‘ক্যান্সার সৃষ্টিকারী’ কীটনাশকের অনুমোদন কেন অবৈধ হবে না: হাই কোর্ট

স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি পরিবেশগত বিবেচনায় কীটনাশক ব্যবহারে প্রতিরোধ, সংশোধন ও নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে একটি নিয়মিত স্বাধীন কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Jan 2020, 04:33 PM
Updated : 5 Jan 2020, 04:33 PM

সেই সঙ্গে সম্ভাব্য ক্যান্সার সৃষ্টিকারী গ্লাইফোসেট সমৃদ্ধ কীটনাশক আমদানির অনুমোদন দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। 

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলাসহ সাতটি সংগঠনের করা একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ অন্তর্বর্তী নির্দেশনাসহ এ রুল দেয়।

কৃষি সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, বাণিজ্য সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব, পরিবেশ সচিব, খাদ্য সচিব, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান, কাউন্সিলের কীটনাশক-প্রযুক্তি পরামর্শক কমিটির চেয়ারপারসন, বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকসহ ১৬ বিবাদীকে আট সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তৌফিক সাজোয়ার পার্থ।

আইনজীবী রিজওয়ানা পরে সাংবাদিকদের বলেন, “আদালত গ্লাইফোসেট থাকা সব কীটনাশকের ক্ষতিকারক প্রভাবের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রচারণার মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি করতে এবং গ্লাইফোসেট সমৃদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার থেকে সরে আসতে ৯০ দিনের মধ্যে কর্মপরিকল্পনা দিতে নির্দেশ দিয়েছে।”

গত বছরের ১৯ মার্চ দৈনিক বণিক বার্তায় ‘ক্যান্সারের ঝুঁকি, তবুও বাজারে মনসান্টোর রাউন্ডআপ’, ১৪ সেপ্টেম্বর ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজে ‘হ্যাজারডাস পেস্টিসাইডস ইন ওয়াইড ইউজ ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

আর ৯ ডিসেম্বর দৈনিক প্রথম আলোয় ‘পাবনায় ৯০% জমির উর্বরতা কমেছে’ শিরোনামে প্রতিবেদন এবং সর্বশেষ ২৪ ডিসেম্বর দৈনিক সমকালে ‘আমদানি কীটনাশকে ক্ষতিকর ধাতু’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এসব প্রতিবেদন যুক্ত করে সাতটি পরিবেশবাদী সংগঠন কীটনাশক নিয়ন্ত্রণে এবং গ্লাইফোসেট থাকার রাউন্ডআপসহ অন্যান্য কীটনাশকের আমদানি, বিক্রি, বিপণন, ব্যবহার রোধের নির্দেশনা চেয়ে হাই কোর্টে জনস্বার্থে রিট আবেদন করে। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি করে আদালত রুলসহ এ নির্দেশনা দিল।

বেলা ছাড়া রিট আবেদনকারী অন্যান্য সংগঠনগুলো হল- উন্নয়ন বিকল্প নীতি নির্ধারণী গবেষণা (উবিনীগ), এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), শিক্ষা স্বাস্থ্য উন্নয়ন কার্যক্রম (শিসউক) ও বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইনডিজেনাস নলেজ (বারসিক)।