উপমহাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক মৃণাল সেন-এর মৃত্যুর খবরকে নাকচ করে দিয়েছে তাঁর পরিবার।
Published : 30 Jun 2016, 04:39 PM
সকাল থেকেই সামাজিক মাধ্যমগুলোতে মৃণাল সেন-এর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরে। পরিবারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘খবরটি পুরোপুরি ভুল। মৃণাল সেন মরেননি। একদম সুস্থ আছেন, এখন চা খাচ্ছেন তিনি!”
ইন্দিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে এই ভুয়া খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়। অনেক নামিদামি তারকারাও তাদের ‘শোকবার্তা’ প্রকাশ করেন সামাজিক যোগাযোগের সাইটটিতে।
ইংল্যান্ডে বসবাসরত ভারতীয় ঔপন্যাসিক অমিতাভ ঘোষ এই গুজবে বিভ্রান্ত হওয়াদের মধ্যে একজন। তিনি টুইট করেন, “মৃণাল সেনের মৃত্যুতে শোকাহত।তাঁর ‘ভুবন সোম’ “এলাকার সন্ধানে’ ভারতীয় সিনেমা জগতের মাইলস্টোন।”
পরবর্তীতে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল মৃণাল-এর পরিবারের বরাত দিয়ে মৃত্যুর খবরটিকে গুজব হিসেবে নিশ্চিত করে।
ভারতীয় চলচ্চিত্রে নবজাগরণের সূচনা হয়েছিল গুটিকয়েক যে কালজয়ী নির্মাতার হাত ধরে, তাম মধ্যে মৃণাল সেন অন্যতম। বাঙালি পরিচালকদের মধ্যে সত্যজিৎ রায় এবং ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গেই নেওয়া হয় তার নাম।
১৯২৩ সালের ১৪ মে বাংলাদেশের ফরিদপুরের জন্ম নেন মৃণাল। চলতি বছরে তিনি পা দিয়েছেন ৯৫ তে।
রূপালি জগতে নির্মাতা হিসেবে মৃণাল সেন-এর অভিষেক ঘটে ১৯৫৫ সালের ছবি ‘রাতভোর’-এ। তবে এরপরের দুই ছবি ‘নীল আকাশের নীচে’ ও ‘বাইশে শ্রাবন’ তাকে এনে দেয় আর্ন্তজাতিক পরিচিতি।
১৯৬৯ সালে মুক্তি পায় তার পরিচালিত ছবি ‘ভুবন সোম’। এই সিনেমায় উৎপল দত্ত অভিনয় করেছিলেন। এটি অনেকের মতে মৃণাল সেনের শ্রেষ্ঠ ছবি।
মৃণাল সেন-এর অন্যতম সেরা কাজ তার কলকাতা ট্রিলোজি। ইন্টারভিউ’ (১৯৭১), ‘ক্যালকাটা ৭১’(১৯৭২) এবং ‘পদাতিক’ (১৯৭৩) ছবি তিনটির মাধ্যমে তিনি তৎকালীন কলকাতার অস্থির অবস্থাকে তুলে ধরেছিলেন।
মধ্যবিত্ত শ্রেণির নীতিবোধকে মৃণাল সেন তুলে ধরেন তার খুবই প্রশংসিত দুটি সিনেমা ‘এক দিন প্রতিদিন’(১৯৭৯) এবং ‘খারিজ’ (১৯৮২)-এর মাধ্যমে। ‘খারিজ’ ১৯৮৩ সালের কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার অর্জন করে। ২০০৫ সালে তিনি ভারতের চলচ্চিত্র বিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরষ্কার অর্জন করেন।