ত্রাণের মোড়ক পলিথিন ডাকছে আরেক বিপদ

বন্যাদুর্গত সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লালপুর গ্রামের বাসিন্দা জমিলা বিবি ও তার স্বামী বিলাল মিয়ার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। বন্যা শুরুর পর এ পর্যন্ত তারা চারবার ত্রাণ সামগ্রী পেয়েছেন। প্রতিবারই তাদের রেক্সিনে মোড়ানো একটি প্যাকেট মিলেছে, যেখানে ৫ কেজি চাল, পেঁয়াজ, রসুন, চিড়া, মুড়ি, মোমবাতি, তেল, ডাল, লবণ, আলু, স্যালাইন, বোতলে পানি, গুঁড়, ম্যাচ বাক্স, ওষুধ ও আরও উপকরণ ছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদকমরিয়ম সুলতানাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2022, 07:24 PM
Updated : 1 July 2022, 03:12 AM

প্রায় প্রতিটি উপকরণই আলাদা আলাদাভাবে পলিথিন দিয়ে মোড়ানো ছিল। প্রতিবারে ত্রাণের বাক্সের সঙ্গে তারা গড়ে ১৫টি পলিথিন পেয়েছেন। এই হিসাবে গত দুই সপ্তাহে চার বারে ত্রাণ সামগ্রীর সঙ্গে তারা ৬০টির বেশি পলিথিন পেয়েছেন।

জমিলা বিবি জানালেন, এসব পলিথিনের মধ্যে যেগুলো আকারে কিছুটা বড় সেরকম কয়েকটি রেখে বাকিগুলো তিনি ফেলে দিয়েছেন। একই ঘটনা ঘটেছে প্লাস্টিকের বোতলের ক্ষেত্রেও।

সিলেট অঞ্চলে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষের বসবাস। এদের মধ্যে প্রায় ২২ লাখ বন্যাকবলিত। এছাড়া সুনামগঞ্জে ৩০ লাখ বাসিন্দার ৯০ শতাংশই এবার বানভাসি।

বিপুল সংখ্যক এই মানুষকে সরকারের পাশাপশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও সংগঠনও ত্রাণ দিচ্ছে। বৃষ্টিভেজা আবহাওয়ায় সেই ত্রাণসামগ্রী যেন নষ্ট না হয়, সেজন্য পলিথিনই মোড়ক হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। কারণ সহজলভ্যতা। 

কিন্তু এটাই প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের মধ্যে পরিবেশগত আরেকটি সঙ্কট সামনে নিয়ে এসেছে। কারণ এই পলিথিন পচনশীল নয়। আবার তা জমে পানি নিষ্কাশনের পথগুলোও আটকে দেয়।

ফলে বিভাগীয় শহর সিলেট যেমন পলিথিন দূষণের সঙ্কটে পড়েছে। এই দূষণ শহরের গণ্ডি ছাড়িয়ে কৃষিনির্ভর পল্লীতে, হাওরাঞ্চলেও ছড়িয়ে যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ মেয়াদে বিপর্যয় এড়াতে এখনই পলিথিন ও একবার ব্যবহার করার প্ল্যাস্টিক সামগ্রীর উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

পলিথিনে সয়লাব সিলেট অঞ্চল

ছবি: কামাল হোসেন তালুকদার

এ সপ্তাহের সোমবার পর্যন্ত সিলেটের বাসিন্দারা ১ হাজার ৪৯৫ মেট্রিক টন চাল, ১৭ হাজার ২১৮ প্যাকেট শুকনা খাবার, ও ২ কোটি ২৭ লাখ ৪৩ হাজার নগদ টাকা সহায়তা হিসেবে পেয়েছেন। 

সরকারের পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপ (৫ হাজার ৫০০ প্যাকেট), প্রাণ আরএফএল গ্রুপ (৪ হাজার প্যাকেট), যমুনা গ্রুপ (২ হাজার ৫০০ প্যাকেট), শেভরন (১ হাজার ৪৭০ প্যাকেট) এবং অন্যান্য ব্যবসায়ী ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ত্রাণ বিতরণ করেছে।

সোমবার পর্যন্ত সুনামগঞ্জেও সরকারের পক্ষ থেকে ১ হাজার ১৫৬ মেট্রিক টন চাল, ২৩ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার প্যাকেট।

এখন এটা বিবেচনায় নেওয়া জরুরি যে প্রতিটি ত্রাণের প্যাকেজে প্রায় একই ধরনের সামগ্রী ছিল, যা জমিলা বিবি ও তাদের পরিবার পেয়েছে।

