে। আমার প্রামাণ্যচিত্রটি নিয়ে অনেকেই আগ্রহ পোষণ করেছেন। আশা করছি খুব শিগগিরই একটা ভালো ফিডব্যাক পাবো।”

সুমন দেলোয়ার জানান, তার ‘মাই সিস্টার, মাই ফ্রেন্ড’ প্রমাণ্যচিত্রের কাজ ৫০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। যার বাকি অংশের অর্থায়ন ঘটলেই এটি নির্মাণ সমাপ্ত হবে।  

কান চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিতে বর্তমানে ফ্রান্সের কান শহরে অবস্থান করছেন ‘ঢাকা টু কান’ প্রকল্পের উদ্যোক্তা আইএফআইবি প্রেসিডেন্ট সামিয়া জামান।

সেখান থেকেই গ্লিটজকে তিনি বলেন, “এটাতো আমাদের দ্বিতীয় বছর হলো। যাদের আমরা নিয়ে আসছি কানে-তারা হয়তো নবীন কিন্তু চলচ্চিত্রে তাদের যাত্রাটা দীর্ঘদিনের। এবার যে দু’জন এলেন তাদের একজন একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র নির্মাণ করতে যাচ্ছেন, অন্যজন আরেকটি পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করছেন।

চলচ্চিত্র নিয়ে তাদের নতুন যাত্রার এ সময়টাতেই কানের মতো চলচ্চিত্র উৎসবে এলে তাদের যে ধরণের যোগাযোগগুলো স্থাপিত হয়, স্বপ্ন দেখার পরিধিটা যে বেড়ে যায় সেটা তাদের ভবিষ্যতের পথ চলার কাজে লাগবে। ব্যাক্তির চলচ্চিত্র নির্মাণের জায়গা থেকেই নয়, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

এর আগে ২০১৭ সালে নির্মাতা আবেদ মল্লিক ও লুবনা শারমিন ‘ঢাকা টু কান’ প্রকল্পের আওতায় কান চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণের সুযোগ পান।