চট্টগ্রামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ‘মিথ্যা’ মামলা করার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পর এক নারীকে তিন বছরের সাজা দিয়েছে একটি আদালত।
বুধবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ জয়নাল আবেদিন এই রায় দেন।
দণ্ডিত সায়রা বানু চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার আধারমানিক গ্রামের বাসিন্দা।
ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি জিকো বড়ুয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় সায়রা বানু তার সৎ ছেলে মাহবুবুল আলমসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্লীতাহানির অভিযোগে মামলা করেছিলেন।
“সেই মামলায় আসামিরা খালাস পান। পরে মাহবুবুল আলম মিথ্যা মামলার অভিযোগে সায়রা বানুর বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলার বিচার শেষে আজ আদালত আসামি সায়রা বানুকে ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দেন।”
রায় ঘোষণার পর আদালতে উপস্থিত ৫৫ বছর বয়সী সায়রা বানুকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সায়রার মামলায় বলা হয়, ২০০৫ সালের ২৪ মে গভীর রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে তিনি ঘর থেকে বের হলে মাহবুবুল আলম ও অন্য তিনজন তার শ্লীতাহানির চেষ্টা করে বলেন।
পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে রাউজান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) করে আদালতে প্রতিবেদন দেন। ট্রাইব্যুনাল সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেন।
সে সময় মাহবুবুল আলম গ্রেপ্তার হয়ে তিন মাস জেল খাটার পর জামিনে বের হন।
পরে ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে। সাক্ষ্য-জেরা শেষে ২০২২ সালের ৩১ মে সব আসামিকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত।
এরপর বাদী সায়রা বানুর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার মাধ্যমে আর্থিক, শারীরিক, সামাজিক ও মানসিক ক্ষয়ক্ষতি ও হয়রানির অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ১৭(১) ধারায় মামলা করেন মাহবুবুল আলম।
মামলায় বলা হয়, পিতার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য সৎ মা সায়রা বানু মিথ্যা মামলা দিয়ে মাহাবুবুলকে হয়রানি করেছে।
ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠন করে এবং সাক্ষ্যগ্রহণে তার প্রমাণও মেলে।