এর বাইরেও আরও নানা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে, যার হিসাব স্থানীয় প্রশাসনের কাছে নেই। তবে ধরেই নেওয়া যায়, সেসব ত্রাণের মোড়কও ছিল পলিথিনের।

জীবন ও প্রকৃতি রক্ষার সঙ্কট

সংগীতশিল্পী তাসরিফ খান ১৫ জুন থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার্তদের সহায়তা করে যাচ্ছেন। তিনি ও তার দল এখন পর্যন্ত ত্রাণ সহায়তা হিসেবে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছেন।

তিনি জানালেন, এ পর্যন্ত ৮ হাজার ব্যক্তির কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন তারা। তবে কেউই এখন পর্যন্ত প্লাস্টিক বা পলিথিন ব্যবহারের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা বা নিষেধের কথা জানায়নি।

পলিথিনের ক্ষতিকর দিকটি তুলে ধরাতে তাসরিফ বললেন, “রাইট! রাইট! এইটা যদি কেউ আমার মাথায় একটু আগে দিয়ে দিত, আমি খুব সুন্দরভাবে জিনিসটা মেইনটেইন করতে পারতাম। এটা তো মাথায়ই ছিল না, একদম মাথায়ই ছিলো না। আমি খুবই দুঃখিত।”

তাসরিফের মতো অনেক মানুষ বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন স্বউদ্যোগে, তাদের একজন ব্যারিস্টার সাইয়েদুল হক সুমন।

তিনি এখনও সুনামগঞ্জ এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন। বন্যার্তদের সহায়তায় তিনি এ পর্যন্ত দেড় কোটি টাকার বেশি তহবিল সংগ্রহ করেছেন এবং তিনিও একই পদ্ধতি অনুসরণ করে ১৫ হাজার পরিবারের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন।

আইনজীবী সুমন বলেন, “সিলেট অঞ্চলে বন্যা কী কারণে হয়েছে, তা নিয়া বিশদ আলোচনা আছে। এরমধ্যে একটা আলোচনা হতে পারে পলিথিন। কিন্তু সেটা বন্যাটা পুরোপুরি যাওয়ার পর করতে হবে। ওই সময় পুরোপুরি ভুলে গেলে চলবে না যে কেন বন্যা হয়।

“এইখানে গর্ত ভরাট করে ফেলছে, খালি জমি-খাল এগুলো কিচ্ছু রাখে নাই, তার উপর নদী খনন হয় নাই। নানা রকম ব্যাপার আছে। আলাদাভাবে আপনি কিছুই বলতে পারবেন না। এগুলোকে আমরা ওয়ান অব দ্য রিজন হিসেবে রাখতে পারি। আপাতত যে দুটো প্রবলেম, সেদিকে ফোকাস করতে হবে। পুনর্বাসন আর খাবার।”

বেসরকারি সংস্থা লাইটার ফাউন্ডেশনের সভাপতি আফজাল হোসেন জানালেন তারা ১ হাজার ২১ প্যাকেট ত্রাণ বিতরণ করেছেন।

আফজাল বলেন, “আমাদের মোট কথা হলো, মানুষের যে বেসিক চাহিদা, খাবারের যে চাহিদা, সেটা আমরা পূরণ করতে পারছিলাম। আর চারপাশে যেহেতু পানি, সেই পানি থেকে আমাদের খাবারগুলোকেও বাঁচাতে হবে, বৃষ্টি হলে সেগুলোকেও সেভ করতে হবে। পলিথিন না ব্যবহার করলে তখন খাবারগুলোও নষ্ট হত।”

পলিথিনের ক্ষতিকর দিকটি জানার পরও তা ব্যবহার নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা এমনিতে পলিথিন ব্যবহারে সাধারণত নিরুৎসাহী। কিন্তু এক্ষেত্রে পলিথিন ছাড়া অল্টারনেটিভ কোনো ভাবনা ভাবার সময়-সুযোগ আমাদের ছিল না।”

হাওর উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি কাশ্মির রেজাও একই ধরনের মত প্রকাশ করে বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ পরিবারকে দিয়েছি। এছাড়া ৫ হাজার ৫০০ ডিস্ট্রিবিউশনে হেল্প করছি। এছাড়া বিশ্বম্ভরপুরে ৭০০ মানুষকে রান্না করা খাবার দিয়েছি।

“এসব খাবার, ত্রাণ খোলা আকারে দেওয়া যাচ্ছে না। পলিথিন ইউজ করতে হচ্ছে। এই মুহূর্তের ক্রাইসিসে আমরা পলিথিনের বিকল্প পাচ্ছি না।”

এই দূষণের রাশ টানবে কে?

বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা বললেন, তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করার জন্য তাদের কাছে একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিনই ছিল একমাত্র সমাধান। অথচ বাংলাদেশই বিশ্বে প্রথম দেশ, যারা ২০০২ সালে পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে।

সিলেটের জাকিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পল্লব হোম দাস বলেন, “চট বা পাটের বস্তায় দেওয়ার মতো কোনো নীতিমালা আপাতত নাই। তাৎক্ষণিকভাবে যখন যা আমাদের কাছে সুবিধাজনক মনে হচ্ছে, যেটা হাতের কাছে পাওয়া গেছে, ওই সময় যেন দ্রুত মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারি, সেটাই করছি।

“আর পলিথিনে না দিলে ঝড় বৃষ্টি বাদলে কিন্তু নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা রয়েছে, আমরা যেখানে যেখানে এগুলো দিচ্ছি, এটার যেন সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা হয়, সেই নির্দেশনা দেওয়া আছে ডিসি স্যারের পক্ষ থেকে।”

সুনামগঞ্জের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম এখন অন্য কিছু বাদ দিয়ে বন্যার্তদের সহায়তা দেওয়াকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, “আপাতত কিছুদিন পলিথিনের বিরুদ্ধে যাচ্ছি না আমরা। আপাতত মানুষকে বাঁচাতে হবে। তারপর ওদিকে নজর দেব।”

তবে তিনি বলেন, বেসরকারি উদ্যোগে ত্রাণ যারা দিচ্ছেন, তারা সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় রাখলে পলিথিন ব্যবহার কমানো যেত।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট শাখার পরিচালক এমরান হোসেন বলেন, “বিষয়টা হচ্ছে, রান্না করা খাবার যেখানে দেওয়া হচ্ছে, বিশেষ করে খিচুড়ি, সেক্ষেত্রে পলিথিনের ইউজটা বেশি হচ্ছে। পলিথিনের বিষয়ে ভাবতে হবে, পলিথিনটা কত মাইক্রোনের।

“যে মাইক্রনের পলিথিনটা দিচ্ছে, সেটা যদি নির্ধারিত মাত্রায় হয়, তাহলে সেটা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর না। সাধারণত যেটা মানদণ্ড, তা ৫৫ মিলি মাইক্রনের ওপর ... তবে বাজারে যে পলিথিনগুলো থাকে, সেগুলার ৯০% এই মানদণ্ডের বাইরে থাকে। এখন যেগুলো দিচ্ছে, এগুলা আসলে না দেখে ওইভাবে মুখস্থ বলা যাবে না যে এগুলো আদৌ পরিবেশসম্মত কিনা … তবে অধিকাংশ যেটা হবে, সেটা আমি নিজে বলছি যে পরিবেশসম্মত হবে না।”

বন্যার পানি নেমে গেলে পলিথিন অপসারণে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, “পানিটা নেমে যাওয়ার পর যতটুক মিটিগেট করা যায়, সেই ব্যবস্থা আমরা অবশ্যই নেব। গত বছর আমরা ৬০ মেট্রিক টন পলিথিন জব্দ করছি বিভিন্ন জায়গা থেকে।

“কিন্তু এখন তো মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আগে আমরা মানুষকে বাঁচাই। তারপর সবাইকে মিলে যতটুকু মিটিগেট করা যায়, আমরা করব।”

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. নুরুল হক চৌধুরী বলেন, “কিছু আইটেম আছে যেগুলা আমরা বস্তার ভেতরে দিই। যেমন, গত বছর আমরা এসিআইয়ের পণ্য দিছিলাম। তো, ওরা তো চাল, ডাল এগুলো পলিব্যাগেই করে। এগুলার বিকল্প তো কিছু বের হয়নি। বস্তাটা দিচ্ছি চটের বস্তা। কিন্তু ভেতরের জিনিসগুলো …  তেল তো প্লাস্টিকের বোতলে হয়। এছাড়া তো উপায় নাই।

“এখন অন্য কোনো পরিবেশবান্ধব বিকল্প এলে আমরা টেন্ডারিংয়ের সময় ওইভাবেই গ্রহণ করব। এখনও তো অল্টারনেটিভ আসে নাই।”

পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আব্দুল হামিদ এ নিয়ে এখন কিছু বলতে রাজি হননি।

বিকল্প নেই নাকি সদিচ্ছার অভাব?

