মৃণাল সেনের পাঁচকাহন

বাংলা সিনেমার নির্মাতা মৃণাল সেনের ৯৬তম জন্মদিনে তার জীবনের অনালোচিত পাঁচটি বিষয় নিয়ে এই প্রতিবেদন।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2018, 02:59 PM
Updated : 14 May 2018, 02:59 PM

এক,

মৃণাল সেন ১৯৫৫সালে ‘রাতভোর’ করার আগে ১৯৫০ সালে একটি সিনেমা পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত হন। সিনেমাটির নাম ‘দুধারা’। যদিও চলচ্চিত্রটির ক্রেডিটে পরিচালক হিসেবে নাম রয়েছে ‘অনামী’।

এই ছবিটির কাহিনি মৃণাল সেনের। বিশিষ্ট সিনেমাটোগ্রাফার বিদ্যাপতি ঘোষ এই সিনেমার ক্যামেরাম্যান। চলচ্চিত্রটি সম্পাদনা করেছেন রমেশ যোশী।শিল্প নির্দেশক হিসেবে ছিলেন তারক বোস এবং গোপী সেন।

এই চলচ্চিত্রের অন্যতম মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন গীতা সোম, পরবর্তীতে যিনি মৃণাল সেনের স্ত্রী গীতা সেন।

দুই,

‘নীল আকাশের নীচে’(১৯৫৯) চলচ্চিত্রটি মৃণাল সেনকে আপামর দর্শকের সঙ্গে পরিচিত করিয়েছে। এই ছবিটি প্রথমে পরিচালনা করার কথা ছিল সংগীত শিল্পী ভূপেন হাজারিকার।

চীনা সৈনিক ওয়াং লু’র চরিত্রে কালী ব্যানার্জীর অসাধারণ অভিনয়ের জন্য এ ছবিটি দর্শকমনে দাগ কাটে।

ছবিতে দুটি গান, ‘ও নদীরে একটি কথা শুধাই শুধু তোমারে’ এবং ‘নীল আকাশের নীচে এই পৃথিবী’ ভীষণ জনপ্রিয়তা পায়। যদিও গান দুটি চলচ্চিত্রটিতে প্রয়োগের ব্যাপারে মৃণালবাবুর আপত্তি ছিল।

ছবিটির প্রযোজক হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের যুক্তি ছিল, “বাঙালি দর্শক চলচ্চিত্রে গান পছন্দ করে।” অনিচ্ছা সত্ত্বেও পরে পরিচালক ছবিটিতে গান দুটি অন্তর্ভুক্ত করেন।

 

ছবিটি মুক্তির পর গান দুটির জনপ্রিয়তা দেখে মৃণালবাবু পরের সিনেমা ‘বাইশে শ্রাবণ’(১৯৬০)-এও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কেই নির্বাচন করেন নেপথ্য কন্ঠশিল্পী এবং ছবির সংগীত পরিচালক হিসেবে।

তিন,

‘রাতভোর’ নির্মাণের পরে ১৯৫৬ সালে নিকোলাই গোগোল-এর কাহিনি অবলম্বনে একটি চিত্রনাট্য লেখেন মৃণাল সেন। ‘রাজধানী থেকে’ নামের এই চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন নির্মল মিত্র।

১৯৬১ সালে শৈলেশ দে’র কাহিনি অবলম্বনে ‘কানামাছি’ ছবির চিত্রনাট্য লেখেন তিনি। ছবিটি পরিচালনা করেছেন টাস ইউনিট।

১৯৬৬সালে প্রমথনাথ বিশী-র কাহিনি নিয়ে ‘জোড়া দীঘির চৌধুরি পরিবার’ ছবির চিত্রনাট্য লেখেন মৃণাল বাবু। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন অজিত লাহিড়ী।

১৯৬৬ সালেই প্রবোধকুমার সান্যালের কাহিনি অবলম্বনে পরিচালক অজয় কর নির্মাণ করেন ‘কাচ কাটা হীরে’। এই ছবির চিত্রনাট্যকারও মৃণাল সেন। ছবিটি ভীষণ দর্শক সমাদৃত হয়। এরপর অন্য পরিচালকের জন্য আর কোনো চিত্রনাট্য লেখেননি মৃণাল সেন।

চার,

চারটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন মৃণালবাবু।

১৯৬৭তে ইংরেজি ভাষায় নির্মিত ‘মুভিং পারস্পেকটিভস’  ভারত সরকারের ফিল্ম ডিভিশন প্রযোজনা করে। ছবিটি ১৯৬৮ সালে নম পেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে রৌপ্য পদক অর্জন করে।

 

১৯৮২তে ‘ত্রিপুরা প্রসঙ্গ’র কাহিনি, চিত্রনাট্য এবং পরিচালনা মৃণাল সেন। সংগীত পরিচালনা করেন আনন্দশংকর।ছবিটি প্রযোজনা করে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার।

১৯৮৯-এ ইংরেজি ভাষায় নির্মিত ‘ক্যালকাটা মাই এলডোরাডো’ শিরোনামের ছবিটি প্রযোজনা করে হল্যান্ডের সিটি লাইফ ফাউন্ডেশন। ছবির কাহিনি, চিত্রনাট্য এবং পরিচালনা মৃণাল সেন। চিত্রগ্রাহক ছিলেন শশী আনন্দ।

১৯৯৬সালে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট এবং এন.এফ.ডি.সি প্রযোজিত ইংরেজি প্রমাণ্যচিত্র ‘অ্যান্ড দি শো গোজ অন’-এর চিত্রনাট্য ও পরিচালনা মৃণাল সেনের। ছবিটির সংগীত পরিচালনা করেছেন পণ্ডিত কুমার বোস।

পাঁচ,

বাংলা ভাষার পাশাপাশি তিনি হিন্দি, ওড়িয়া এবং তেলুগু ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন।

১৯৮৫ সালে মৃণাল সেন নির্মাণ করেন ‘জেনেসিস’ নামে একটি চলচ্চিত্র, ছবিটি হিন্দি, ফরাসি এবং ইংরেজি  ভাষায় তৈরি হয়।