‘অর্থনীতির স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারই প্রস্তাবিত বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ’

মুদ্রার যোগান কমিয়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাংকের সুদহার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ সাদিক আহমেদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 June 2023, 03:35 PM
Updated : 12 June 2023, 03:35 PM

অর্থনীতির স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করাই আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিআরআই এর ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ।

তিনি বলেন, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট সামষ্টিক অর্থনৈতিক সংকটের গভীরতা অনুমান করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার সঙ্গে কোনো টেকসই অগ্রগতি নিশ্চিত না করেই শেষ হচ্ছে।

সোমবার রাষ্ট্রায়ত্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস আয়োজিত আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের চার চ্যালেঞ্জ শীর্ষক এক সেমিনারের মূল প্রবন্ধে তিনি এসব কথা বলেন।

বিআইডিএস মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক বিনায়ক সেনের সঞ্চালনায় সেমিনারে বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ সাদিক আহমেদ প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে বাংলাদেশ নতুন অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করেছে তাতে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে।

সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার, রাজস্ব সংগ্রহ, ঘাটতি বাজেট অর্থায়ন এবং সামাজিক খাতের ব্যয়ের যোগানের মতো চ্যালেঞ্জের কথা প্রস্তাবিত বাজেটে তুলে ধরা হয়।

এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে পরামর্শ তুলে ধরে সাদিক আহমেদ উচ্চ মূল্যস্ফীতি থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষায় মুদ্রার যোগান কমাতে ব্যাংকের সুদহার বাড়ানোর কথা বলেন। এ নীতি গ্রহণ করে অনেক দেশ ইতোমধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার সফলতার তথ্য তুলে ধরেন।

পিআরআই এর ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ বাণিজ্য ঘাটতি ও চলতি হিসাবের ভারসাম্যের ঘাটতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ শুল্ক বসিয়ে আমদানি নিরুৎসাহিত করে রপ্তানি বাড়ানোর সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পরার্মশ দেন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

সাদিক আহমেদ রাজস্ব সংগ্রহের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এনবিআরের পরিষেবা বাড়ানো, ভ্যাট আইন ২০১২ বাস্তবায়ন, সম্পত্তি করের প্রয়োগ ও এনবিআরের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন।

বাজেট ঘাটতির অর্থায়নের ক্ষেত্রে বিচক্ষণ হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আনতে হবে। সম্ভাব্য বিকল্পগুলো হতে পারে কম সুদের বিদেশি ঋণ।

অপর চ্যালেঞ্জ সামাজিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানি সরবরাহ এবং সামাজিক সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ বাড়ানোর চেষ্টা রাখার পরামর্শ দেন তিনি। ভর্তুকি কমানো এবং পুঁজি নিবিড় বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পগুলোকে ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন।

বিনায়ক সেন বলেন, আগামী বাজেটে আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীলতার অন্যতম প্রধান নিয়ামক হতে পারে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের স্থিতিশীলতা। এজন্য তিনি ডলারের বিনিময় হার বাজারের উপর ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন। কৃষি ও সারে প্রয়োজনীয় ছাড়া অন্যান্য ভর্তুকি কমানোর কথাও বলেন তিনি।