ভোটে বিধি লঙ্ঘন ঠেকানোর কাজ দৃশ্যমান নয়: মাহবুব

ঢাকা সিটি নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের একের পর এক অভিযোগের মুখে রিটার্নিং কর্মকর্তারা নির্বাহী হাকিমরা ‘মাঠে আছেন’ বললেও তাদের কাজ দেখতে ‘পাচ্ছেন না’ খোদ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2020, 11:59 AM
Updated : 20 Jan 2020, 11:59 AM

সোমবার এক আনঅফিসিয়াল (ইউও) নোটে তিনি একথা জানিয়ে বলেছেন, এই পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা না নিলে নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থার সঙ্কট নিরসন সম্ভব হবে না।

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার শুরুর আগে থেকেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠছে।

বিএনপি প্রার্থীরা শুরু থেকেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে যাচ্ছেন। উত্তরে সিপিবির মেয়র প্রার্থী আহম্মেদ সাজেদুল হক রুবেল বলেছেন, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় নির্বাচন কমিশন ‘নির্বিকার’ ভূমিকা দেখে মনে হচ্ছে, তাদের ক্ষমতা কোথাও ‘বাঁধা’।

অভিযোগের মুখে ঢাকা উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেম নির্বাহী হাকিমদের সক্রিয় থাকার কথা জানালেও দক্ষিণের রিটার্নিংকর্মকর্তা আবদুল বাতেন হাকিমদের কাছে পুরোপুরি  সন্তুষ্ট না হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার তার ইউও নোট প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম, শাহাদত হোসেন চৌধুরীর পাশাপাশি দুই রিটার্নিং কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছেন।

তাতে তিনি সংসদ সদস্যদের নির্বাচনী কাজে অংশগ্রহণ বন্ধ করতে না পারার ব্যর্থতার বিষয়টি তুলে ধরেন, যেজন্য তিনি আগে একটি ইউও নোটও দিয়েছিলেন।

“ইতোপূর্বে ১৩ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে প্রদত্ত আমার ইউও নোটে সংসদ সদস্যদের নির্বাচনী প্রচারণা বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ বন্ধ করার জন্য একটি পরিপত্র জারির অনুরোধ জানিয়েছিলাম। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, নির্বাচনে সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন সংসদ সদস্য নির্বাচনী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। আরেকজন সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঢাকা শহরে রাজনৈতিক বক্তৃতা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ সকল কার্যক্রম সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনের সুস্পষ্ট নির্দেশনাসহ পরিপত্রটি জারির আবশ্যকতা রয়েছে বলে মনে করি।”

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২০ জানুয়ারি সংবাদপত্রে দেওয়া বিজ্ঞাপন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এই নির্বাচন কমিশনার।

“বিজ্ঞাপনটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সদ্য বিদায়ী মেয়রের পক্ষে তার সাফল্যের প্রচারণা ছাড়া আর কিছু নয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এই প্রচারণার জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “প্রার্থীদের হলফনামা নিয়ে নানা অভিযোগ আছে। হলফনামা যাচাইয়ের কোনো উদ্যোগ নির্বাচন কমিশনে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এতে হলফনামা প্রদানের বিধান প্রশ্নের সম্মুখীন, যাতে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে নির্বাহী হাকিমদের ‘কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়’ মন্তব্য করে মাহবুব তালুকদার বলেন, “নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থার সঙ্কট নিরসন সম্ভব হবে না।

“কমিশন আইনানুগভাবে দৃঢ়তার সঙ্গে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারলে আসন্ন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা সম্পর্কে জনমনে প্রশ্নের উদ্রেক হবে এবং কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা জনসমক্ষে প্রতিভাত হবে।”