ডনাল্ড ট্রাম্পকে লেখা চিঠিতে জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজের জন্য হলিউডে ১৩৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ইচ্ছা পোষণ করেছেন সুকেশ।
Published : 14 Nov 2024, 01:13 PM
অর্থপাচারের মামলায় কয়েক বছর ধরে কারাগারে থাকা সুকেশ চন্দ্রশেখর চৌদ্দ শিকের ভেতরে থেকেই নানা কর্মকাণ্ডে থাকছেন আলোচনায়। এবার তিনি চিঠি লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
সেই চিঠিতে বলিউড তারকা জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজের জন্য হলিউডের লস অ্যাঞ্জেলেস স্টুডিওতে ১৩৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১১৩০ কোটি রুপি) বিনিয়োগের ইচ্ছা পোষণ করেছেন সুকেশ।
হিন্দুস্থান টাইমস লিখেছে, সুকেশ তার চিঠিতে ট্রাম্পকে মার্কিন নির্বাচনে বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ট্রাম্পকে 'বড় ভাই' সম্বোধন করে, সুকেশ চিঠিতে লিখেছেন, "আপনার সঙ্গে শেষ সাক্ষাতের কথা এখনো মনে আছে। সেটা দশ বছর আগের কথা। আপনি আমাকে একটা পরামর্শ দিয়েছিলেন।
"আপনি বলেছিলেন, 'এই পৃথিবী যেমন আছে, তেমনভাবেই গ্রহণ করুন, অথবা আপনি এটাকে যেভাবে দেখতে চান, তেমনভাবেই কল্পনা করুন।' আপনার এই কথাগুলো এখনো আমার কানে বাজছে। আপনাকে ভালবাসি ভাই, আমাকে সর্বদা এমন উৎসাহ এবং ভালোবাসা দেওয়ার জন্য।"
ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি আরও একটি পরামর্শ দিয়েছিলেন সুকেশকে।
সে প্রসঙ্গ ধরে জ্যাকুলিনের কথা উল্লেখ করে সুকেশ চিঠিতে লিখেছেন, "আমি আপনার অন্য পরামর্শটিও মনে রেখেছি। 'সবসময় নিজের প্রেয়সীকে সম্মান দিয়ে রাখুন এবং তাকে সবসময় স্পেশাল অনুভব করান।'
"আমি এলএস হোল্ডিংস লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি বড় স্টুডিওতে ১৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের শেয়ার কিনছি। আমি এই কেনাকাটা চূড়ান্ত করেছি, আমার প্রেয়সী জ্যাকুলিনের জন্য, আপনি আমাকে ঠিক যে পরামর্শ দিয়েছিলেন, ঠিক সেভাবেই, 'আমার নারীকে বিশেষ বোধ করানোর জন্য।"
চিঠিতে সুকেশ আরও লিখেছেন, তার কোম্পানি এলএস হোল্ডিংস এবং এলএস গেমিং এলএলসি আগামী দুই বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ বাড়াবে।
দুই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২১৫ কোটি টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে সুকেশকে ২০২১ সালে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর সুকেশের অর্থ পাচারের তদন্তে নামে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
তখনই অভিনেত্রী জ্যকুলিনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার কথা প্রকাশ্যে আসে। তাদের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের কয়েকটি ছবিও ছড়িয়ে পড়ে ইন্টারনেটে।
শ্রীলঙ্কা থেকে এসে ২০০৯ সালে বলিউডে ক্যারিয়ার শুরু করা জ্যাকুলিনকে কয়েক দফায় ডেকে জেরা করেন ইডির গোয়েন্দারা। তখন থেকেই এ অভিনেত্রীর সাত কোটি রুপির সম্পত্তি অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইডি।
প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে এই অভিনেত্রী জানান, ২০১৭ সাল থেকে সুকেশের সঙ্গে তার পরিচয়। তিহার জেল থেকে সুকেশ যে তার সাথে যোগাযোগ রাখছিলেন, সে কথা তিনি স্বীকার করেন।
সুকেশ চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে দেওয়া প্রথম অভযোগপত্রে ইডি দেখিয়েছিল, চাঁদাবাজি করে পাওয়া অর্থ কী করে তিনি পাচার করেছেন। আর সম্পূরক অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সুকেশের কাছ থেকে অন্তত ৫ কোটি ৭১ লাখ রুপির উপহার পেয়েছেন জ্যাকুলিন, যার উৎস সেই পাচার হওয়া অর্থ।
ইডি বলছে, এসব উপহার যে সুকেশের অবৈধ অর্থে কেনা, অভিনেত্রী জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ ‘তা জানতেন’। উপহারগুলো তাকে পৌঁছে দিতেন সুকেশের দীর্ঘদিনের সহকর্মী পিংকি ইরানি।
সুকেশের কাছ থেকে পাওয়া জ্যাকুলিনের দামি উপহারগুলোর মধ্যে রয়েছে বায়ান্ন লাখ রুপি দামের একটি ঘোড়া, নয় লাখ রুপির একটি পার্সিয়ান বেড়াল।
এই বলিউড তারকার পরিবারের সদস্যদেরও সুকেশ বিভিন্ন সময়ে উপহার পাঠিয়েছেন বলে উঠে এসেছে ইডির তদন্তে।
২০০ কোটি রুপি পাচারের মামলায় অভিযুক্ত সুকেশ চন্দ্রশেখরের সঙ্গে ফেঁসে যাওয়া জ্যাকুলিন এখন জামিনে মুক্ত রয়েছেন।