ছোটপর্দায় তার জনপ্রিয়তার জুড়ি নেই। বড়পর্দায় ২০১৫ সালের অন্যতম আলোচিত ছবি শিহাব শাহীন পরিচালিত ‘ছুঁয়ে দিলে মন’-এর মাধ্যমে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের নায়িকা হিসেবে নিজের সম্ভাবনার জানান দিয়েছিলেন জাকিয়া বারী মম।
কিন্তু বড়পর্দায় দর্শকের কাছে মম ফিরলেন গল্পনির্ভর এক চরিত্রে। মম-এর ভাষায় “ছবিতে নাচ গানের বাহু্ল্য নেই”।
গ্লিটজ: সিনেমা হলে আপনার নতুন ছবি ‘আলতা বানু’ চলছে। কেমন রেসপন্স পাচ্ছেন?
মম: ভালো রেসপন্স পাচ্ছি।
গ্লিটজ: কেমন ভালো?
মম: সবাই বলছে ভালো, অভিনয় ভালো হয়েছে, গল্প ভালো।
গ্লিটজ: আপনি গিয়েছিলেন হলে?
মম: আমি গিয়েছিলাম। গতকাল বসুন্ধরা সিনেপ্লেক্সে দেখে আসলাম দর্শকের সঙ্গে।
মম: এ ছবিতে তো নাচ গানের বাহুল্য নাই, গল্প নির্ভর ছবি।সিনেমার সাথে একাত্ম হওয়াটা ঘটেছে- দর্শকরা এটাই বলতে চাইছিলেন বারবার।
নির্মাতা ইমোশনালি আগাতে চেয়েছিলেন গল্পটা নিয়ে। দর্শকও সেটা অনুভব করেছেন। ভালো লাগার বিষয়টা সেটাই।
নাচ গানের ছবিতে যে উচ্ছ্বাস দর্শকের মধ্যে দেখা যায় এ ছবিতে তাদের মধ্যে সেটা ছিল না। গল্পটার মধ্যে তারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকতে পেরেছে এটাই দেখেছি।
গ্লিটজ: সেক্ষেত্রে নির্মাতা সফল হয়েছেন বলবেন?
মম: নির্মাতা সাককেস হলে তো সবাই সাকসেসফুল। তার বাইরেও আমার অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন দর্শক, মিলনভাইকেও অনেক পছন্দ করেছেন। এটা শুনেছি।
গ্লিটজ: ‘ছুঁয়ে দিলে মন’-চলচ্চিত্রে আপনার সাফল্যের পর ‘আলতা বানু’র মতো ছবি কি ফিল্মের ক্যারিয়ার বিবেচনায় আপনি চেয়েছিলেন?
মম: আসলে দু’টো ছবি নিয়ে কম্পেয়ার করে লাভ নেই। ফিল্মের ক্যারিয়ার নিয়ে আমি যে খুব চিন্তিত তা না। ক্যারিয়ার বলতে ফিল্মে যেটা বোঝায় আমি বোধ হয় ঠিক সেভাবে দেখি না।
আমি আসলে ভালো গল্পের ছবি করতে চাই। সেটা যদি দশটা হলও হয়, নো প্রবলেম। দশটা হলেই যদি লোকে দেখতে পছন্দ করে, অ্যাপ্রিশিয়েট করে তাহলেই আমার সাকসেস।
যে ছবিটা আসলে আশি-নব্বইটা হলে মুক্তি পেয়েছিল তার সাথে এটাকে কম্পেয়ার করা যৌক্তিক হবে না।
আর দু’টো দুই রকমের একদমই। ওটাতে গান ছিল, প্রেম ছিল, কমেডি ছিল… ওটার ইমপ্লিমেন্টেশন ডিফারেন্ট ছিল। ওইটার সাথে এটাকে মেলানো একদমই ঠিক হবে না। দুইজন ডিরেক্টরের দুইরকম পছন্দের ছবি।
গ্লিটজ: ফিল্মে আপনার ক্যারিয়ার নিয়ে কী ভাবছেন?
মম: দেখেন ফিল্মে আমার ক্যারিয়ার গড়ার কিছু নেই। আমি আসলে অভিনয়টা করতে চাই। নাটক আমাকে অনেক অনেক দিয়েছে। নাটক লোকে পছন্দ করেছে। নাটক আমার মূল ক্যারিয়ারের জায়গা।
আর ছবি তো আমি সারাবছরই করি না। আমি ভালো গল্পের জন্য অপেক্ষা করে থাকি। ভালো ডিরেক্টরের জন্য অপেক্ষা করে থাকি। সেটাতে আসলে ক্যারিয়ার হওয়া ডিফিকাল্ট।
আমি আসলে এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য বড়পর্দায় ছবি করতে চাই। আমি বারবার বিভিন্ন গল্পে পরিশ্রমী চরিত্র করতে চাই।
মম: আমার একটা ছবি রেডি আছে। তানিম রহমান অংশুর ‘স্বপ্নবাড়ি’। ডাবিং পর্যন্ত হয়ে আছে। বাকি অংশের কাজ শেষ করে দেখা যাক এ বছরতো এখনও পড়ে আছে। হয়তো আসতেও পারে বড়পর্দায়।
এছাড়া শিহাব শাহীনের ‘মন ফড়িং’ চলচ্চিত্রটির শুটিং শুরু হবে আসছে শীতে। নির্মাতা চাইছেন দুটো ঈদের পর কাজ শুরু করতে।
বলিউডের একটা ছবিতে কাজ করার কথা ছিল, লোকেশন জটিলতায় শিডিউল পুরোটাই এলোমেলো হয়ে গেছে। ঈদের পর তাদের সঙ্গে শিডিউল নিয়ে বসবো। কেননা ঈদের আগে সিনেমায় সময় দেওয়া আমার জন্য খুবই টাফ।
গ্লিটজ: এখনকার ব্যস্ততা কী নিয়ে আপনার?
মম: এখনকার ব্যস্ততা একদমই ঈদ কেন্দ্রীক। আগে তো ঈদ নাটকে হাসির গল্প বেশি হতো। সেই জায়গা থেকে এখন অনেক বৈচিত্র এসেছে। গল্প নির্ভর কাজ হচ্ছে।
আমার ভাগে বেশিরভাই প্রেমের গল্প পড়ে। রোমান্টিক গল্পে আমাকে বেশি দেখতে পছন্দ করেন। সেই ভারটাও আমার ওপর থাকে। কিছু গল্পনির্ভর কাজের সাথেও আছি।
গ্লিটজ: নাটক এবং ফিল্ম দুটোতেই কাজ করছেন। দুটি মাধ্যমেই নানা ভাঙা গড়া চলছে। টিকে থাকার মতো কাজ কতটুকু করতে পারছেন বলে মনে করছেন?
মম: আমার মা সবসময়ই বলেন, যে পারে সে আসলে সবই পারে। আমি চেষ্টা করি যেটা করি সেটা মন দিয়ে করতে এবং সেটার রেজাল্টটা যেন পজেটিভ আসে।দর্শক যেন সেটা পছন্দ করে-এটা আমার মূল চাওয়ার জায়গা।
নাটকে কাজ করতে গেলেও জানপ্রাণ দিয়ে ভালোবেসে, পরিশ্রম করেই করি, সিনেমা করতে গেলেও তাই। পরিশ্রমের একটা রেজাল্টতো সৃষ্টিকর্তা দেনই। দর্শক হয়তো আমাকে পছন্দ করেন, ভালোবাসেন, আদর করেন-এটা প্রাকৃতিক নিয়ম।