পরিবেশ ও সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার (ইএসডিও) মহাসচিব শাহরিয়ার হোসেন বলেন, “বন্যা তো আর হঠাৎ করে হয়নি। প্রতিবছরই কম-বেশি বন্যা হয়। ২০০০ সালে যখন পলিথিন ‘ব্যান’ করা হয়েছে, তারপর বহু বন্যা আমরা ফেইস করেছি। এখন সরকার থেকে নীতিমালা নাই, এই কথাগুলো হচ্ছে দায় এড়ানোর কথা।”

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী পলিথিন ব্যবহার করা নিষিদ্ধ - এটা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “যখন এই ধরনের বন্যা হয়, তখন তো সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সবাইকে অ্যালার্ট করা উচিৎ যে এই দুর্যোগের মাঝে আরেকটা দুর্যোগ যেন সৃষ্টি না হয়। অর্থাৎ প্লাস্টিক, নিষিদ্ধ পলিথিন, এগুলো যাতে মানুষ ত্রাণ পরিবহনে বা ডিস্ট্রিবিউশনে ব্যবহার না করে।

“শুধু সরকারকে দায়ী করব না। এখানে লোকাল গভর্নমেন্ট অথরিটি আছে। আমরা সাধারণ মানুষও দায়ী, সেই সঙ্গে মিডিয়ার দায়টাও এড়ানো যাবে না… যখন ঘটনাটা ঘটে যায়, তখন আমরা বলি, ওহ হো, আমাদের তো ভাবা উচিৎ ছিল!”

পলিথিন বর্জ্য নিয়ে করণীয় বিষয়ে তিনি বলেন, “যেহেতু এটা হয়ে গেছে, এখন ওয়েস্টগুলো যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, লগিং ক্রিয়েট না করে, সেই কারণে সবাইকে এখন দায়িত্ব নিতে হবে। ঠিক আছে, আপনি ত্রাণ বিতরণ করার সময় এই কাজটা করেছেন, এখন রিকভারি করার কাজটাও অন্তত করেন।”

তা না হলে এই পলিথিন আবার জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করবে বলে সতর্ক করেন শাহরিয়ার।

“মশা-মাছি ও নানা ধরনের রোগ জীবাণু দেখা দেবে এই আটকে পড়া পানিটা থেকে। সিলেট শহরে এখনও পানি জমে আছে, কারণ পানিটা বেরোতে পারছে না। সেটা কি শুধু রাস্তার কারণে? রাস্তা তো অনেক জায়গায় কেটে ফেলছে পানিটা বের করার জন্য। তারপরও তো বেরোচ্ছে না। কারণ পানিটা বের হওয়ার যে ড্রেনেজ সিস্টেমটা, সেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।”

একই ধরনের মত প্রকাশ করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ জে এম মঞ্জুর রশীদ বলেন, বন্যায় ত্রাণ বিতরণের মোড়কের ক্ষেত্রে বিকল্প নিয়ে এখনই ভাবতে হবে।

তিনি বলেন, “বন্যার সময় তো আসলে চারিদিকে পানি। তখন যদি চটের ব্যাগে বা জুট ব্যাগে দিই, তা পানিতে ভিজে যাবে। তখন আল্টিমেটলি লাভ হবে না। কিন্তু একটা সময় ছিল, যখন চটের ব্যাগের উপর একটা প্লাস্টিক লাইনিং বা প্রলেপের মতো দেওয়া ছিলো। আমরা সেরকম দিলে খাবারও ভিজত না।”

ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়ের অভাব এবং এর গুরুত্ব তুলে ধরে মঞ্জুর রশিদ বলেন, “সিলেটে সবাই কাজ করছে, ছোট বড় সবাই, অনেক ছাত্র সংগঠনও কাজ করছে। তারা সবাই ভালো, সবাই পজিটিভ ফিল নিয়ে কাজ করছে, কিন্তু সমন্বয় না হওয়ায় এমনও হচ্ছে যে এক জায়গায় বারবার যাচ্ছে ত্রাণ, কোনো এক জায়গায় যায়ইনি।

“অনেকেই জানে না এখানে অনেক লোক আছে। আমি মনে করি সরকার যদি বলে, সবকিছুই যাবে, সবকিছু আসবে, কিন্তু আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে ভাগ করে দিবো যে এ এখানে যাবে, ও ওখানে যাবে। এই ধরনের উদ্যোগ খুব জরুরি।”