"একজন শিল্পীকে এত বছর পারফর্ম করতে না দেওয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না। শিল্পীকে তার প্রতিভা থেকে দমিয়ে রাখা যায় না।”
Published : 11 Oct 2024, 06:55 PM
শ্রোতাপ্রিয় নজরুল সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা প্রায় ১৫ বছর পর গান করেছেন বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি)।
এই সময়ে এত বছর বিটিভিতে গান গাইতে না পারা, নানা অনুষ্ঠান থেকে ‘বঞ্চিত’ হওয়া, শিডিউল নিয়ে ‘অসম্মান’সহ বিটিভির বিভিন্ন আচরণে আক্ষেপও প্রকাশ করেছেন এই শিল্পী।
গ্লিটজের সঙ্গে আলাপে ফেরদৌস আরা বলেন, "একজন শিল্পীকে এত বছর পারফর্ম করতে না দেওয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না। শিল্পীকে তার প্রতিভা থেকে দমিয়ে রাখা যায় না। আমার জুনিয়ররা নিয়মিত বিটিভিতে গান করছেন, কিন্তু বিটিভি-বেতারের সব প্রোগ্রাম থেকে আমাকে কেন বাদ দেওয়া হয়েছে তা আমি জানি না।
“আমার ধারণা, যারা আমাকে ‘না’ করেছেন, তারাও জানেন না কেন আমাকে অনুষ্ঠানে নেওয়া হয়নি।"
ফেরদৌস আরা বলছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন না। তবুও বিগত সরকারের সময়ে কেন তিনি ‘নিষিদ্ধ’ ছিলেন, তা কখনোই বুঝতে পারেননি।
“আমাকে কেন নিষিদ্ধ করা হল? একজন শিল্পীকে কেন শাস্তি দেওয়া হল? সম্মানের বদলে কেন অসম্মান করা হবে? কেউ আমাকে বলতে পারেনি কেন আমাকে প্রোগ্রাম দেওয়া হচ্ছে না। কারা বাদ দিয়েছে, কেন দিয়েছে। এসব কারণ আমাকে জানানো হয়নি।"
কীভাবে ‘অসম্মানিত’ করা হয়েছে, সেই বর্ণনা দিতে গিয়ে ফেরদৌস আরা বলেন, “প্রোগ্রামের দিন জানতে পারি আমার গান বাতিল হয়েছে। সে সময় পারিবারিকভাবে, সামাজিকভাবে অসম্মানিত হয়েছি। ফোন দিয়ে মানুষ জিজ্ঞেস করত আপা, আপনার প্রোগ্রাম নেই? আমার ফোবিয়া হয়ে গিয়েছিল।
“এবারও যখন প্রোগ্রামের জন্য ডাকল আমার ভয় কাজ করছিল। হয়ত না করে দেবে। তাই প্রোগ্রামের আগে কাউকে জানাইনি। কোনো মানুষকে বলিনি আমার প্রোগ্রাম আছে। যদি আবার অপমানিত হই এই ভয়ে।"
দীর্ঘ ১৫ বছর পর সম্প্রতি বিটিভির এক অনুষ্ঠানে আবার গান করার সুযোগ হয় এই শিল্পীর। সেই অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “বিটিভিতে গাইতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে। এটা একসময় আমার প্রাণের প্রতিষ্ঠান ছিল। কারণ শিল্পী তৈরিতে এ প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা বর্ণনাতীত।"
ফেরদৌস আরার অভিযোগ নিয়ে গ্লিটজ কথা বলেছে বিটিভির বর্তমান মহাপরিচালক মো. মাহবুবুল আলমের সঙ্গে।
তিনি বলেন, "ফেরদৌস আরা তো বিটিভির তালিকাভুক্ত অনেক পুরনো শিল্পী। আমি তো নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত, আগের ঘটনা আমার জানার কথা নয়। কোনো শিল্পী যদি এত বছর প্রোগ্রাম না পেয়ে থাকেন, বা বঞ্চিত হন, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই আমরা সেটা খতিয়ে দেখব। যেহেতু রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়েছে, বিপ্লব পরবর্তী সময়ে যা যা পরিবর্তন দরকার আমরা সে অনুযায়ী কাজ করব।"
'ওই যে দেখা যায় রে’, ‘এমন সোনার দেশ ওরে ভাই’, ‘আমার মন চলে যায়’, ‘বলতে পারো’, ‘মন আমার ডাকছে ওরে’, ‘মনরে কই’, ‘ফুল পাখি’, ‘সবুজ আলপনা', ‘বাংলা আমার মা’ ফেরদৌস আরার কণ্ঠের কয়েকটি জনপ্রিয় গান।