শুক্রবার স্কুল বাদ দিয়ে গ্লাসগোর বুক চিরে হাজারো কিশোর-তরুণের এক মিছিলের পর জর্জ স্কয়ারে আয়োজিত সমাবেশে এই সুইডিশ জলবায়ুকর্মী বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব যদি মোকাবেলা করতে হয়, কার্বন গ্যাসের নির্গমন এখনই বড় মাত্রায় কমানো দরকার, যা আগে কখনও হয়নি।
বিবিসি লিখেছে, থুনবার্গের অনুসারী তরুণ পরিবেশবাদীদের সংগঠন ফ্রাইডেস ফর ফিউচারে স্কটল্যান্ড শাখা এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
গ্লাসগোতে চলমান জলবায়ু সম্মেলনের মধ্যে পরিবেশবাদীদের আয়োজিত সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ সমাবেশ ছিল এটা।
কার্বন নিঃসরণ কমানোর দাবিতে ক্লাস বর্জন করে ২০১৮ সালে সুইডিশ পার্লামেন্টের সামনে অবস্থান নিয়ে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন গ্রেটা থুনবার্গ, তখন তার বয়স মাত্র ১৫। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তার মাধ্যমে তরুণদের মধ্যে জলবায়ু রক্ষার আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে।
গ্লাসগোর বিক্ষোভ সমাবেশে থুনবার্গ বলেন, ক্ষমতাসীনরা কল্পনার রঙিন বুদবুদের মধ্যে নিজেদের লুকিয়ে রাখতে পারেন; তারা ভাবতে পারেন যে কোনো একটি গ্রহে হঠাৎ করেই একদিন অলৌকিক কিছু ঘটে যাবে, প্রযুক্তির এমন শক্তি মানুষ পেয়ে যাবে যে আজকের সব সঙ্কট নিমেষেই কেটে যাবে।
“কিন্তু তারা যখন সেই স্বপ্নে বিভোর, এই পৃথিবী তখন আক্ষরিক অর্থেই পুড়ছে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে যারা, এরই মধ্যে তাদের বইতে হচ্ছে জলবায়ু সঙ্কটের ক্ষত।”
“আমাদের সম্রাটদের গায়ে যে আসলে কাপড় নেই, সেটা আমরা ভালোই জানি।”
বিভিন্ন দেশের আরও কয়েকজন পরিবেশবাদী ও জলবায়ু কর্মী এই বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে তাদের দেশ কীভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে শুরু করেছে, সে কথা তারা তুলে ধরেন তরুণ অ্যাক্টিভিস্টদের সামনে।
“জলবায়ু সঙ্কটে ঝুঁকির তালিকায় প্রথম দিকেই থাকছে দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলো, কিন্তু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রথম পাতায় তাদের জায়গা হচ্ছে না।”
গ্লাসগোর ১৪ বছর বয়সী শার্লি ও’রোর্কে স্কুল বাদ দিয়ে তার মা ও বোনকে সঙ্গে নিয়ে এই সমাবেশে যোগ দিতে এসেছিল।
সমাবেশে যোগ দিতে বাবার সঙ্গে উল্লাপুল থেকে ট্রেনে করে গ্লাসগোতে এসেছে ১৪ বছর বয়সী ফিনলে প্রিঙ্গেল।
সে বললো, “আপনি যদি সত্যিই কোনো কিছু ভালোবাসেন, আর সেটা রক্ষা করতে চান… তাহলে দ্বিতীয়বার না ভেবে আপনার সেটাই করা উচিত।”
“স্কটল্যান্ডে আমরা এরই মধ্যে জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলায় কাজ শুরু করেছি। কিন্তু এইসব শিশুদের, তরুণদের কথা আমরা শুনলাম। তারা বলছে, আমরা যা করছি তা যথেষ্ট নয়। আমাদের আরও বেশি উদ্যোগী হতে হবে।”