মৃণাল সেন হয়ে আসছেন চঞ্চল চৌধুরী

সৃজিত এর আগে এই বায়োপিকটি ওয়েব সিরিজ আকারে আনতে চেয়েছিলেন, পরে সিদ্ধান্ত বদলে সিনেমা বানাতে চাইছেন তিনি।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2022, 06:27 AM
Updated : 30 Dec 2022, 06:27 AM

ভারতীয় বাংলা সিনেমায় প্রয়াত চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেনের ‘বায়োপিক’ নির্মাণ করছেন নির্মাতা সৃজিত মুখার্জি, তাতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করবেন বাংলাদেশের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী।

পশ্চিমবঙ্গের এই নির্মাতা সপ্তাহখানেক আগে মৃণাল সেনের ভূমিকায় চঞ্চলকে নেওয়ার সিদ্ধান্ত  নিয়েছেন বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার। বয়োপিকের চিত্রনাট্যও লিখেছেন সৃজিত, এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেছেন মৃণাল সেনের ছেলে কুণাল।

সিনেমাটি প্রযোজনা করছেন ফিরদৌসুল হাসান। তিনি জানান, শুক্রবার প্রখ্যাত এই চলচ্চিত্রকারে চতুর্থ প্রয়াণ দিবসে সিনেমার কথা ঘোষণা করতে চেয়েছিলেন তারা।

কেন চঞ্চল? সৃজিত বললেন, “প্রথমত দু’জনের মুখের মিল আছে। সেটা কাকতালীয়। কিন্তু মৃণাল সেনের মতই চঞ্চলের চোখের দৃষ্টি অত্যন্ত ধারালো এবং সজাগ। তা ছাড়াও তার রাজনীতি চেতনা, যাপন এবং দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গেও চঞ্চলের প্রচুর মিল পাওয়া যায়। সেটা কাকতালীয় হতে পারে। কিন্তু মিলটা আছে।’’

ইনস্টাগ্রামেও সিনেমায় চঞ্চলের নাম ঘোষণা করে একটি পোস্টার শেয়ার করেছেন সৃজিত।

সম্প্রতি কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের পর ফেইসবুক লাইভে চঞ্চল জানিয়েছিলেন, তিনি সৃজিতের সঙ্গে কাজ করতে চলেছেন। সৃজিত তখন বলেছিলেন, “সময় এলে সবই জানতে পারবেন।”

জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে সিনেমার শুটিং শুরু করার পরিকল্পনা করেছেন সৃজিত। তিনি বলেন, “বায়োপিক বা ওই ধাঁচের ছবি আগেও করেছি। যেমন শাবাশ মিঠু বা ভাওয়াল সন্ন্যাসীকে নিয়ে। কিন্তু নিঃসন্দেহে এটা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং।“

সৃজিত এর আগে এ বায়োপিকটি ওয়েব সিরিজ আকারে আনতে চেয়েছিলেন।পরে সিদ্ধান্ত বদলে সিনেমা করতে চাইছেন।

সিনেমার কাহিনীতে মৃণালের ‘পরিচালনা’ জীবন প্রাধ্যান্য পেয়েছে, সঙ্গে ব্যক্তিজীবনও কিছুটা উঠে এসেছে। এছাড়া ‘ইন্টারভিউ’ (১৯৭১), ‘ক্যালকাটা ৭১’ (১৯৭২) এবং ‘পদাতিক’ (১৯৭৩)- কলকাতা ট্রিলজির নির্মাণ কথা বিশেষভাবে জায়গা পাচ্ছে বায়োপিকে।

চঞ্চল ছাড়াও সিনেমায় অভিনয় করছেন মনামী ঘোষ এবং সম্রাট চক্রবর্তী।

১৯২৩ সালের ১৪ মে বাংলাদেশের ফরিদপুরের জন্ম নেন মৃণাল সেন।  রূপালি জগতে নির্মাতা হিসেবে তার অভিষেক ঘটে ১৯৫৫ সালের  ‘রাতভোর’ সিনেমায়। তবে এরপরের দুই চলচ্চিত্র ‘নীল আকাশের নীচে’ ও ‘বাইশে শ্রাবন’ তাকে এনে দেয় আর্ন্তজাতিক পরিচিতি।

১৯৬৯ সালে মুক্তি পায় তার পরিচালিত ‘ভুবন সোম’। সেই সিনেমায় উৎপল দত্ত অভিনয় করেছিলেন। অনেকের মতে, এটাই মৃণাল সেনের ‘শ্রেষ্ঠ’ চলচ্চিত্র।

মৃণাল সেন-এর অন্যতম কাজ বলা হয় কলকাতা ট্রিলজি। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৩ সালের মধ্যে মুক্তি পাওয়া ওই তিন সিনেমায় কলকাতার তখনকার ‘অস্থির’ সময়কে তুলে ধরেছিলেন তিনি।

মধ্যবিত্ত শ্রেণির নীতিবোধকে মৃণাল সেন তুলে ধরেন তার প্রশংসিত দুটি সিনেমা ‘এক দিন প্রতিদিন’ (১৯৭৯) এবং ‘খারিজ’ (১৯৮২) এর  মাধ্যমে।

‘খারিজ’ ১৯৮৩ সালের কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার অর্জন করে। ২০০৫ সালে ভারতের চলচ্চিত্র বিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরষ্কার পান মৃণাল।

১৮টি সিনেমার জন্য তিনি পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তার ঝুলিতে গেছে ১২টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারও। মৃণাল সেন বাংলা, হিন্দি, ওড়িয়া ও তেলেগু ভাষাতেও সিনেমা করেছেন।

আরও পড়ুন:

Also Read: ‘মৃণাল সেন মরেননি’

Also Read: মৃণাল সেনের পাঁচকাহন